বড় দেশগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা সহজ নয়

প্রকাশিত: ১১:০২ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩০, ২০২৩

বড় দেশগুলোর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা সহজ নয়

ডায়ালসিলেট ডেস্ক::বাংলাদেশের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ- তিনটি বড় দেশ যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত। এরা শক্তিশালী দেশ। এর মধ্যে দু’জন আমাদের প্রতিবেশী। এদের সঙ্গে আমার এমনভাবে চলতে হবে যাতে, সম্পর্কটা উন্নত করতে পারি। তিন বৃহৎ শক্তির সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক রক্ষা করা কঠিন উল্লেখ করে তিনি আরও বলেছেন, এই যে ব্যালেন্স, এটা সহজ নয়। আমাদের একজন বড় নেতা আছেন শেখ হাসিনা। খুব বাস্তববাদী নেতা। তার ফলে আমাদের এটা সম্ভব হয়েছে। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সামপ্রতিক অর্জন-সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ড. মোমেন বলেন, যেকোনো দেশের পররাষ্ট্রনীতি সেই দেশের স্বার্থে তৈরি করদেশের বাস্তবিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে হয়। আমাদের দেশের অবস্থার পরিপ্রেক্ষিত আমাদের জানতে হবে। রাজনৈতিক যে দিকদর্শন সেটাও আমাদের জানতে হবে। আমরা এখন খুব ইন্টারডিপেনডেন্ট বিশ্বে থাকি। খুব ডিপেনডেন্ট, একটা কিছু হলেই ঝামেলা হয়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাখ্যা ও বিভিন্ন সময়ে দেশটির দেয়া পরামর্শের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, একক দেশ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খুব সুসম্পর্ক আছে। বন্ধু দেশ বলে সে অনেক কিছু বলে, সুপারিশ দিতে পারে। বন্ধু না হলে কিছু বলতো না, তখন আক্রমণ করতো; বন্ধু বলে বেশি সুপারিশ দেয়। সুপারিশ ভালো হলে সেগুলো অবশ্যই গ্রহণ করি। তিনি বলেন, সবকিছুতে যে আমরা পারফেক্ট, এটা ভাবা ঠিক হবে না। আমাদের যদি কোনো দুর্বলতা থাকে বন্ধু বলবে। আর যদি সত্যি খারাপ কিছু হয়, সেটা দেখবো। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ব্যাখ্যায় মোমেন বলেন, ভারত আমাদের বন্ধু। ঐতিহাসিকভাবে বড় বন্ধু। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্ক একটা অপূর্ব সম্পর্ক। বাংলাদেশ-ভারত বড় সমস্যাগুলো সমাধান করেছে। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে বিনা বুলেটে এ ধরনের অর্জন কেউ করতে পারেনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশটির সঙ্গে সোনালী অধ্যায় সৃষ্টি হয়েছে। খুব সুন্দর সম্পর্ক। ভারত এ বছর জি-২০ প্রেসিডেন্সি পেয়েছে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে একটি দেশকে দাওয়াত করেছে। আমরা এটার সদস্য না। এই যে সম্মানটা তারা আমাদের দিয়েছে, এটা সম্ভব হয়েছে; সুসম্পর্কের কারণে। চীনের প্রসঙ্গ টেনে মোমেন বলেন, চীন আমাদের বড় উন্নয়ন সহযোগী। তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য অনেক বেশি। তারাও চাচ্ছে বাণিজ্য আরও বাড়ানোর জন্য। আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক। তিনটি বড় দেশ ছাড়াও বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ব্যাখ্যায় মোমেন বলেন, বড় দেশগুলো ছাড়াও আমার সামনে যে চ্যালেঞ্জ অন্যান্য রাষ্ট্র। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, রাশিয়া ও সৌদি আরব। সৌদি আরব ২৬ লাখ লোককে চাকরি দিয়েছে। তার সঙ্গে আমার বিভিন্ন রকমের ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ রয়েছে। জাপানও বড় সহযোগী। তাদের থেকে সবচেয়ে বড় ঋণ নিয়েছি।

রাশিয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে বড় সম্পর্ক। তারা আমাদের ঐতিহাসিক বন্ধু। তারা আমাদের বড় নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্ল্যান্টের কাজ করছে। আসিয়ানকেও বাংলাদেশের দরকার জানিয়ে মোমেন বলেন, আসিয়ান দেশগুলো আগামীতে শক্তিশালী হচ্ছে। তাদেরও আমরা ধরে রাখতে চাই। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানের জন্য তাদের দরকার। মন্ত্রী বলেন, আমিরাতে আমাদের কয়েক লাখ লোক কাজ করেন। কাতারে কয়েক লাখ লোক কাজ করেন। সবগুলো দেশের সঙ্গে আমার সুসম্পর্ক রাখার প্রয়োজন। এ সময় মন্ত্রী বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, আমাদের রাজনৈতিক লোকেশন যদি দেখেন, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থায় খুব গুরত্বপূর্ণ আমাদের দেশ। পাশেই বিরাট এশিয়ায় প্যাসিফিক সমুদ্র। আমরা ইপি সেন্টারে আছি। এর পাশে বড় বড় রাষ্ট্র তৈরি হয়েছে। একটি চীন, আরেকটি ভারত। এদের সঙ্গে একটা ভারসাম্য নিয়ে আমাদের চলতে হয়। আমরা এটাকে ইগনোর করতে পারি না। আমাদের লোকেশনের প্রতি অনেকের ধারণা আগামী বিশ্ব হবে এশিয়ার বিশ্ব। আমাদের লোকেশন ভালো

ডায়ালসিলেট এম/

0Shares