প্রকাশিত: ৭:৩১ অপরাহ্ণ, জুন ৯, ২০২৩
ডায়াল সিলেট ডেস্ক : দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি। যার আয়তন ১৮.১১৫ হেক্টর। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হাওরে প্রায় ৮ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান হয়। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা এবং সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জ ও গোলাপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে বিশাল আকৃতির এই হাওরে কৃষক, জেলে ও পর্যটকসহ প্রতিনিয়ত নানা শ্রেণিপেশার মানুষ যাতায়াত করেন।
কিন্তু ছায়া নেয়ার মতো কোনো জায়গা কিংবা গাছপালা নেই সেখানে। সরকারি উদ্যোগেও নির্মাণ করা হয়নি কোনো ঘর। তীব্র রোধ কিংবা ঝড়ে কৃষকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে বোরো মৌসুমে ধান কাটার সময় গ্রীষ্মকালের রোদে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। কিছু সময়ের জন্য ছায়াতে আশ্রয় নেয়ার জন্যেও কোনো জায়গা ছিলোনা বৃহত্তম এই হাওরে।
এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে নিজ উদ্যোগে হাকালুকি হাওরের চালিয়া এলাকায় ২০১৩ সালে একটি করচ গাছ রোপন করেন জেলার কুলাউড়া উপজেলার বাদে ভূকশিমইল গ্রামের মো. এলাইছ মিয়া নামের এক বাসিন্দা। হাওরে বছরের অর্ধেক সময় পানিতে থৈ থৈ থাকলেও গাছ রোপনের পর থেকে এটিকে বাঁচানোর জন্য তিনি সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত পানিও দিয়েছেন। কঠোর পরিশ্রম করে তিনি এই গাছটি বড় করেন। পরবর্তীতে হাওরে আরও ৫টি করছ ও হিজল গাছ রোপন করেন তিনি।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শুকনা মৌসুমে প্রচণ্ড গরমের সময় কৃষক, জেলে ও পর্যটকরা গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নেন। গাছটি কৃষকদের কাছে হাওরের ছাতা হিসেবে পরিচিত। এদিকে বর্ষা মৌসুমে হাওরে ঝড় এলে জেলেরা নৌকা নিয়ে গাছের পাশে আশ্রয় নেন।
ভূকশিমইল গ্রামের কৃষক গিয়াস মিয়া, ইদই মিয়া ও জিতু মিয়া বলেন, জমিতে কাজ করে এসে আমরা এই গাছের নিচে বসে বিশ্রাম নেই। গাছের নিচে বসে শান্তিতে ভাত খেতে পারি। গাছটি ছাতার মতো কাজ করছে।
ট্রলিচালক ফরিদ মিয়া বলেন, ঝড় তুফান এলে কিংবা রোদে কাজ করার পর বিশ্রাম নেয়ার মতো এখানে কোনো জায়গা নেই। হাওরের কৃষকরা কাজ করে এখানে এসে আশ্রয় নেন। এ গাছটা আমাদের অনেক উপকারে এসেছে। সরকারি উদ্যোগেও এ রকম গাছ লাগানো প্রয়োজন।
বৃক্ষরোপনকারী এলাইছ মিয়া বলেন, বাড়ি থেকে ট্রলি দিয়ে গাছটি এখানে এনে রোপন করেছিলাম। দিনরাত গাছটাকে বাঁচাতে শ্রম দিয়েছি। প্রতিদিন শতশত কৃষক গাছের ছায়াতে বসছেন। এটাই আমার সফলতা। সরকারি উদ্যোগেও এ রকম গাছ লাগানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, এলাইছ মিয়ার এই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। সরকারি প্রকল্পেও বৃক্ষরোপনসহ বিভিন্ন বিষয় রয়েছে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech