প্রকাশিত: ১০:৩১ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২১
ডায়ালসিলেট ডেস্ক::শুধু ভূমি না থাকার কারণে পুলিশ কনস্টেবল পদের সব স্তরের যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হয়েও চাকরি হলো না হিজলার কলেজছাত্রী আসপিয়া ইসলামের। দরজায় দরজায় দৌড়ঝাঁপ করে এখন হতাশ এই শিক্ষার্থী। সূত্রমতে, পুলিশের কনেস্টেবল পদে আবেদন করেছিল আসপিয়া। সাতস্তরে যাচাই-বাছাই, শারীরিক যোগ্যতা, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা এবং দুই দফা মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর যখন চাকরিতে নিয়োগপত্র পাওয়ার আশায় দিন গুনছিল, তখনই তাকে জানানো হলো তার চাকরি হচ্ছে না। কারণ সে ভূমিহীন। তবে আসপিয়ার পরিবার গত ৩৫ বছর ধরে হিজলার খুন্না-গোবিন্দপুরে বসবাস করছে। তার বাবা শফিকুল ইসলাম ২০১৯ সালে মারা যান। পরিবারের সবাই এলাকার ভোটার। বড় ভাই ঢাকায় গার্মেন্টসে এবং মেজ বোন একটি রেস্তরাঁয় বাবুর্চির কাজ করেন। আর সেজ আসপিয়া হিজলা ডিগ্রি কলেজে বিএ (পাস) পড়াশোনা করে। ছোট বোন পড়ে প্রাইমারিতে। পরিবারের অসহায়ত্বের কথা বিবেচনা করে পুলিশের চাকরিতে আবেদন করে আসপিয়া। গত ১৪, ১৫ ও ১৬ই নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে শারীরিক যোগ্যতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ১৭ই নভেম্বর লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন আসপিয়া ইসলাম। ২৩শে নভেম্বর প্রকাশিত লিখিত পরীক্ষার ফলাফলে উত্তীর্ণ হলে ২৪শে নভেম্বর একই স্থানে মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। পরদিন ২৫শে নভেম্বর ভাইভার ফলাফলে মেধা তালিকায় পঞ্চম হয়ে উত্তীর্ণ হন। ২৬শে নভেম্বর জেলা পুলিশ লাইনে চিকিৎসকরা ভাইভায় উত্তীর্ণদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এতেও উত্তীর্ণ হন আসপিয়া। সবশেষ ২৯শে নভেম্বর ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইন সেন্ট্রাল হাসপাতালে চূড়ান্ত স্বাস্থ্য পরীক্ষাতে তিনি উত্তীর্ণ হন। কিন্তু চূড়ান্ত নিয়োগের আগে পুলিশ ভেরিফিকেশনে আসপিয়া ও তার পরিবার ভূমিহীন হওয়ায় আসপিয়ার চাকরি হবে না বলে গত বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন হিজলা থানার ওসি মো. ইউনুস মিয়া। আসপিয়া ইসলাম বলেন, আমি যোগ্যতাবলে ৭টি স্তর উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্ত নিয়োগের অপেক্ষায় আছি। এমন সময় হিজলা থানার ওসি তাদের জানিয়েছেন, চাকরি পেতে হলে নিজেদের জমিসহ ঘর দেখাতে হবে। আমরা ভূমিহীন। আমার জন্মের আগে থেকে আমার পরিবার হিজলায় বসবাস করে। পূর্ব পুরুষের বাড়ি ছিল ভোলায়। কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রে সেখানে তারা কোনো জমি ভোগ দখল করেন না। হিজলায় আমাদের জমি না থাকায় আমার চাকরি হবে না বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান স্যারের কাছে গিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে স্যারের কিছু করার নেই বলে জানিয়ে দিয়েছেন। তবে জেলা পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের কোথাও যদি তার ভূমি থাকে তাহলে সেটাই তার স্থায়ী ঠিকানা। এদিকে ওই মেয়েটির পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প থেকে জমিসহ একটি ঘর দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। কিন্তু চাকরি? এলাকাবাসী কর্তৃপক্ষের কাছে আর্জি জানিয়েছেন মানবিক দিক বিবেচনা করে আসপিয়াকে চাকরি দেয়ার। এলাকাবাসী বলেন, এই একটি চাকরিই হবে পরিবারটির টিকে থাকার সম্বল। তারা এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
ডায়ালসিলেট এম/
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech