প্রকাশিত: ১০:৪০ অপরাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৩
ডায়াল সিলেট ডেস্ক : মৌলভীবাজারকে মাইকোব্যাক্টেরিয়াম লেপ্রোমাটোসিস ব্যাকটেরিয়া বা কুষ্ঠ রোগের রেড জোন চিহ্নিত করা হয়েছে। সচেতনতার অভাবে কুষ্ঠ রোগে বেশি আক্রান্ত হওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন মৌলভীবাজারের চা শ্রমিকরা।জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৬৬০জন কুষ্ঠরোগী রয়েছেন মৌলভীবাজারে। সিলেট বিভাগে কুষ্ঠ রোগে আক্রান্তদের প্রায় ৯৮ শতাংশ রোগী এ জেলার। তবে হীড বাংলাদেশের হিসাবে জেলার সাত উপজেলায় কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা ২৪০ ও বর্তমান রোগী আছে ১২৬ জন।কুষ্ঠ রোগে আক্রান্ত জেলার কুলাউড়া উপজেলার হিঙ্গাজিয়া চা বাগানের উপর লাইনের নারী চা শ্রমিক গীতা মৃধা বলেন, ‘কাজে গেলে শরীর ঝিনঝিন করে। মে মাসে হাসপাতালে গেলে আমার কুষ্ঠ ধরা পড়ে।
একই বাগানের আরেক রোগী মুন্নি দাস (৩২) বলেন, ৮ মাস ধরে চর্মরোগ মনে করে চিকিৎসা নিচ্ছিলাম। বাগানের হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষায় ধরা পড়ে কুষ্ঠ রোগ। এখন নিয়মিত শ্রমিক হিসেবে কাজে যেতে হচ্ছে। অনেকে আমাকে এড়িয়ে চলে। তখন খুব খারাপ লাগে।
জেলার রাজনগর উপজেলার করিমপুর চা বাগানের বানারসি কুর্মির (৮০) বলেন, ‘চিকিৎসা নিয়ে এখন পঙ্গুত্বের অভিশাপে জীবন কাটাচ্ছি। হাত ও পা বাঁকা হয়ে আছে। কোনো মতে চলাফেরা করি। আগে হীড বাংলাদেশের লোকজন এসে খোঁজ খবর নিত। এখন আর কেউ আসে না।
তিনি আরও বলেন, ছোটবেলা থেকে আমি কুষ্ঠরোগে আক্রান্ত ছিলাম। ২৫ বছর বয়স পর্যন্ত শরীরে রোগের ব্যাকটেরিয়া লুকিয়ে থাকে। এরপর লক্ষণ দেখা দেয়। প্রথম লক্ষণ হলো শরীরের যেকোনো স্থানে সাদা অথবা বাদামী রঙের দাগ দেখা দেয়। আক্রান্ত স্থানের অনুভূতি থাকে না। শরীর ঝিনঝিন করে। হাত পা টানে গা ও ব্যথা হয়। অনেকেই অসচেতনতার কারণে নিয়মিত ঔষধ খায় না। আমার সাথের ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। লোক লজ্জার ভয়ে অনেকে প্রথম দিকে প্রকাশ করে না। পরে বড় ক্ষতিতে পড়তে হয়’।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চা শ্রমিক নেতা দীপঙ্কর ঘোষ
বলেন, ‘অধিকাংশ চা বাগানের শ্রমিকরা অজ্ঞ তারা কুষ্ঠ রোগ সম্পর্কে সচেতন নয়। তারা নিম্নমানের জীবনযাপন করতে হয়। এ কারণেই চা শ্রমিকরা কুষ্ঠ রোগে বেশী সংক্রমিত হচ্ছে।
হীড বাংলাদেশের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর জিয়াউদ্দিন বলেন, ‘মৌলভীবাজার জেলার চা বাগানগুলোতে গড় হিসাবে প্রতি ১০০ জন শ্রমিকের মধ্যে দুই জন কুষ্ঠ রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। কুষ্ঠ রোগ নির্মূলে ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাস থেকে নতুনভাবে লেপ্রসি ইন্টিগ্রেশন প্রজেক্ট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বর্তমানে মৌলভীবাজার জেলায় কুষ্ঠ রোগীর সংখ্যা ২৪০ জন। এর আগে অসংখ্য রোগী পরিপূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech