এইচ আর সি জনসেবা হাসপাতালের নামে চলছে অবৈধ ব্যবসা

প্রকাশিত: ২:৫৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২৩, ২০২১

এইচ আর সি জনসেবা হাসপাতালের নামে চলছে অবৈধ ব্যবসা

নিজস্ব প্রতিবেদক :: সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় এইচ আর সি জনসেবা  হাসপাতালের নামে অবৈধ  সাইনবোর্ড টানিয়ে  ব্যবসা পরিচালনা করছে একটি মহল বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারের একটি বেসরকারি হাসপাতালের মালিকানা দাবি নিয়ে এ বিরোধ সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা যায়।

এবিষয়ে গত ২৮শে জানুয়ারী ২০২১ইং তারিখে সিলেট সিভিল সার্জন বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন এইচ.আর.সি জনসেবা হাসপাতালের চেয়ারম্যান প্রবাসী মো.হাবিবুর রহমানের পক্ষে মো সুফিয়ান আহমদ।

এসময় লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, বিগত ১৭ই ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার লালাবাজারে অবস্থিত আলহাজ্ব রইছ মিয়া কমপ্লেক্সে প্রায় ৪,৪৬০ বর্গফুট পরিসরের  একটি ভবনে ভাড়া নেন এইচ আরসি জনসেবা হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো:হাবিবুর রহমান। অত্র মার্কেটের আলহাজ্ব রইছ মিয়া মার্কেট কর্তৃপক্ষের সাথেও ভবনটি ভাড়ার চুক্তি হয় ২ জানুয়ারী ২০২৪ইং তারিখ পর্যন্ত চুক্তি হয়।

এদিকে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ইং তারিখে সম্পাদিত চুক্তিপত্রের ১নং স্বাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর গ্রহন করেন তৌহিদ হোসেন রাসেল।  উক্ত প্রতিষ্টানের চেয়ারম্যান মো: হাবিবুর রহমান যুক্তরাজ্য অবস্থান করার সুযোগে  তৌফিক হোসেন রাসেল সম্পূর্ণ অবৈধ এবং বে-আইনীভাবে জাল-জালিয়াতির আশ্রয়ে সংঘবদ্ধ জালিয়াত চক্রের মাধ্যমে মো: হাবিবুর রহমানের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এইচ.আর.সি জনসেবা হাসপাতালের নাম ব্যবহার করে পাশ্ববর্তী একটি বিল্ডিংয়ে অত্র হাসপাতালে সাইনবোর্ড বসিয়ে প্রতারণামূলকভাবে লিফলেট ছাপিয়ে এবং ৩ দিনের ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করার অপচেষ্টা চালান।

অভিযোগে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ১ জানুয়ারী ২০২১ ইং তারিখে এইচ.আর.সি জনসেবা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শুরু হয়। যাহার ট্রেড লাইসেন্স নং ১৫৬-২০২০। বিগত ১৭/১০/২০২০ তারিখে  লিখিত ভাবে  হাসপাতাল ভবনটি ভাড়ার জন্য বরাদ্দ নিয়ে কাগজ পত্র চুক্তির প্রেক্ষাপটে হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো.হাবিবুর রহমান  একটি চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। এসময় এলাকার বিশিষ্ট সালিশি ব্যক্তিত্ব ও গন্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। চুক্তি পত্রনামায়  প্রথম সাক্ষী হিসাবে লিখিতভাবে সাক্ষর প্রদান করেন তৌফিক হোসেন রাসেলসহ অন্যান্য সাক্ষীরা।

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে,  চলমান কাজ চলাকালীন অবস্থায় অত্র প্রতিষ্টানের চেয়ারম্যান মো.হাবিবুর রহমান যুক্তরাজ্য চলে যান সেই সুবাদে তৌফিক হোসেন রাসেল তার প্রতিষ্ঠিত এইচ আর সি জনসেবা হাসপাতালের  চেয়ারম্যান দাবি করে সম্পুর্নভাবে বেআইনি ও অবৈধ ভাবে ভুয়া কাগজ পত্র তৈরি করে নিজেকে হাসপাতালের চেয়ারম্যান দাবি করে সে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালের নামে  অন্য একটি ভবনে সাইনবোর্ড ব্যবহার করে অবৈধভাবে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি এর প্রতিবাদ করলে তাকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ভাবে ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হয় ।

অন্যদিকে, মো.হাবিবুর রহমাননের ভাড়ার চুক্তিনামা, ট্রেড লাইসেন্স, টিন এবং বিন সার্টিফিকেট থাকা  এইচ.আর.সি জনসেবা হাসপাতালের সকল কাগজপত্র তৌহিদ হোসেন রাসেল নাম ভাঙিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করছেন বলে দাবি করেন।

এ বিষয়ে তৌফিক হোসেন রাসেলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডায়ালসিলেটকে জানান, এইচ আর সি জনসেবা হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো হাবিবুর রহমানের সাথে আমাদের পার্টনারশীপ ব্যবসা ছিল। এখন আর নেই। সে বিভিন্ন কারণে বেইমানী করায় বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। মো হাবিবুর রহমানের কাছে যা ডকুমেন্ট আছে তা সঠিক নয়, এর আগে সিলেটের দৈনিক একটি পত্রিকায় হাসপাতালের নামে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাপা হয়। পরে আমরা তা দেখে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় জিডি করেছি যার (নং ১৭৩৩ তাং – ১৭.০৩.২২ইং)।

তবে চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমানকে অব্যাহতি বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন প্রমাণ দেখাতে পারেননি।

এদিকে এইচ আর সি জনসেবা হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো.সুফিয়ান আহমদ  এবং নজরুল ইসলাম মিনার ডায়ালসিলেটকে জানান, অত্র প্রতিষ্টানের চেয়ারম্যান মো. হাবিবুর রহমান সরল বিশ্বাসে দেশের বাইরে যাওয়ার পূর্বে তৌহিদ হোসেন রাসেলকে প্রতিষ্টানটি দেখাশুনা করার দ্বায়িত্ব দেন। পরবর্তীতে চেয়ারম্যানের থাকা প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রের ডকুমেন্ট হুবুহু জালিয়াতি করে তৌহিদ রাসেল  তার নামে করার চেষ্টা করে। তবে তিনি একক ভাবে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হয়ে অত্র প্রতিষ্টানের চেয়ারম্যান অব্যাহতি দেয়া কোন সংবিধানে আছে বলে আমাদের জানা নেই। তৌহিদ হোসেন রাসেল হাসপাতাল দেখিয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে প্রতিষ্টান দেখিয়ে টাকা আত্নসাত করে তা ঐ এলাকায় খবর নিলে জানতে পারবেন।

এমনকি গত ১৭ই মার্চ ২০২১ইং তারিখে স্থানীয় একটি দৈনিক পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে তৌহিদ রাসেল বিষয়টির মোড় অন্যভাবে মানুষকে ধোকা দেয়ার পন্থা হিসাবে আমাদের ২জনের নাম যুক্ত করে কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়রী করে যার (নং ১৭৩৩ তাং – ১৭.০৩.২২ইং)। যা আমাদেরকে হয়রানি এবং ক্ষতিসাধন করার চেষ্টা করছে। সব করার পেছনে সে হাসপাতাল দেখিয়ে যাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা-পয়সা হাতিয়ে নিয়েছে তাদের হাত থেকে বাচাঁর হাতিয়ার মাত্র।

বর্তমানে এইচআরসি হাসপাতালের দুপক্ষের মধ্যে বিরোধ থাকায় সিভিল সার্জন অফিসে এক পক্ষ অভিযোগ করলেও অপর পক্ষ রাস্তার উপর পার্শ্বে সাইনবোর্ড ব্যবহার করে কার্যক্রম চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা যায়। তবে এখন পর্য ন্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে জানা যায়।

0Shares