শ্রীমঙ্গলে আনারসের ফলন ভালো হলেও সংরক্ষণে শঙ্কা

প্রকাশিত: ৯:১৯ অপরাহ্ণ, মার্চ ২০, ২০২৩

শ্রীমঙ্গলে আনারসের ফলন ভালো হলেও সংরক্ষণে শঙ্কা

ডায়াল সিলেট ডেস্ক ॥ দেশে মূলত সিলেট, মৌলভীবাজার, টাঙ্গাইল, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ব্যাপক আকারে আনারস চাষ হয়। শ্রীমঙ্গলে উৎপাদিত আনারস দেশখ্যাত। রসে টইটুম্বুর সুস্বাদু এই আনারসের চাহিদা রয়েছে সারাদেশে।চা অধ্যুষিত মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল চায়ের পাশাপাশি আনারসের খ্যাতিও রয়েছে দেশজুড়ে। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সারা বছরই কমবেশি এই আনারস পৌঁছে যায়। দেশজোড়া খ্যাতির সেই আনারসের এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিন্তু চাষিরা হিমাগার না থাকায় সংরক্ষণের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন চাষি ও কৃষি বিভাগ।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ষাটের দশক থেকে শ্রীমঙ্গলের পাহাড়ি উঁচু-নিচু টিলায় আনারস চাষ শুরু হয়। এখানকার উষ্ণ ও আদ্র জলবায়ু আনারস চাষের জন্য খুবই উপযোগী। উপজেলার মোহাজেরাবাদ, বিষামণি, হোসেনাবাদ, বালিশিরা, ডলুছড়া, সাতগাঁও, নন্দরানী ও মাইজদীসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকার প্রায় ৩শত ১০ হেক্টর জমিতে এবার আনারসের চাষ হয়েছে।

আনারস চাষিরা অভিযোগ করে জানান, আনারস সংরক্ষণের ব্যবস্থা না থাকায় পঁচনশীল এ ফল যখন একসঙ্গে পাকতে শুরু করে তখন কৃষকদের নাম মাত্র মূল্যে অনেক সময় ফল বিক্রি করে দিতে হয়।চাষিরা আরও জানান, নানা প্রতিকূলতার কারণে এমনিতেই দিন দিন আনারস চাষ কমে যাচ্ছে। আনারসের পরিবর্তে চাষিরা এখন লেবু চাষের দিকে বেশি ঝুঁকে পড়ছেন। এছাড়াও অনেক আনারস সংরক্ষণের অভাবে পচে নষ্ট হয়। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরি। জমির উব্রতা হ্রাস, সার ও চারার দাম বৃদ্ধি, শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধিসহ সব মিলিয়ে আনারসের উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে অন্যান্য বছরের তুলনায় বেশি। তবুও চাষিরা শ্রীমঙ্গলের ঐতিহ্যবাহী আনারসের আবাদ ধরে রাখার চেষ্টা করছেন।

উপজেলার বিষামণি এলাকার আনারস বাগান মালিক বিল্লাল মিয়া বলেন, এবার আমার বাগানে আনারসের ফলন ভালো হওয়ায় একটু আগেই আনারসগুলো উত্তোলন করে বিক্রি করা শুরু করেছি। কিন্তু যখন আনারস একসঙ্গে পাকতে শুরু করে তখন সংরক্ষণের অভাবে অনেক আনারস পচে নষ্ট হয়ে যায়।

বেগুনবাড়ী এলাকার আনারস বাগান মালিক ইরেশ পাল জানান, আগাম বৃষ্টি হওয়াতে এবার আনারসের ফলন খুব ভালো হয়েছে। বৃষ্টির পানি পেয়ে আনারসের ফলন ভালো হওয়াতে আমরা চাষিরা অনেক খুশি। তবে আনারস সংরক্ষণের জন্য একটি হিমাগারের প্রয়োজন।

এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা উজ্জল সূত্রধর বলেন, অনেক কৃষক আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন যে, আনারস পচে নষ্ট হয়ে তারা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। আনারস সংরক্ষণের জন্য শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপন জরুরি। কৃষকদের আমরা বলেছি, শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি অধিদফতর থেকে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছি শ্রীমঙ্গলে একটি হিমাগার স্থাপনের জন্য।শ্রীমঙ্গলে এবার ৩ শত ১০ হেক্টর জমিতে হানি কুইন ও জায়ান্ট কিউ দুই ধরনের আনারসের চাষ বেশি হয়েছে। আনারসের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সহযোগিতা ও প্রশিক্ষণ কৃষি অফিস থেকে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।

0Shares