ব্যর্থতার দায় একা নিতে রাজি নন নান্নু!

প্রকাশিত: ১০:১২ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০২১

ব্যর্থতার দায় একা নিতে রাজি নন নান্নু!

স্পোর্টস ডেস্ক:;টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টাইগারদের দল নির্বাচন নিয়ে সমালোচনা ছিল তুঙ্গে। বিশেষ করে করোনার কারণে দলের বাড়তি ক্রিকেটার নেয়ার সুযোগ থাকলেও নির্বাচকরা নেননি। দিয়েছেন ভুলভাল যুক্তি। এরপর সেই আসরে একের পর এক ইনজুরিতে টাইগারদের শেষ দিকে একাদশ সাজানই কঠিন হয়ে পড়ে। দেশের মাটিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজেও একই চিত্র। হঠাৎ করে টেস্ট থেকে সরিয়ে সাইফ হাসানকে করে দেয়া হলো টি-টোয়েন্টি ওপেনার। দুই ম্যাচ ব্যর্থ হতেই তাকে বাদ দিয়ে দলে নেয়া হলো পারভেজ হোসেন ইমনকে। কিন্তু তাকে খেলানো হলো না একাদশে। টেস্টে ফের ওপেনার রাখা হলো মনোবল হারানো সাইফকে। ব্যর্থতার কারণে আবারো বাদ। ঢাকা টেস্টে দলে আনা হলো মাহমুদুল হাসান জয়কে। তিনিও ব্যর্থ। টেস্ট সিরিজ খেলতে নিউজিল্যান্ড সিরিজে বিকল্প ওপেনার হিসেবে নেয়া হয়েছে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টির নিয়মিত ওপেনার নাঈম শেখকে! দল গঠনে এমন বেহাল অবস্থার দায় কার, নির্বাচকদের নাকি অন্য কারোর? প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু অবশ্য এককভাবে দায় নিতে রাজি নন। তিনি মনে করেন- অধিনায়ক, প্রধান কোচ থেকে শুরু করে বিসিবি সভাপতিও এর জন্য দায়ী। দল নির্বাচন নিয়ে যে সমালোচনা শুরু হয়েছে তার ব্যাখ্যায় নান্নু সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ’সমালোচনা করলে তো অনেককিছু শুনতে পাবেন। আপনি দেখেন দল নির্বাচনে দুইটা স্তর আছে। একটা আমরা হেড কোচের সঙ্গে মিটিং করি। তারপর অধিনায়কের সঙ্গে করি। দুইটা মিটিং শেষ হলো, এরপর দলটা প্রস্তুত করে আমরা ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগে দেই। ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান হয়ে মাননীয় সভাপতির কাছে যায় অনুমোদনের জন্য। কয়টা স্তরে যেতে হয়? অধিনায়ক, কোচ, ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ হয়ে বোর্ড সভাপতি। যেহেতু উনি বোর্ড সভাপতি অবশ্যই উনি দল নিয়ে জিজ্ঞেস করবেন যে দল কেমন হচ্ছে। এটা সমালোচনা না, সিস্টেমই এটা। আমি অধিনায়ক, কোচকে বাদ দিয়ে তো দল প্রস্তুত করতে পারবো না। এরপর ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগ হয়ে বোর্ড সভাপতির কাছে আসে। ৫টা স্তর হয়ে দল নির্বাচন হয়। এখন দল খারাপ করলে সবদিক দিয়ে সমালোচনা হয়। যখন জেতে তখন কিন্তু কোনো সমালোচনা করা হয় না।’ বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশেই দল নির্বাচনে নির্বাচকদের ভূমিকা অন্যতম। তাদের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয় না। বোর্ড প্রধানের অনুমতি নিতে হলেও সেখানে নির্বাচকরা কাজ করেন স্বাধীনভাবে। বাংলাদেশের প্রধান নির্বাচক দায় নিতে না চাইলেও জানালেন তারা স্বাধীন! তিনি বলেন, ‘অবশ্যই (স্বাধীন), এই যে খেলোয়াড়দের আমরা আনছি এটা কারা দিচ্ছে? ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা তো আমরা দেখছি। টিম ম্যানেজমেন্ট তো খেলা দেখে না। কোচরা ওরকম খেলোয়াড়ই চেনে না। যে খোলায়ড়গুলো আমরা দিচ্ছি সবই খেলা দেখে, পারফরম্যান্সসহ সবদিক দেখে নির্বাচন করি।’ দল নির্বাচন নিয়ে নানা সমালোচনা থাকলেও প্রধান নির্বাচক নান্নু তুলেছেন তৃপ্তির ঢেঁকুর। তার মতে তারা সঠিক সিদ্ধান্তই নিচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে আমরা যতটুকু কাজ করতে পেরেছি, আমার মনে হয় আমাদের নির্বাচক প্যানেল ভালোই কাজ করেছি। আশা করছি আমাদের যদি আরও সুযোগ দেয়া হয় আমরা ভালো করবো।’ তার এই তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার কারণও আছে। তিনি মনে করেন দল নির্বাচনে একাদশ গঠনের ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই হচ্ছে সমালোচনা। আর একাদশ গঠন নির্বাচকরা নয়, করেন প্রধান কোচ ও অধিনায়ক। অদ্ভূত এই ব্যাখ্যা দিয়ে নান্নু বলেন, ‘আমরা যখন খেলতাম, তখনো খারাপ খেললে একটা চিন্তা থাকতো মুখ দেখাবো কি করে মোহামেডানের সমর্থকদের, আবাহনীর সমর্থকদের। এখন দেশ যখন খারাপ খেলছে সমালোচনা হবে স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় বোঝা উচিৎ, একাদশ নির্বাচনটা কিন্তু নির্বাচক প্যানেল করে না!’ দল নির্বাচন নিয়ে টানা ব্যর্থতায় গতকাল সংবাদমাধ্যমের সামনে এমন অনেক ব্যাখ্যা তুলে ধরেন প্রধান নির্বাচক। তবে দায় নিতে রাজি না হলেও খুব দ্রুতই নান্নু হারাচ্ছেন পদ এমন গুঞ্জন এখন ক্রিকেট পড়ায়।

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares