করপোরেট লীগের দিকেই হাঁটছে বিসিবি

প্রকাশিত: ৯:১৩ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২০

করপোরেট লীগের দিকেই হাঁটছে বিসিবি

স্পোর্টস ডেস্ক::শ্রীলঙ্কা সফর শেষ পর্যন্ত স্থগিত হয়েছে। তাই এই বছর আর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ নেই টাইগারদের। তবে ঘরে বসে থাকার সময় নেই। করোনা মহামারির কারণে ক্রিকেটারদের ব্যাটে যে ধুলো জমেছে তা ঝরানোর সময় এসেছে। আজ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা আবার অনুশীলন ক্যাম্পে যোগ দেবেন। এখানে হবে প্রস্তুতি ম্যাচ। দু’টি ২ দিনের ও একটি তিনদিনের ম্যাচ হবে। ২রা অক্টোবর প্রথম ম্যাচে দুই ভাগ হয়ে খেলবে তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীমরা।
তবে ক্যাম্প শুরুর আগে গতকাল চতুর্থ দফায় কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হয়েছে ক্রিকেটারসহ সকল কোচিং স্টাফকে। জাতীয় দল ছাড়াও পরীক্ষা হয়েছে অনূর্ধ্ব-১৯ দলেরও। সব মিলিয়ে মোট ১১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয় এদিন। আজ ফলাফলের ভিত্তিতে ক্রিকেটাররা অনুশীলনে অংশ নেবেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী। এই প্রস্তুতি ম্যাচ শেষে একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টে আয়োজন করবে বিসিবি। গতকাল এ নিয়ে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। জানা গেছে বিসিবি টি-টোয়েন্টি করপোরেট লীগ আয়োজনের নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটের কথা ভেবেই করপোরেট লীগ আয়োজন করতে চায় বিসিবি। যদিও ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খান জানিয়েছেন এখনো আলোচনা চলছে। তিন বা চারদিনের মধ্যেই চূড়ান্ত হবে সবকিছু। আকরাম খান বলেন, ‘আমাদের আজ সভা হয়েছে। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি যে করপোরেট লীগ করবো নাকি জাতীয় দল, এইচপি ও অনূর্ধ্ব-১৯ দল নিয়ে টুর্নামেন্ট। ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত করে ফেলবো আশা করছি।’
শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য ২৭ ক্রিকেটারকে নিয়ে ক্যাম্প শুরু করেছিল বিসিবি। কিন্তু সফর নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় সেই ক্যাম্প তিনদিনের জন্য স্থগিত করা হয়। ক্যাম্পে থাকা ক্রিকেটার ও কোচদের মধ্যে যারা করোনা পরীক্ষায় নেগেটিভ ছিলেন তাদের রাখা হয় রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে। তাদের নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল জৈব সুরক্ষা বলয়, যা বায়ো বাবল নামেই পরিচিত। কিন্তু সেই বলয় ভেঙে ক্রিকেটাররা আবারো বাসায় চলে যান। তাই আজ থেকে আবারো নতুন করে তৈরি হচ্ছে সুরক্ষা বলয়। এ বিষয়ে বিসিবি’র প্রধান চিকিৎসক দেবাশিষ চৌধুরী বলেন, ‘আজ জাতীয় দল ছাড়াও অনূর্ধ্ব-১৯ এর সব ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফদের করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। সব মিলিয়ে ১০০ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কাল (আজ) যাদের টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসবে তারা ক্যাম্পে অংশ নিবে। যারা পজেটিভ হবে তারা ও তাদের সংস্পর্শে থাকা বাকিরা থাকবে আইসোলেশনে। এর মধ্যে জাতীয় দলের ক্রিকেটার ও কোচিং স্টাফরা আবারো উঠবেন হোটেলে। তাদের দুই থেকে তিন জন সাপোর্ট স্টাফ থাকবেন মিরপুরে বিসিবি’র একাডেমি ভবনে। এছাড়াও অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সবাই চলে যাবে সাভারে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)। কাল আমরা প্রসু্ততি ম্যাচের আম্পায়ারদের কোভিড-১৯ টেস্ট করাবো।’
২রা অক্টোবর জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা দুই দলে ভাগ হয়ে খেলবে প্রথম দুইদিনের প্রস্তুতি ম্যাচ। এই ম্যাচের ভীষণ গুরুত্ব দেখছেন জাতীয় দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার সুমন। তিনি বলেন, যেভাবেই হোক ক্রিকেটারদের মাঠে খেলায় ফিরাতে হবে। নয়তো তাদের ম্যাচ ফিটনেস ও আত্মবিশ্বাস- দু’টিরই ক্ষতি হবে। বাশার বলেন, ‘দেখেন প্রস্তুতি ম্যাচ আর এরপর করপোরেট লীগ যাই হোক তা ক্রিকেটারদের জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আমি মনে করি এই মুহূর্তে যেভাবেই হোক তাদের মাঠের খেলায় ফেরা খুবই জরুরি। এটি না হলে তাদের ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। মানসিকভাবে তারা জড়তায় ভুগবে। মাঠে নামলে ব্যাট-বলের যে লড়াই তাতে তারা যেমন ম্যাচ ফিটনেসটা ফিরে পাবে, আবার তাদের আত্মবিশ্বাসও বাড়বে। এতে করে পরে যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট হবে তার জন্য তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে পারবে।’
শ্রীলঙ্কা সফর স্থগিত হওয়ার পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ঘোষণা দিয়েছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু করার। প্রথমে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের ঘিরেই থাকবে আয়োজন। সঙ্গে রাখা হবে এইচপি ও অনূর্ধ্ব-১৯ দলকেও। যদি কর্পোরেট লীগ হয় ন্যূনতম ১০০ জন ক্রিকেটার টি-টোয়েন্টি খেলার সুযোগ পাবে। তাতে অন্তত প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরা হবে ক্রিকেটারদের। এরপরই শুরু হবে ঘরোয়া ক্রিকেট লীগ।

0Shares