খালেদাকে নিয়ে হঠাৎ কেন এত আলোচনা

প্রকাশিত: ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৩

খালেদাকে নিয়ে হঠাৎ কেন এত আলোচনা

ডায়ালসিলেট ডেস্ক::প্রায় তিন বছর আগে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেয়ে হাসপাতাল থেকে গুলশানের বাসায় ফিরেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং বিদেশে যেতে পারবেন না- এই দুই শর্তে তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল। পরে দফায় দফায় মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। প্রতিবারই এই দুই শর্ত বহাল থাকে। চিকিৎসার প্রয়োজনে খালেদা জিয়া কয়েক দফায় হাসপাতালে অবস্থান করেন এবং চিকিৎসা নেন। এর বাইরে তিনি আর বাসার বাইরে যাননি। অংশ নেননি কোনো রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে। দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিএনপি’র চলমান আন্দোলনের অন্যতম দাবি হলো খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি। দলটির এমন দাবি সামনে রেখে আন্দোলন করার মানে হলো খালেদা জিয়া এখনো বনঅতি সম্প্রতি সরকারের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও মন্ত্রীর বক্তব্যে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ্দি জীবনযাপন করছেআইনমন্ত্রী আনিসুল হক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন কিন্তু দণ্ডিত হিসেবে তিনি নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। তবে দলের আরও কয়েকজন নেতা তাদের বক্তব্যের ঠিক বিপরীত কথা বলেছেন। গত কয়েকদিন ধরেই আলোচনায় এই বিষয়টি। অনেকের মনে প্রশ্ন ধরেছে হঠাৎ কেন খালেদা জিয়াকে নিয়ে এত আলোচনা। সরকার কী কোনো চাপের কারণে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার বিষয়ে কথা বলছে নাকি এটি সরকারের নতুন কোনো কৌশল- এমন প্রশ্ন করছেন অনেকে। এমন প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি’র অনেকে। যদিও সরকারি দলের নেতাদের এ বিষয়ে দেয়া বক্তব্যকে গুরুত্বহীন বলছেন বিএনপি নেতারা। এ বিষয়ে দলটির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়াও জানাননি কেউ। গতকাল গণতন্ত্র মঞ্চের সঙ্গে বিএনপি’র বৈঠকের পর বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুর কাছে সরকারের মন্ত্রীদের দেয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েছিলেন সাংবাদিকরা। তিনি এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি। মানবজমিনের তরফে বিএনপি’র কয়েকজন সিনিয়র নেতার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তারা বলেন, বিষয়টিকে তারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এজন্য এ বিষয়ে তাদের কোনো প্রতিক্রিয়া নেই।

খালেদা জিয়া রাজনীতি করতে পারবেন- এমন বক্তব্য প্রথম দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। সচিবালয়ে জাপানি দূতের সাক্ষাতের পর তিনি এমন বক্তব্য দিয়ে বলেন, রাজনীতি করতে পারলেও খালেদা জিয়া নির্বাচন করতে পারবেন না। পরে জাপানি দূতের সঙ্গে পৃথক বৈঠকের পর কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাকও একই বক্তব্য দেন। গতকালও আইনমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বিষয়ে একই বক্তব্য দিয়েছেন। এ বিষয়ে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কওবায়দুল কাদেরের প্রশ্ন খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার সুযোগ কোথায দণ্ডাদেশ ভোগরত অবস্থায় থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রাজনীতি করার সুযোগ নেই বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলের যৌথ সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে কিনা? এসময় সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া, তিনি কি দণ্ডাদেশ থেকে মুক্তি পেয়েছেন? তিনি কি মুক্তি পেয়েছেন? ওবায়দুল কাদের বলেন, খালেদা জিয়া যেটুকু সুবিধা পেয়েছেন, সেটা মানবিক কারণে। শেখ হাসিনার উদারতার জন্য পেয়েছেন। অসুস্থ মানুষকে মানবিক কারণে তার দণ্ডাদেশ থেকে মুক্ত নয়, স্থগিত করা হয়েছে। কী জন্য? তিনি অসুস্থ। অসুস্থ না হলে তিনি থাকতেন কোথায়? কারাগারে। তাহলে রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়? দণ্ডিত ব্যক্তির রাজনীতি করার সুযোগ কোথায়? দণ্ডিত ব্যক্তি তো জেলে থাকবে। পাঁচ বছর আগে খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে বিএনপি। কয়েকটি মামলায় দণ্ড নিয়ে লন্ডনে থাকা তারেক এখনো সেই দায়িত্বেই রয়েছেন। বিষয়টি উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিও বুঝতে পেরেছে যে, খালেদা জিয়ার রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার সুযোগ নেই। তিনি বলেন, দণ্ডিত ব্যক্তির ব্যাপারে তাদের সন্দেহ না থাকলে তারা ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে কেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করেছেন?
ডায়ালসিলেট এম/

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ