প্রকাশিত: ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ৩০, ২০২১
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ ও পূর্ণিমার জোয়ারের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিতে বাগেরহাটের ১৭ হাজারের অধিক মাছের ঘেরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে চাষিদের প্রায় ১১ কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে।
গত মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে টানা বর্ষণে পানি বৃদ্ধির ফলে এই ক্ষতি হয়েছে। মৎস্য বিভাগ ও চাষিরা বলছেন বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ক্ষতিগ্রস্ত ঘের ও ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
বৃহস্পতিবার (২৯ জুলাই) বিকেলে বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, গত দুই দিনের অবিরাম বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের সদর, কচুয়া, রামপাল, মোংলা, মোড়েলগঞ্জ, ফকিরহাট, শরণখোলা, উপজেলার কয়েকহাজার চিংড়ি ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বাগেরহাট মৎস্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১৭ হাজার ৩৭৫টি মৎস্য ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে, ৭ হাজার ৪৩৪টি পুকুর, ৯ হাজার ৬৬৪টি ঘের এবং ২৭৫টি কাকড়া-কুচিয়ার খামার রয়েছে। এর ফলে চাষিদের দুই কোটি ৫১ লাখ টাকার সাদা মাছ, সাত কোটি ১৫ লাখ টাকার চিংড়ি মাছ এবং ২৪ লাখ টাকার কাকড়া-কুচিয়া ভেসে গেছে। অবকাঠামোরও ক্ষতি হয়েছে ৫৭ লাখ টাকার। সব মিলিয়ে টাকার অংকে চাষিদের ১০ কোটি ৯৭ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। এই ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি চিংড়ি চাষিদের।
বাগেরহাট সদর উপজেলার বেমরতা এলাকার চাষী হাকিম বলেন, বৃষ্টিতে এলাকার অনেকের ঘের ডুবে গেছে। আমার ৬ বিঘার ঘের ডুবেছে। প্রতিটি প্রাকৃতিক দূর্যোগে আমাদের এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।
কচুয়া উপজেলার ঘের চাষি ছালাম মোল্লা জানান, একদিকে বিরামহীন বৃষ্টি তারপরে আবার জোয়ারের পানি। কতক্ষণ আর ঠিক থাকবে। আমার ঘের তলিয়ে সব শেষ হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলো কিভাবে চলবো মাথায় আসছেনা। সরকারি সাহায্যে না পেলে আমাদের আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবো না।
মোংলা উপজেলার চিংড়ি চাষি মিলন কাজি বলেন, রাতের বৃষ্টিতে ঘেরের পাড় দুর্বল হয়ে যায়। সকালের জোয়ার এবং বৃষ্টির পানিতে আমার ঘেরের পাড়ের কয়েক জায়গা ভেঙে পানি প্রবেশ করে। এতে আমার কয়েক লাখ টাকার বাগদা চিংড়ি বের হয়ে গেছে।
মোরেলগঞ্জ উপজেলার বহরবুনিয়া আজিজুল ইসলাম বলেন, যে কোনো দুর্যোগেই আমাদের অনেক ক্ষতি হয়। চাষাবাদের উপর নির্ভর করেই আমাদের এলাকার বেশিরভাগে মানুষ জীবিকা-নির্বাহ করেন। টানা বৃষ্টিতে এলাকার বেশিরভাগ পুকুর-ঘের ভেসে গেছে। ইয়াসের ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে না উঠতে আমরা আবার ক্ষতির মুখে পড়লাম।
বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে চিংড়ি চাষিরা ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি হারিয়ে ফেলছে। বৃষ্টির পানি ও জোয়ারের প্রভাবে এখন পর্যন্ত জেলায় অন্তত ২০ হাজারের বেশি মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে, প্রায় ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। চিংড়ি চাষিদের টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের নীতিমালা বাস্তবায়ন ও সরকারের সার্বিক সহযোগীতার বিকল্প নেই বলে জানান তিনি।
বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এসএম রাসেল বলেন, মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় ১৭ হাজারের অধিক মৎস্য ঘের ও পুকুর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে প্রায় ১১ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে বৃষ্টি যদি অব্যহত থাকে এই ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
ডায়ালসিলেট/এম/এ/
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech