প্রকাশিত: ১:০৬ পূর্বাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৩
ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: বর্জনের ঘোষণা দিয়েও সিলেটে নির্বাচন থেকে নিজ দলীয় কাউন্সিলরদের আটকাতে পারেনি বিএনপি। দলটির বেশ কয়েকজন নেতা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বিএনপিদলীয় বর্তমান ৭ কাউন্সিলরের মধ্যে ৬ জনই মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
শুরু থেকেই এবারের সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আসছে বিএনপি। দলটি সিটি মেয়র, এমনকি কাউন্সিলর পদেও দলীয় নেতাদের অংশ না নিতে নির্দেশনা দিয়েছে। তবে সিলেটে মেয়র পদে বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আরিফুল হক চৌধুরী প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন দেখা দেয়। তবে ২০ মে সমাবেশ করে প্রার্থী না হওয়ার ঘোষণা দেন আরিফুল হক। এর আগের দিন সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচন বর্জনের কথা জানান নগরের ৪নং ওয়ার্ডের টানা চারবারের কাউন্সিলর ও মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রেজাউল হাসান কয়েস লোদী। তবে লোদী ছাড়া বিএনপির বর্তমান কাউন্সিলরদের কেউই নির্বাচন থেকে সরে আসেননি। বর্তমান কাউন্সিলরদের ৬ জনই প্রার্থী হতে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
মঙ্গলবার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন- সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম, ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রকিব তুহিন। এর আগে সোমবার মনোনয়নপত্র জমা দেন মহানগর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদী, ১৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম, ১৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ বি এম জিল্লুর রহমান উজ্জ্বল। এছাড়া সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর, সদ্য বিদায়ী সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রোকসানা বেগম শাহনাজ এবার ২৫নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
দলের আপত্তি সত্ত্বেও মনোনয়নপত্র জমা দেয়া প্রসঙ্গে রোকসানা বেগম শাহনাজ বলেন, বিএনপির সকল কাউন্সিলররাই এবার প্রার্থী হয়েছেন। একমাত্র কয়েছ লোদী ছাড়া কেউই নির্বাচন বর্জন করেননি। তাই আমিও মনোনয়ন জমা দিয়েছি। বাকী নেতারা যদি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন তবে আমিও প্রত্যাহার করবো।
বর্তমান ৬ কাউন্সিলর ছাড়াও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাধারণ ৪২টি ও সংরক্ষিত ১৪টি ওয়ার্ডে বিএনপির অন্তত ৩০ জন নেতাকর্মী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এবার যাতে বিএনপির কেউ প্রার্থী না হন এ ব্যাপারে নানামুখী তৎপরতা শুরু করে দলটি। মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখার পাশাপাশি কাউন্সিলর প্রার্থীদেরও নির্বাচন থেকে বিরত রাখার প্রচেষ্টা চালায় দলটি। সিলেটে বিএনপিদলীয় ২৫ সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীর নাম কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে প্রেরণ করা হয়। এছাড়া ৩২ সম্ভাব্য প্রার্থীকে নির্বাচন বর্জন করার আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় মহানগর বিএনপি।
গত ১২ মে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী সাক্ষরিত সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থীদের কাছে পাঠানো চিঠিতে লেখা হয়- ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্পষ্ট ও সুনির্দিষ্ট বক্তব্য এই পাতানো নির্বাচনে দলের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী মেয়র বা কাউন্সিলর পদে নির্বাচন বা কোনো ধরণের নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবেন না। যদি এই পাতানো নির্বাচনে দলের কোনো নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করে বা নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠিন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এছাড়া সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন বিএনপির স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা। তবে এসব প্রচেষ্টাও নেতাদের প্রার্থিতা ঠেকাতে পারেনি বিএনপি।
মনোনয়নপত্র জমা দেয়া প্রসঙ্গে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরহাদ চৌধুরী শামীম বলেন, এলাকার মানুষ তো আমাকে ছাড়ছে না। আমি এখানকার দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর। আর কাউন্সিলর পদে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হয় না। তাই কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে দলের আপত্তি থাকা ঠিক নয়।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার তথ্য নিশ্চিত করে ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তৌফিকুল হাদী বলেন, দলের পাশাপাশি আমাকে এলাকার মানুষের মতামতকেও গুরুত্ব দিতে হয়। এলাকাবাসীর চাপেই আমি প্রার্থী হয়েছি।
তবে মনোনয়ন জমা দেওয়া নেতারাও ভুল বুঝতে পেরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন- এমন প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি নাসিম হোসাইন বলেন, এই সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব না। অনেকে না বুঝে সরকারের পাতানো ফাঁদে পা দিচ্ছেন। তারপরও আমরা আশা করবো তারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে এই পাতানো নির্বাচন বর্জন করবেন। অন্যথায় দল থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে, মঙ্গলবার সিলেটে মনোনয়নপত্র জমাদানের সময়সীমা শেষ হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত সিলেটে মেয়র পদে ১১ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৫ মে ও প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১ জুন। আর ২১ জুন ইভিএমে ভোটগ্রহণ হবে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech