১৩ দেশে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ

প্রকাশিত: ১০:০১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২৬, ২০২০

১৩ দেশে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক::ত্যুর মিছিল চলছে। মারা যাচ্ছে মানুষ। শনাক্তের ফর্দও লম্বা। বিশ্বাস করা হয়, হিসাবের খাতায় নাম ওঠেনি এমন লাখ লাখ মানুষও আক্রান্ত। বিলেতে করোনার নতুন ধরন আতঙ্কের যাত্রায় তৈরি করেছে নতুন মাত্রা। এই অবস্থাতেও লড়ছে বিশ্ব। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার লড়াই, বেঁচে থাকার লড়াই। ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে টিকা এসে গেছে।

যদিও পৃথিবীর খুব কম দেশেই এ টিকা এখন পর্যন্ত পৌঁছেছে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল এবং গরিব দেশগুলোর টিকা পেতে সময় লাগবে এমন আশঙ্কা ক্রমশ আরো বাড়ছে। তবে এতসব হতাশার মধ্যে আশার খবর হচ্ছে, ১৩টি দেশে এরই মধ্যে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়ে গেছে। প্রায় সব দেশেই ফাইজার-বায়োএনটেকের টিকা দেয়া হচ্ছে। রাশিয়া দিচ্ছে নিজস্ব টিকা স্পুটনিক-৫। আরো কয়েকটি টিকাও চূড়ান্ত অনুমোদনের পথে রয়েছে। ২০২১ সালে পরিস্থিতি অনেকটাই পাল্টে যাবে।

যুক্তরাজ্য: ২রা ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ফাইজার/বায়োএনটেকের টিকা ব্যবহারের অনুমতি দেয়। মার্গারেট কেনেন নামের ৯০ বছর বয়সী ব্রিটিশ নারী, ৮ই ডিসেম্বর বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসাবে কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ করেন। তবে টিকা কর্মসূচি চালু হওয়ার পরপরই দেশটিতে করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন সংক্রমণ শুরু হয়। ফলে দেশটিকে পুনরায় লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয় বৃটেন সরকার।

সংযুক্ত আরব আমিরাত: বৃটেনের পর ১৪ই ডিসেম্বর মধ্য প্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে করোনার টিকার ডোজ দেয়া শুরু হয়। তেল সমৃদ্ধ উপসাগরীয় দেশটি ফাইজার/বায়োএনটেকের এবং চীনের তৈরি সিনোফর্ম টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র: একই দিন অর্থাৎ ১৪ই ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটিতে সান্দ্রা লিন্ডসে নামের এক নার্স ফাইজার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি দেশটিতে প্রথম টিকা নেয়া ব্যক্তি হিসাবে নাম লেখান। মার্কিন প্রতিষ্ঠান ফাইজার এবং জার্মান ভিত্তিক বায়োএনটেকের টিকার পর সেখানে মডার্নার তৈরি টিকাকেও অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

কানাডা: কানাডার কুইবেক শহরের ৮৯ বছর বয়সী এক নারী ১৪ই ডিসেম্বর ফাইজারের টিকা গ্রহণ করেন। দেশটিতে তিনিই প্রথম টিকা নেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেশী দেশ কানাডাও পরে মডার্নার টিকা অনুমোদন দিয়েছে এবং বৃহস্পতিবার দেশটিতে এর প্রথম চালান পৌঁছেছে।

সৌদি আরব: ফাইজারের টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে ১৭ই ডিসেম্বর টিকা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে এবং মৃত্যের সংখ্যা ৬ হাজার ১৪৮ জন।

ইসরাইল: ১৯শে ডিসেম্বর ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দেশের জনগণকে উৎসাহিত করতে প্রথম করোনার টিকা গ্রহণ করেন। তিনি ফাইজারের টিকা নেন এবং এ অনুষ্ঠানটি সরাসরি টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়েছিল।

রাশিয়া: রাশিয়া জানিয়েছে, সেপ্টেম্বর থেকেই তাদের উদ্ভাবিত স্পুটনিক-৫ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হচ্ছে। ১৩ই আগস্ট রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ঘোষণা দিয়েছিলেন, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে রাশিয়া। তবে এই অনুমোদন দেয়া হয় চূড়ান্ত পর্বের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই।

কাতার: ২২শে ডিসেম্বর কাতারে ফাইজারের টিকার প্রথম চালানটি পৌঁছানোর পরেই দেশটি টিকা দেয়ার কাজ শুরু করে। কাতারও মডার্নার তৈরি টিকা অনুমোদন প্রদান করেছে। এই টিকার দু’টি ডোজ তিন সপ্তাহের ব্যবধানে দেয়া হবে।

মেক্সিকো: লাতিন আমেরিকার দেশ হিসাবে ২৪শে ডিসেম্বর ফাইজারের টিকা দেয়া শুরু করে মেক্সিকো। বুধবার টিকার ৩ হাজার ডোজের প্রথম চালানটি আসার পরেই  টিকা প্রদান শুরু করে দেশটি।
সার্বিয়া: বলকান রাষ্ট্র সার্বিয়ায় ২৪শে ডিসেম্বর থেকে করোনার টিকা দেয়া শুরু হয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী আনা ব্রনাবিক ফাইজারের টিকা গ্রহণ করেছেন।

কুয়েত: কুয়েতেও ২৪শে ডিসেম্বর থেকে করোনার টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। ফাইজারের উৎপাদিত দেড় লাখ ডোজ টিকার চালানটি গ্রহণ করেছে দেশটি। এছাড়াও চিলি ও কোস্টারিকাও করোনা নিয়ন্ত্রণে টিকা গ্রহণের কাজ শুরু করে দিয়েছে। এখন দেখার বিষয় হলো এই টিকাগুলো করোনা সংক্রমণ কমাতে কতোটা কার্যকর হয়।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ