শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত সরকারের।

প্রকাশিত: ৪:৪৩ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২০

শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির সিদ্ধান্ত সরকারের।

ডায়ালসিলেট ডেস্ক::    দেশে উদ্বৃত্ত থাকার পরও সরকার শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির কথা ভাবছে। ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধে বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনে এ পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

এক মাস ধরেই বাজারে চালের দাম বাড়ছিল। বন্যা এসে সেই দাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাজারে মোটা চালের কেজি ৪৫ টাকা ছুঁয়েছে। অন্যদিকে করোনার জন্য দুই মাস ধরে ত্রাণ দেওয়ায় সরকারি খাদ্যগুদামের মজুত ক্রমেই কমে আসছে। বন্যা শুরু হওয়ায় সামনে তা আরও কমবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, চালকলমালিকেরাও এখন চুক্তি অনুযায়ী সরকারি গুদামে চাল দিচ্ছেন না।

গতকাল (মঙ্গলবার) খাদ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, কারসাজি ঠেকাতে ও চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে আমদানি শুল্ক কমিয়ে প্রয়োজনে চাল আমদানি করা হবে। এই পরিস্থিতিতে আবারও চাল আমদানির দিকে ঝুঁকছে সরকার। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহে চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হতে পারে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে, চালকল মালিকরা সরকারের সঙ্গে করা চুক্তি অনুযায়ী সরকারি খাদ্য গুদামে সঠিক সময়ে চাল সরবরাহ করতে গড়িমসি করলে কৃষকের স্বার্থে চালের বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রয়োজনে আমদানি শুল্ক কমিয়ে চাল আমদানির কথা ভাবছে সরকার।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, চালের দাম গত এক মাসে কেজিতে দুই টাকা বেড়েছে। বাজারে মোটা চাল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এক মাসে মাঝারি মানের চালের দামও কেজিতে এক টাকা বেড়েছে।
মজুত কমছে, মোটা চালের দাম ৪৫ টাকায় পৌঁছেছে, চালকলমালিকেরা এক মাস ধরে সরকারি গুদামে চাল দিচ্ছেন না।

দেশের চালকলমালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাস্কিং মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম লায়েক আলী এ ব্যাপারে বলেন, ‘সরকার যে দামে আমাদের সঙ্গে চাল কেনার চুক্তি করেছিল, সেই দামে আমরা দিতে গেলে ব্যাপক লোকসান হচ্ছে। তবে সরকার চাল আমদানি করলে বাজারে দাম কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু এখন কৃষক যে ধানের ভালো দাম পাচ্ছেন, সেটা থেকে তাঁরা বঞ্চিত হবেন। সীমিত পরিসরে সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তির মাধ্যমে চাল আমদানি করা উচিত বলে তিনি মত দেন।

এদিকে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী চালকলমালিকেরা সরকারি গুদামে চাল দিচ্ছেন কি না, তা জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হবে। এরপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বর্তমানে চালের আমদানি শুল্ক ৬৫ শতাংশ।

২০১৭ সালে হাওরে ফসল বিপর্যয়ের পর মোটা চালের দাম বেড়ে কেজিতে ৫০ টাকা হয়েছিল। বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য তখন সরকার চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে শূন্যের কোটা নামিয়ে আনে। হাওরের বন্যায় সরকারি হিসাবে ৬ থেকে ১০ লাখ টন চালের উৎপাদন কম হলেও বেসরকারি আমদানিকারকেরা ২০১৭-১৮ সময়ে প্রায় ৪০ লাখ টন চাল আমদানি করেন। এতে ধান ও চালের দাম অনেক কমে যায়। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেই দাম সরকার নির্ধারিত সংগ্রহমূল্যের চেয়ে কম ছিল। এই পরিস্থিতিতে সরকার এ বছর কৃষককে ন্যায্যমূল্য দিতে প্রায় ১৯ লাখ টন ধান চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মার্চ থেকে করোনা সংক্রমণ শুরু হয়ে গেলে চালের দাম বেড়ে যায়।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ