বড়লেখায় প্রবাসীর ভূমি দখলের চেষ্টা, সীমানা প্রাচীর ভাংচুর

প্রকাশিত: ১১:৫৬ অপরাহ্ণ, মে ২৩, ২০২৩

বড়লেখায় প্রবাসীর ভূমি দখলের চেষ্টা, সীমানা প্রাচীর ভাংচুর

ডায়াল সিলেট ডেস্ক : বড়লেখায় বদরুল ইসলাম নামক এক দুবাই প্রবাসী ফারফিউম ব্যবসায়ীর ৫ কোটি টাকার ভূমি জবর দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় ভূমিখেকো চক্র। সঙ্গবদ্ধ এই চক্রটি চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ওই ভূমির সীমানা প্রাচীর ও সাইনবোর্ড ভাংচুর করেছে। এতেই ক্ষান্ত নয়, তারা ওই প্রবাসীকে অব্যাহতভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে যাচ্ছে। এতে তিনি মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী প্রবাসী ভূমি জবর দখল অপচেষ্টাকারী উপজেলার চান্দগ্রামের করিম উদ্দিন, কালা মিয়া (কালা ড্রাইভার), তাহির আলী, সুড়িকান্দির মাহবুব আহমদ ও টুকা গুলুয়ার শংকর দাসের নাম উল্লেখ ও আরো ৪/৫ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে সোমবার বড়লেখা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে থানার ওসিকে আগামী ৩০ কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের রফিনগর গ্রামের দুবাই প্রবাসী বদরুল ইসলাম (৬৪) চান্দগ্রামের লন্ডন প্রবাসী ফয়জুল বারী চৌধুরীর নিকট হতে দাসেরবাজারে লঘাটি মৌজায় ৭১ শতাংশ ভূমি ক্রয় করেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য ৫ কোটি টাকার ওপরে। বদরুল ইসলাম বাইপাস অপারেশনের রোগী হওয়ায় ওই ভূমি তিনি তার ছেলে কামরুল ইসলামের নামে দলিল করে দিয়েছেন। ইতিমধ্যে ছেলের নামে ওই ভূমি রেকর্ডভুক্তও করেন। সম্প্রতি বদরুল ইসলাম দেশে এসে ওই ভূমির সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ শুরু করলে আসামীরা বাধা বিপত্তি শুরু করে। তারা ওই জমি ভোগ দখল ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হলে প্রবাসীর কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। তিনি চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় বিবাদীরা গত ৪ মে ভোরবেলা সদ্য নির্মিত সীমানা প্রাচীরের ৬শ’ ফুট স্থান ভেঙ্গে ফেলে ৫ লক্ষাধিক টাকা ক্ষতি সাধন করে।
ভুক্তভোগী প্রবাসী ব্যবসায়ী বদরুল ইসলাম জানান, ফয়জুল বারী চৌধুরী খরিদা সূত্রে মালিক ও দখলদার হিসেবে ৭১ শতংাশ ভূমি তার কাছে বিক্রি করেন। সব কাগজপত্র সঠিক সত্ত্বেও এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ চক্র ওই ভূমি দখলের অপচেষ্টা চালায়। সীমানা প্রাচীর নির্মাণে বাঁধা দেয়, পুলিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করায়। থানার ওসির ডাকে কোন কাগজপত্র দেখাতে না যাওয়ায় পুলিশ আমাকে কাজের অনুমতি দেয়। দেওয়াল নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করি। এরপর তারা নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি রাজি না হওয়ায় ৬০০ ফুট সীমানা প্রাচীর ও উক্ত ভূমিতে স্থাপিত সাইনবোর্ড ভাংচুর করেছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার আব্দুর রহমান জানান, বদরুল ইসলাম তার ক্রয়কৃত ভূমিতে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ শুরু করলে করিম উদ্দিন, কালা মিয়া, তাহির আলী গংরা কাজে বাঁধা দেয়। পুলিশ দিয়ে কাজ বন্ধ করায়। পরে পুলিশের কাছে কোন কাগজপত্র দেখাতে না পারায় পুলিশ বদরুল ইসলামকে কাজের অনুমতি দেয়।
অভিযুক্ত করিম উদ্দিন, কালা মিয়া, তাহির আলী, মাহবুব আহমদ গংদের বক্তব্য জানতে বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি। প্রতিবেশিরা জানান, মামলার পর থেকে তাদের দেখা যাচ্ছে না। মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন।
থানার ওসি ইয়ারদৌস হাসান জানান, প্রবাসীর জায়গায় সীমানা প্রাচীর নির্মাণের কাজ চলাকালে কিছু লোক থানায় অভিযোগ করায় কাজ বন্ধ করান। পরে উভয়পক্ষকে কাগজপত্র নিয়ে থানায় ডাকা হলে বাঁধাদানকারীরা কাগজপত্র দেখাতে না পারায় প্রবাসী বদরুল ইসলামকে কাজের অনুমতি দেন। হুমকি-ধমকি ও প্রাচীর ভাঙ্গার ব্যাপারে তিনি থানায় জিডি করেন। আদালত থেকে এ ব্যাপারে এ সংক্রান্ত একটি মামলা এসেছে। আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক তিনি ব্যবস্থা নিবেন।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ