রংপুরকে উড়িয়ে সেরা দুইয়ে থেকে প্লে-অফে কুমিল্লা

প্রকাশিত: ২:১২ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩

রংপুরকে উড়িয়ে সেরা দুইয়ে থেকে প্লে-অফে কুমিল্লা

বরিশালকে শেষ ওভারে হারালো খুলনা

স্পোর্টস ডেস্ক :: রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের আজকের (শুক্রবার) ম্যাচটি বলতে গেলে ছিল অঘোষিত কোয়ার্টার ফাইনাল। এই ম্যাচ জিতলেই সেরা দুইয়ে থাকা নিশ্চিত। শেরে বাংলায় মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে নুরুল হাসান সোহানের দলকে ৭০ রানের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে ইমরুল কায়েসের কুমিল্লা। এই জয়ে দুই নম্বরে উঠে গ্রুপপর্ব শেষ করেছে তারা।
মাশরাফি বিন মর্তুজার সিলেট স্ট্রাইকার্সের সমান ১৮ পয়েন্ট হলেও রানরেটে পিছিয়ে থাকায় কুমিল্লা শেষ করেছে দুইয়ে থেকে। যদিও বড় জয়ে রানরেটে বেশ কাছাকাছিই চলে গিয়েছিল কুমিল্লা। মাশরাফির দলের নেট রানরেট ০.৭৩৭, ইমরুলদের ০.৭২৩।
রংপুরের সামনে লক্ষ্য ছিল ১৭৮ রানের। ৩১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লের মধ্যেই রান তাড়া থেকে ছিটকে পড়ে দলটি। শেষ পর্যন্ত ধুঁকতে ধুঁকতে রংপুর ১৭ ওভারে অলআউট হয় ১০৭ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ২৯ রান (২২ বলে) করেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। এর আগে লিটন দাস আর খুশদিল শাহর ব্যাটে চড়ে বেশ ভালো একটা সংগ্রহ দাঁড় করায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ৫ উইকেটে তোলে ১৭৭ রান।
টস হারলেও ব্যাট করতে নেমে বেশ ভালো শুরু করে কুমিল্লা। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে তোলে ৬৩ রান। ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান ২১ বলে ২৪ করে আউট হওয়ার পর সুনিল নারিনও এবারের বিপিএলে প্রথম ম্যাচ খেলতে নেমে ফেরেন ৩ বলে ৮ রানে। তবে লিটন দাস ঝোড়ো এক ইনিংস খেলেছেন। হাফসেঞ্চুরি প্রাপ্য ছিল। কিন্তু ৩৩ বলে তিনটি করে চার-ছক্কায় ৪৭ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ব্যাট হাতে সুবিধা করতে পারেননি। ২০ বল খেলে করেন ১৯। তবে এরপর জাকের আলি আর শেষদিকে খুশদিল শাহ ঝড় তুলে দলকে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি এনে দিয়েছেন। জাকের ২৩ বলে ৩ ছক্কায় করেন ৩৪। খুশদিল দুইশ স্ট্রাইকরেটে ২০ বলে খেলেন হার না মানা ৪০ রানের ইনিংস। খুশদিলের এই ইনিংসে ২টি চারের সঙ্গে ছিল ৩টি ছক্কার মার। রংপুরের আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে খরচ করেন ৩৪ রান।

রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে বরিশালকে শেষ ওভারে হারালো খুলনা :: আদতে এ ম্যাচ ছিল গুরুত্বহীন। কেননা ফরচুন বরিশাল প্লে-অফে সেরা দুইয়ের বাইরে চলে গেছে, খুলনা টাইগার্স তো বিদায় নিয়েছে আগেভাগেই। কিন্তু গ্রুপপর্বের গুরুত্বহীন এই ম্যাচটিই রীতিমত জমিয়ে দিলো মিরপুর শেরে বাংলা। রুদ্ধশ্বাস লড়াই হলো। যে লড়াইটি শেষ ওভারে ৬ উইকেট আর ৩ বল হাতে রেখে জিতলো খুলনা টাইগার্স। এতে ১২ ম্যাচে তিন জয় নিয়ে শেষ করলো ইয়াসির আলি রাব্বির দল।
প্লে-অফে নাম লেখানো বরিশাল হারলো নিজেদের পঞ্চম ম্যাচ। সাকিবের দল গ্রুপপর্ব শেষ করলো চার নম্বরে থেকে। লক্ষ্য ছিল ১৭০ রানের। ১১ ওভারে ৩ উইকেটে মাত্র ৭৬ রান তুলতে পেরেছিল খুলনা। সেখান থেকে মাহমুদুল হাসান জয়ের দুর্দান্ত এক ইনিংস আর শেষদিকে হাবিবুর রহমান সোহানের ক্যামিওতে দুর্দান্ত এক জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে খুলনা। জয় ৪৩ বলে ৫ চার আর ২ ছক্কায় খেলেন হার না মানা ৬৪ রানের ইনিংস। হাবিবুর রহমান ৯ বলে ৩০ রানের ঝড় তুলতে ২টি চারের সঙ্গে হাঁকান ৩টি ছক্কা। তিনি ম্যাচটি শেষও করেছেন ছক্কা দিয়ে।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেওয়া ফরচুন বরিশাল ৮ উইকেটে তোলে ১৬৯ রান। টসে দেখা যায় চমক, সাকিবের বদলে টস করেন মেহেদি হাসান মিরাজ। চমক ছিল ওপেনিং জুটিতেও। এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে ইনিংস উদ্বোধন করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে রিয়াদ ওপরে এসে সুবিধা করতে পারেননি। ৯ বলে ৯ করেই ফিরে যান সাজঘরে। চতুরঙ্গ ডি সিলভা ওয়ান ডাউনে নেমে ১৩ বলে করেন ১৪। সাকিব ফেরেন ১৪ বলে ২২ রানের ছোট এক ঝড় তুলে।
এরপর ধীরগতির এনামুল বিজয়ও ২৯ বলে ২৮ করে ফিরলে বিপদে পড়ে বরিশাল। ৭৭ রানে হারায় ৪ উইকেট। সেখান থেকে ডোয়াইন প্রিটোরিয়াসের ব্যাটে লড়াকু পুঁজি গড়ে সাকিবের দল। প্রিটোরিয়াস এই ম্যাচের আগেই দলের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। তবে প্রোটিয়া অলরাউন্ডারের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে একদমই সমস্যা হয়নি। ২৯ বলে তিনি খেলেন ৪৮ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস, যে ইনিংসে ২টি চারের সঙ্গে হাঁকান ৪টি ছক্কা। এছাড়া ইব্রাহিম জাদরান ১৫ বলে ২১ আর শেষদিকে করিম জানাত ৯ বলে খেলেন ১৮ রানের ইনিংস। খুলনার বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। ২০ রান খরচায় একাই নেন ৪টি উইকেট। দুটি করে উইকেট শিকার নাসুম আহমেদ আর হাসান মুরাদ।

0Shares