প্রকাশিত: ৫:৫৭ অপরাহ্ণ, জুন ৪, ২০২৩
মনজু বিজয় চৌধুরী॥ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি বলেছেন, চা শিল্পের উন্নয়নে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যুগান্তকারী সব উদ্যোগের ধারাবাহিকতা ও বর্তমান সরকারের নানা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে দেশের চা শিল্প টেকসই উন্নয়নে পথে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চা বোর্ডের ছায়াতলে দেশের চা শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে চা উৎপাদনকারী ও বিপণনকারীদের পাশাপাশি বড় ভূমিকা পালন করছে এ শিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট অদম্য শ্রমিকগণ। শ্রমঘন এ শিল্পে শ্রমবান্ধব কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং বাগান মালিকগণ কাজ করে চলেছেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় চা শিল্পকে আরও এগিয়ে নিতে হবে। ৪ জুন রবিবার দুপুরে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ৩য় জাতীয় চা দিবস উদযাপন ও জাতীয় পুরস্কার অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
চা শিল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীজন চা শ্রমিকদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এবার চায়ের রাজ্যখ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে জমকালো আয়োজনে ৩য় জাতীয় চা দিবস ২০২৩ উদযাপন করা হয়েছে।
রবিবার দুপরে শ্রীমঙ্গলসস্থ অবস্থিত বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ‘চা দিবসের সংকল্প, শ্রমিকবান্ধব চা শিল্প’ প্রতিপাদ্য নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় বাংলাদেশ চা বোর্ড এর উদ্যোগে শুরু হয় এক আলোচনা সভা। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো: জসিম উদ্দিন, টি ট্রেডার্স এসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ এর সভাপতি শাহ মঈনুদ্দিন হাসান, মৌলভীবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান, বাংলাদেশীয় চা সংসদের সভাপতি কামরান টি রহমান এবং সাধারণ চা শ্রমিকদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নৃপেন পাল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইফ, উপাধ্যক্ষ ড. মো: আব্দুস শহীদ এমপি।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ চা বোডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: আশরাফুল ইসলাম এনডিসি, পিএসসি।
আলোচনা সভা শেষে বেলা ১২টায় দেশের চা শিল্পে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ৮টি ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন চা কোম্পানি/ব্যক্তিকে জাতীয় চা পুরস্কার ২০২৩ প্রদান করা হয়েছে। এসময় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী টিপু মুনশি এমপিসহ অন্যান্য অতিথিরা বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের ট্রফি ও সদন তুলে দেন। যেসব ক্যাটাগরিতে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো একর প্রতি সর্বোচ্চ উৎপাদনকারী শ্রীমঙ্গলের ভাড়াউড়া বাগান, (ফিনলে টি কোম্পানি), সর্বোচ্চ গুণগত মানসম্পন্ন চা উৎপাদনকারী মধুপুর চা বাগান (কেদারপুর টি কোম্পানি), শ্রেষ্ঠ চা রপ্তানিকারক (আবুল খায়ের কনজ্যুমার প্রোডাক্টস লি.), শ্রেষ্ঠ ক্ষুদ্রায়তন চা উৎপাদনকারী মোঃ আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়), শ্রমিক কল্যাণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা বাগান-জেরিন চা বাগান (ইস্পাহানি টি কোম্পানি), বৈচিত্র্যময় চা পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ কোম্পানি (কাজী এন্ড কাজী টি এস্টেট লি.), বৈচিত্র্যময় চা-পণ্য বাজারজাতকরণের ভিত্তিতে শ্রেষ্ঠ চা কোম্পানি (গ্রিন ফিল্ড টি ইন্ডাস্ট্রিজ লি.) এবং শ্রেষ্ঠ চা পাতা চয়নকারী চা শ্রমিক উপলক্ষী ত্রিপুরা-নেপচুন চা বাগান (ইস্পাহানি টি কোম্পানি)। অনুষ্ঠানে দেশের চা-বাগানগুলোর মালিক, শ্রমিক ও চা-শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
পুরস্কার প্রদান শেষে চা দিবস উপলক্ষ্যে বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত দিনব্যাপী চা মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে ঘুরে দেখেন প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি।
চা মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের চা প্রদর্শন ও বিক্রি করা হয়। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু পাডেলিয়ন এবং শ্রীমলস্থ টি মিউজিয়ামে রক্ষিত চা শিল্পের দুর্লভ জিনিসপত্র প্রদর্শনের ব্যবস্থাও ছিল। দর্শনার্থীদের জন্য দিনব্যাপী চা মেলা ছিল উন্মুক্ত।
প্রসঙ্গত, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৭ সালের ৪ জুন চা বোর্ডের প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৮ সালের ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি যেদিন চা বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন সে দিনটিকে (৪ জুন) স্মরণীয় করে রাখতে প্রতি বছর দিনটি উদযাপিত হচ্ছে ‘জাতীয় চা দিবস’ হিসেবে।
সিলেটের মালনিছড়া চা বাগানে ১৮৫৪ সালে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা চাষ শুরু করা হয়। ধীরে ধীরে এ অঞ্চলের অন্যতম সম্ভাবনাময় শিল্প হিসেবে চা শিল্প বিকশিত হতে থাকে। উনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝিতে ব্রিটিশ শাসনাধীন উপমহাদেশের এ অঞ্চলে চা শিল্পের অগ্রগতি মূলত ব্রিটিশদের মাধ্যমেই হয়েছে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech