১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন

প্রকাশিত: ১:২৫ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২, ২০২১

১৩ জনের মৃত্যুদণ্ড, ১৯ জনের যাবজ্জীবন

ডায়ালসিলেট ডেস্ক::ঢাকার আমিনবাজারে দশ বছর আগে ডাকাত সন্দেহে ছয় ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার মামলার রায়ে প্রধান আসামি মালেকসহ ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বেলা ১১টার পর ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইসমত জাহানের আদালত এ রায় দেন।
এ মামলায় অভিযুক্ত ৬০ আসামির মধ্যে তিনজন বিচার চলাকালেই মারা যান। বাকি ৫৭ আসামির মধ্যে ১৩ জনকে সর্বোচ্চ সাজার আদেশ দিয়েছেন বিচারক। পাশাপাশি তাদের সবাইকে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অন্য একটি ধারায় এই ১৩ জনকে আরও সাত বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আসামিদের মধ্যে ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দিয়েছেন বিচারক। অন্য একটি ধারায় তাদের ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে রায়ে। অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার বাকি ২৫ আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।

এর আগে সকাল সাড়ে ৮টায় মামলার ৫৭ আসামির মধ্যে ৪৪ জনকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বিশেষ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাদের আদালতে আনা হয়। এরপর তাদের রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়।
২০১১ সালে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে ছয়জনকে পিটিয়ে হত্যার ওই ঘটনা পুরো দেশকে স্তম্ভিত করে দেয়।
পুলিশের অভিযোগপত্র পেয়ে ২০১৩ সালে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে ৬০ আসামির বিচার শুরু করেছিল আদালত। সাক্ষ্য আর যুক্তিতর্ক শেষ করে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে আসতে লেগে গেছে আট বছর। এই সময়ের মধ্যে মামলার আসামিদের মধ্যে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৬ জন পলাতক রয়েছেন।

জামিনে থাকা ৪২ আসামির জামিন বাতিল করে ২২ নভেম্বর তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক।
এ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর শাকিলা জিয়াসমিন মিতু জানান, আসামিদের সবার সর্বোচ্চ শাস্তির আর্জি জানিয়েছেন তারা।

আসামি যারা: আব্দুল মালেক, সাঈদ মেম্বর, আব্দুর রশিদ, ইসমাইল হোসেন রেফু, নিহর ওরফে জমশের আলী, মীর হোসেন, মজিবর রহমান, কবির হোসেন, আনোয়ার হোসেন, রজুর আলী সোহাগ, আলম, রানা, আ. হালিম, ছাব্বির আহম্মেদ, আলমগীর, আনোয়ার হোসেন আনু, মোবারক হোসেন, অখিল খন্দকার, বশির, রুবেল, নূর ইসলাম, আনিস, সালেহ আহমেদ, শাহাদাত হোসেন রুবেল, টুটুল, অখিল, মাসুদ, নিজামউদ্দিন, মোখলেছ, কালাম, আফজাল, বাদশা মিয়া, তোতন, সাইফুল, রহিম, শাহজাহান, সুলতান, সোহাগ, লেমন, সায়মন, এনায়েত, হায়দার, খালেদ, ইমান আলী, দুলাল , আলম, আসলাম মিয়া, শাহীন আহমেদ, ফরিদ খান, রাজীব হোসেন, হাতকাটা রহিম, মো. ওয়াসিম, সেলিম মোল্লা, সানোয়ার হোসেন, শামসুল হক ওরফে শামচু মেম্বার, রাশেদ, সাইফুল, সাত্তার, সেলিম ও মনির।

২০১১ সালের ১৭ই জুলাই শবে বরাতের রাতে আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামের কেবলার চরে বেড়াতে যান সাত তরুণ। তারা সবাই ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়তেন।
স্থানীয় কিছু লোক তাদের ধরে ডাকাত আখ্যা দিয়ে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে। তাতে একজন প্রাণে বাঁচলেও ছয়জন মারা যান।

নিহত ছয়জন হলেন ধানমন্ডির ম্যাপললিফ স্কুলের ‘এ’ লেভেলের ছাত্র শামস রহিম শাম্মাম, মিরপুর সরকারি বাঙলা কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ইব্রাহিম খলিল, বাঙলা কলেজের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের তৌহিদুর রহমান পলাশ, তেজগাঁও কলেজের ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রথম বর্ষের টিপু সুলতান, মিরপুরে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) বিবিএ দ্বিতীয় বর্ষের সিতাব জাবীর মুনিব এবং বাঙলা কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ছাত্র কামরুজ্জামান।

হামলায় গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান কেবল আল-আমিন। পরে তার কাছ থেকে সেই রাতের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।

ডায়ালসিলেট এম

0Shares