প্রকাশিত: ৭:১৫ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ৮, ২০২৩
ডায়ালসিলেট ডেস্ক রিপোর্ট :দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৭ জেলা ও দুই বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। যা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এদিকে, সংস্থাটির গত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ নিয়ে টানা তিন দিন ধরে চুয়াডাঙ্গায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অব্যাহত রয়েছে। এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাস বলছে, সারাদেশে মাঝ রাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের মৌসুমী প্রতিবেদন বলছে, দেশের টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মানিকগঞ্জ, যশোর, চুয়াডাঙা, সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়াসহ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলার ওপর দিয়ে মৃদু ও মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদ জানান, আগামী তিন দিন রাতের তাপমাত্রা আরও কমতে পারে। এতে সারাদেশে মাঝারি থেকে তীব্র শীত অনুভূত হবে। এই সময়ে মেঘলা আকাশসহ সারাদেশে আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় চুয়াডাঙ্গা ও যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নেমেছে ৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তবে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। গত শনিবার ঢাকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রিতে নামলেও গতকাল রোববার দুই ডিগ্রি বেড়ে ১২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ঠেকেছে।
ঢাকা বিভাগের টাঙ্গাইলে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ফরিদপুরে ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, মাদারীপুরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গোপালগঞ্জে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং নিকলীতে ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে তাপমাত্রা। এ ছাড়া ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণের জেলা খুলনার প্রায় সব জেলার তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। আর বরিশাল বিভাগের সব জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা অবস্থান ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে। রংপুর ও রাজশাহী বিভাগেও একইরকম অবস্থা বিরাজ করছে। তবে বাড়তির দিকে চট্টগ্রাম বিভাগের তাপমাত্রা।
কমেছে গড় তাপমাত্রা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত বছর এ সময়ে দেশের গড় তাপমাত্রা যা ছিলো এবার তার থেকে অন্তত দুই থেকে তিন ডিগ্রি কমেছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, বাতাসের দিক ও গতিবিধি পরিবর্তন, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কম, সুর্যের অবস্থান, কিরণ, জলীয় বাস্প কমে যাওয়া ও শুষ্ক আবহাওয়া এইসকল কারণে গড় তাপমাত্রা কমতে পারে।
এই অঞ্চলে গত কয়েক বছর ধরেই তাপমাত্রায় তারতম্য দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশে এখন পৌষমাস এবং শীতকাল। এই সময়ে স্বাভাবিকভাবে তাপমাত্রার পারদ কমতে থাকে। পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, গত বছরের চেয়ে এ বছর অনেকটা দেরিতে শীত শুরু হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে ডিসেম্বরের শুরু থেকে শীত অনুভূত হলেও এবার জানুয়ারির শুরুতে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে। পূর্বাভাসে ডিসেম্বরে শৈত্যপ্রবাহের কথা বলা হলেও তা দেখা যায়নি।
আসছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ
আবহাওয়ার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস বলছে, চলতি জানুয়ারি মাসে আরও তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে। এরমধ্যে বর্তমানে চলছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ যার তাপমাত্রা ৮-১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রয়েছে। একটি বয়ে যেতে পারে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ যার তাপমাত্রা ৬-৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নামতে পারে তাপমাত্রা। আর বয়ে যেতে পারে দু’টি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ। এ সময় তাপমাত্রা নামতে পারে ৪-৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। দেশের উত্তর, উত্তর পূর্বাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল এবং দক্ষিণাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে মাঝারি ও ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।
বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ
শীতের তীব্রতার সঙ্গে বাড়ছে ঠাণ্ডাজনিত রোগ। এ সময় সর্দি, কাশি, নিউমোনিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। বিশেষ করে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। চাপ বাড়ছে শিশু হাসপাতালে। ঢাকা শিশু হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিনই নিউমোনিয়ার রোগী ভর্তি হচ্ছে। গত সপ্তাহে এই রোগ নিয়ে অন্তত ১০০ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও গত কয়েকদিনে সর্দি- কাশি, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ে শতাধিক রোগী ভর্তি হয়েছেন। জরুরি বিভাগে প্রতিদিন যে সংখ্যক রোগী আসে তার বেশিরভাগই ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসছেন।
ঢাকায় তীব্র শীত ‘আরও কয়েকদিন’
আবাহওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসই ছিল কুয়াশার অবগুণ্ঠন ভেঙে এদিন রোদ মিলবে ঢাকায়, হয়েছেও তাই; তবে শীতের কাঁপন থেকে এখনই মুক্তি নেই, উত্তরের হিম হাওয়ায় দেশজুড়ে তীব্র শীত থাকবে আরও চার থেকে পাঁচ দিন। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, “ঢাকায় দুপুরের দিকে অল্প সময়ের জন্য রোদের দেখা মিলতে পারে। তবে পুরোপুরি ক্লিয়ার হবে না।
দেশজুড়ে তীব্র শীতের অনুভূতি আরও চার-পাঁচ দিন থাকবে। গতকাল রোববার ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশিমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা গত শনিবার ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পৌষের শেষ সপ্তাহ শুরুর আগে আগে কয়েকদিন ধরে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কমে আসার পাশাপাশি উত্তরী হাওয়ায় তীব্র শীত অনুভূত হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিস্তীর্ণ জনপদে। আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ বলেন, “আমরা আশা করছি, ১১-১২ জানুয়ারির দিকে শীতের তীব্রতা কিছুটা কমে আসবে।”
Editor & Publisher : - Sohel Ahmed
764 great west road,isleworth, London. UK Mobile : +447438548379
Address: 4th floor, Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet 3100
Design and developed by AshrafTech