সিলেটে সিএনজি অটোরিকশার ধর্মঘট,দূর্ভোগে যাত্রীরা

প্রকাশিত: ১২:৩৭ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২১, ২০২০

সিলেটে সিএনজি অটোরিকশার ধর্মঘট,দূর্ভোগে যাত্রীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: ৫ দফা দাবিতে সিলেটে সিএনজি অটোরকিশার ৪৮ ঘন্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে আজ সোমবার সকাল থেকে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে যাত্রীদের। সোমবার (২১ডিসেম্বর) সকালে থেকে ৫ দফা দাবিতে কর্ম বিরতিকে কেন্দ্র করে সিলেটে বন্ধ রয়েছে সিএনজি অটোরকিশা। ফলে সড়কে সিএনজি অটোরিকশা না পেয়ে পায়ে হেটে কেউ আবার অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে লেগুনা বা রিকশা দিয়ে নিজ গন্ত্যবে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে বেশির ভাগ দুর্ভোগে পড়েছেন চাকরিজীবি লোকজন। সরেজমিনে দেখা যায় সিলেটের দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল,কাজীর বাজার ব্রিজ,জিতু মিয়ার পয়েন্ট,তালতলা,বন্দরবাজার, আম্বরখানা এলাকাগুলোতে অন্যান্য দিনের মতো নেই সিএনজি অটোরিকশ।তাই বাধ্য হয়ে রিকশা বা পায়ে হেটে অফিসে যাচ্ছেন লোকজন। দুর্ভোগে পড়া নারী ও শিশুদের নিয়ে অনেককে টার্মিনাল এলাকায় অবস্থান করতে দেখা যায়। অনেকে বাসে উঠতে চাইলেও জায়গা না থাকায় উঠতে পাড়ছেন না। সিলেট একটি প্রাইভেট অফিসে কাজ করেন ফরহাদ আহমদ। তিনি বলেন, প্রতিদিন সিএনজি দিয়ে অফিসে যাওয়া আসা করি।গতকাল রাতে শুনেছিলাম আজ ধর্মঘট। ভেবে ছিলাম তেমন একটা প্রভাব পড়বে না।কিন্তু প্রায় ৩০ মিনিট ধরে দাঁড়িয়ে আছি কোনো সিএনজি নেই।আর লেগুনা ও রিকশায় অতিরিক্ত টাকা যাচ্ছে তাই বন্দর থেকে হাটা শুরু করেছি। ফজলু মিয়া নামে একজন জানান, ‘সিলেটে জরুরি একটি কাজে রোববার এসেছিলাম। আজ বাড়িতে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল। হোস্টেল থেকে বের হয়ে জানতে পারলাম ধর্মঘট। সড়কপথে যেকোনো সময় যানবাহন পাওয়া যায়। সে জন্য সিএনজিতে যাতায়াত করি। তবে কয়েক দিন পরপর ধর্মঘটের কারণে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।’ ফজলু মিয়ার মতো অসংখ্য মানুষ সিলেট এসে বেকায়দায় পড়েছেন। সিএনজির জন্য অপেক্ষা করছেন কিন্তু পাচ্ছেন না। সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী আমিনা বেগম সিলেট প্রতিদিনকে বলেন,নগরীর শিবগঞ্জ থেকে পায়ে হেটে আম্বরখানা এসেছি।অটোরিকশা নেই। রিকশাতে উঠতে চাইলে পাওয়া যায়নি। এদিকে সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাকারিয়া আহমদ জানান, গ্রীল সংযোজনের সিদ্ধান্ত বাতিল একটি মীমাংসিত বিষয়। ঢাকা চট্টগ্রাম ছাড়া অধিকাংশ জেলায় সিএনজিতে গ্রীল নেই। আমরা বিগত দিনে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল আব্দল মুহিতের সাথে আলাপ করে বিষয়টি মীমাংসা করেছি। সেসময় সিদ্ধান্ত হয় অন্যান্য জেলায় গ্রীল কার্যকর করার পর সিলেটে তা বাস্তাবায়ন করা হবে। এরপর কিছুদিন এ বিষয় নিয়ে কথা বন্ধ ছিলো। বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন সাহেবের সাথেও আমরা বৈঠক করেছি, তিনিও আমাদের পাশে আছেন। কিন্তু প্রশাসন আমাদের পাশে নেই। মহানগরীতে ব্যাটারি চালিত রিকশা নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও তা বন্ধ করা হচ্ছে না। তিনি আরও জানান, গাড়ি পাকিংয়ের জায়গা নেই। তাই বাধ্যহয়ে আমাদের রাস্তায় গাড়ি পার্কিং করতে হয়। বছর শেষে আমরা ট্যাক্স দিচ্ছি, কিন্তু আমাদের এই সেবাটুকু নিশ্চিত করতে ব্যর্থ কর্তৃপক্ষ। এসব দাবী কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না জানতে চাইলে জাকারিয়া জানান, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন সংগঠনটিতে প্রায় ৫০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন। আঞ্চলিক পরিবহণ কমিটিতে আমাদের সংগঠনের কোনো প্রতিনিধি নেয়া হয়নি। আঞ্চলিক পরিবহন কমিটির সাথে বৈঠক করে পরিবহণ সংশ্লিষ্ট সকল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রতিনিধি না থাকায় আমাদের দাবী উত্থাপনের সুযোগ হয় না। এখন আঞ্চলিক পরিবহন কমিটিতে আমাদের সংগঠনের প্রতিনিধি চাই। এছাড়া, মেট্রোসিটির আওতাধীন মহাসড়কগুলোতে গাড়ি চালানোর অনুমতি চায় সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন। দাবী আদায় না হলে আগামী ২৩ ডিসেম্বর সভা শেষে সিলেট মহাসড়কে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। উল্লেখ্য-গত বৃহস্পতিবার টুকেরবাজারের শ্রমিক সমাবেশ থেকে সিলেট জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং চট্ট- ৭০৭) এর সভাপতি মো.জাকারিয়া আহমদ এই ঘোষণা দেন। ৫ দফা দাবী বাস্তবায়নে সিলেট জেলা সিএনজি চালিত অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং চট্ট- ৭০৭) এর উদ্যোগে গত বৃহস্পতিবার রাতে টুকেরবাজারস্থ পীরপুর ফরিদ উদ্দিন মার্কেটে এক শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিক্সা শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি নং চট্ট ৭০৭) এর সভাপতি জাকারিয়া আহমদ এর সভাপতিত্বে ও জিন্দাবাজার মুক্তিযোদ্ধা শাখার অন্তর্ভুক্ত শাহী ঈদগাহ উপ-পরিষদের সম্পাদক এম বরকত আলীর পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজাদ মিয়া, সহ-সভাপতি, মোঃ আবুল হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ শাহাব উদ্দিন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক মোঃ মামুনুর রশিদ মামুন, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলী প্রমুখ।

0Shares