প্রকাশিত: ১২:২৩ অপরাহ্ণ, জুন ১৭, ২০২০
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সংকটাপন্ন রোগীদের জীবন বাঁচাতে পারে সস্তা ও সহজলভ্য একটি ওষুধ—ডেক্সামেথাসন। যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানীরা বলছেন, করোনা মোকাবেলার ক্ষেত্রে এই ওষুধ বড় সাফল্য হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। বাংলাদেশেও করোনা রোগীদের চিকিৎসায় এ ওষুধটি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এ সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। বিবিসি জানায়, গবেষণায় দেখা গেছে, করোনায় আক্রান্ত যেসব রোগীকে ভেন্টিলেটর দেওয়া হয়, ডেক্সামেথাসন তাদের ৩৩ শতাংশের জীবন বাঁচাতে সক্ষম।
এ ছাড়া যাদের অক্সিজেন প্রয়োজন পড়ে, ডেক্সামেথাসন প্রয়োগের ফলে তাদের মৃত্যুঝুঁকি কমে অন্তত ২০ শতাংশ। ওষুধটির কার্যকারিতা যাচাই করেছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির একটি দল। গবেষণার অংশ হিসেবে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা প্রায় দুই হাজার রোগীকে ডেক্সামেথাসন দেওয়া হয়।
এর প্রভাব জানতে আরো চার হাজার রোগীর সঙ্গে তুলনা করা হয়, যাদের ওপর ওষুধটি প্রয়োগ করা হয়নি। তাতে দেখা গেছে, এই ওষুধ ভেন্টিলেটর রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি ২৮ থেকে ৪০ শতাংশ কমাতে সক্ষম। অক্সিজেনের প্রয়োজন পড়ে, এমন রোগীদের মৃত্যুঝুঁকি কমায় ২০ থেকে ২৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান ও বাংলাদেশ মেডিসি সোসাইটির মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির বলেন, ‘আমরা কয়েক দিন ধরেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের ওপর ডেক্সামেথাসন প্রয়োগ করছি। এতে ফলাফলও মোটামুটি ভালোই পাচ্ছি। ’বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, করোনা চিকিৎসায় প্রণীত গাইডলাইনে সরাসরি উল্লেখ না থাকলেও স্টেরয়েড ব্যবহারের নির্দেশনা অনুযায়ী এ ওষুধ প্রয়োগে কোন বাধা নেই। তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকায় শুধুমাত্র চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সংকটাপন্ন ৩ শ্রেণির রোগীদের জন্য তা ব্যবহারের পক্ষে মত দেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাস প্রধানত সংক্রমণ ঘটায় ফুসফুস ও রক্তনালীতে। এ ভাইরাস প্রতিরোধে রক্তের শ্বেত কণিকাসহ বিভিন্ন এন্টিবডি যখন সংক্রমণস্থলে আসতে থাকে তখন রক্ত জমাট বাধাসহ নানা প্রদাহে ক্ষতির মুখে পড়ে ফুসফুস। চিকিৎসকরা বলছেন, ঠিক এ জায়গাটিতেই কাজ করে স্টেরয়েড ডেস্কামেথাসন।দেশে ডেক্সামেথাসনের দাম খুবই কম। মুখে খাওয়ার প্রতিটি ডোজের মূল্য সর্বনিম্ন ৬০ পয়সা থেকে শুরু করে ১ টাকা ১৫ পয়সা পর্যন্ত। আর ইনজেকশনের দাম পড়বে ১৫ টাকা থেকে ৩০ টাকার মধ্যে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইআইডিসিআর) সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডা. বেনজীর আহমেদ বলেন, বাংলাদেশেও ব্যবহৃত ও অত্যন্ত কমদামী একটা ওষুধ, খুবই কম দাম। আমাদের যে জাতীয় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার গাইড লাইন আছে সেটাতে যুক্ত করে অন্তত আমাদের যারা বড় বড় চিকিৎসক আছেন তাদের তত্ত্বাবধানে এটা দ্রুত ব্যবহার করা দরকার।তবে ভয়ও আছে। মৃদু উপসর্গে ব্যবহার কিংবা অতিরিক্ত ডোজে ডেকে আনতে পারে ভয়ানক বিপদ। ইমিউনিটি কমিয়ে দিতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে বক্ষব্যাধী বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আতিকুর রহমান বলেন, ৩টি ক্ষেত্রে- যারা হাসপাতালে ভর্তি থাকবে, যারা ভেন্টিলেটার সাপোর্টে থাকবে, ভর্তি অবস্থায় যারা অক্সিজেন থেরাপি পাচ্ছেন, তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী দিতে হবে।
করোনা ভাইরাসে যারা মাইনর সিম্পটমের রোগী তাদের দেয়া যাবে না। তার ফলে হবে কি আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা সেটা প্রথমেই কমিয়ে দেবে। তখন কিন্তু মৃদু সংক্রমিত রোগী খারাপ হয়ে যেতে পারে। প্রথম শনাক্তের সাড়ে ৩ মাসের মাথায় দেশে করোনা সংক্রমণ রেখা উর্ধ্বমুখিই রয়েছে। এর মধ্যে মৃতের সংখ্যাও অতিক্রম করেছে ১২ শতকের ঘর।
সূত্র : কালের কন্ঠ
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech