কুশিয়ারা নদীকূলের দুই গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ সুপেয় পানির জন্য হাহাকার: ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে

প্রকাশিত: ৭:৩২ অপরাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩

কুশিয়ারা নদীকূলের দুই গ্রামের পাঁচ হাজার মানুষ সুপেয় পানির জন্য হাহাকার: ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামছে

ডায়ালসিলেট ডেস্ক: মৌলভীবাজারের সুপেয় ও দৈনন্দিন ব্যবহারের পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। যেখানে নলকূপ রয়েছে সেখানেও ঠিকমতো পানি উঠছে না। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। দুই গ্রামের পাঁচ হাজার  সাধারন মানুষরা  সুপেয় পানির জন্য হাহাকার করছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ফলে দীর্ঘদিন ধরেই পানির কষ্টে ভুগতে হচ্ছে তাদের।
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের তুলাপুর ও সাদাপুর গ্রামে গেলে এ ভোগান্তির চিত্র চোখে পড়ে। গ্রামবাসী জানান, শুষ্ক মৌসুম এলেই এলাকার হাতেচালিত টিউবওয়েলে পানি আসে না। বিশুদ্ধ পানির অভাবে ভোগান্তিতে পড়েন তারা। খাবার পানি দূর-দূরান্ত থেকে সংগ্রহ করতে হয়।
টিউবওয়েল চাপতে গিয়ে বুকে ব্যথা হয়ে যায়। তবুও পানি আসে না। কষ্ট করে দূর থেকে বিশুদ্ধ পানি সংগ্রহ করি।
প্রবাস থেকে স্বজনরা দেশে আসছিলেন। আশা ছিল কিছুদিন থাকবেন। বিশুদ্ধ পানির সংকটে তারা তড়িঘড়ি করে চলে গেছেন। বাড়ির কাছে কারও গভীর নলকূপ নেই। দূর থেকে পানি সংগ্রহ করতে হয়।
শুষ্ক মৌসুমে কুশিয়ারা নদীর পানির লেভেল ২০ থেকে ২২ ফুট নিচে নেমে যায়। এতে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর প্রায় ৪০ ফুট নিচে নামে। এসময় টিউবওয়েলে পানি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়।
সম্প্রতি ওই এলাকায় গিয়ে কথা হয় রঞ্জুদাস, অনন্তদাস, মিলন দাস, রেজান মিয়া ও আব্দুল মতিনের সঙ্গে। তারা জানান, কুশিয়ারা নদীপাড়ের বাসিন্দারা শুষ্ক মৌসুম এলে হাতেচালিত টিউবওয়েলে পানি পান না। এতে গ্রামের নিম্ন আয়ের মানুষ পড়েন ভোগান্তিতে। বিশেষ করে গৃহকাজে পানি ব্যবহারে নারীদের কষ্ট বাড়ে।
তুলাপুরের রঞ্জণ দাস বলেন, নদীর কাছেই আমাদের বাড়ি। তিন বছর ধরে শুষ্ক মৌসুম এলে পানির স্তর নিচে নেমে যায়। মাঘ মাস থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত টিউবওয়েলে পানি পাওয়া যায় না। পানির অভাবে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য লুৎফুর রহমান  বলেন, তুলাপুর ও সাদাপুর মিলে আমার ওয়ার্ড। দুই গ্রাম মিলে হাতেগোনা কয়েকটি ডিপ টিউবওয়েল রয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এলাকায় ৪০টি সরকারি টিউবওয়েল বসানো হয়েছিল। এখন পানির ভূগর্ভস্থ স্তর নিচে নেমে গেছে তাই সবকটি টিউবওয়েলে তিনমাস পানি আসবে না। এতে আমার এলাকার নিম্ন আয়ের পাঁচ হাজার মানুষ ভোগান্তিতে থাকবে।
জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদুজ্জামান বলেন, শুষ্ক মৌসুমে কুশিয়ারা নদীর পানির লেভেল ২০ থেকে ২২ ফুট নিচে নেমে যায়। ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও ৪০ ফুট নিচে চলে যায়। এতে হাতেচালিত টিউবওয়েলের হ্যান্ডেল শক্ত হয়ে আসে। আবার পানির লেভেল ওপরে উঠলে বিষয়টি স্বাভাবিক হবে। খবর নিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেব।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ