প্রকাশিত: ১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, জুন ১২, ২০২৩
ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: বিশ্ব মঞ্চে আত্মমর্যাদার সাথে মাথা উঁচু করে দেশকে এগিয়ে নিতে সঠিকভাবে নিজেকে গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কেউ দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না, অন্ধকারে ফেলে দিতে পারবে না। সবসময় এ কথা মনে রাখতে হবে যে, এ জাতি বীরের জাতি। তারা কারও কাছে মাথা নত করে না।
রোববার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে উপবৃত্তি, টিউশন ফি ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব ইনশা আল্লাহ। এই বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে, আত্মমর্যাদা ও আত্মসম্মান নিয়ে বিশ্ব অঙ্গনে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। আমরা কারও কাছে মাথা নত করবো না। এটি আমাদের অঙ্গীকার।
দেশের শিশুদের মেধা বিকাশের সুযোগ দিলে বাংলাদেশকে কেউ আর পেছনের দিকে নিয়ে যেতে পারবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমরা যদি ছেলে-মেয়েদের মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিই, তাহলে কেউ এ দেশকে পেছনে ঠেলে দিতে পারবে না।
সরকার গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়াতে উপবৃত্তি দিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের শিশুরা খুবই মেধাবী এবং তাদের মেধা বিকাশে উপবৃত্তি দেওয়া হচ্ছে, যা আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল প্রতিভা অন্বেষণ মেধা বিকাশে একটি মহৎ উদ্যোগ, যেখান থেকে অনেক মেধাবী শিশু বের হয়ে আসছে। তিনি বলেন, আজ আমাদের শিশুরা তাদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছে এবং এখন তাদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা প্রকাশ পাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা পথ দেখিয়েছি। আমাদের মেধাবী শিশুরা এই পথেই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে এই দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। এই দেশে থাকবে স্মার্ট জনগণ, স্মার্ট সরকার, স্মার্ট অর্থনীতি এবং স্মার্ট সমাজ। আজকের যুগ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও গবেষণার যুগ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে বলেন।
কৃষি গবেষণায় বাংলাদেশ যথেষ্ট সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি এখন চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় আরও গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, আমরা সব সেক্টরে এগিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের গবেষণা একটি ক্ষেত্রে কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে, আর তা হলো স্বাস্থ্য খাত। আমরা চিকিৎসা বিজ্ঞান গবেষণায় গুরুত্ব দিচ্ছি..আমি মনে করি এটিকে আরও গুরুত্ব দেওয়া দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করেছে। সরকার সমুদ্রবিজ্ঞান গবেষণা এবং ব্লু ইকোনমিকে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ এটি ভবিষ্যতে দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। অনুষ্ঠানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর বক্তৃতার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমি সত্যিই আশাবাদী এই দেশকে আর কেউ পিছিয়ে নিয়ে যেতে পারবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে সেশনজট ও অস্ত্র সহিংসতা থেকে মুক্ত রাখতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছে। ৬-৮ বছর ধরে সেশনজট ছিল এবং অতীতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিয়মিত অস্ত্রের ঝনঝনানি হতো। তিনি বলেন, আমরা অন্তত দাবি করতে পারি যে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে ক্যাম্পাসকে সেই পরিবেশ থেকে মুক্ত করতে পেরেছি।
বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ২০০৯ সাল থেকে একটি গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় দেশ উন্নয়নের যাত্রায় এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, আমাদের শিক্ষার হার ৭৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে এবং আমরা খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। সারা বিশ্বে এখন জনগণের দুর্ভোগ বাড়ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যদিও বাংলাদেশের মানুষও উচ্চ মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে, তবুও এখানে খাদ্যশস্য পাওয়া যায়। (খাদ্যশস্যের) অভাব নেই।
মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) এবং এর সমমানের প্রতিষ্ঠানের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ উদ্বোধনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধাবী অন্বেষণ-২০২৩ (বঙ্গবন্ধু ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্ট সার্চ-২০২৩) এর সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদের পুরস্কার প্রদান এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২২ প্রদানের জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্মৃতি কর্মকার তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও স্নাতক (পাস) ও সমমানের প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৫৩ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিউশন ফি হিসেবে মোট ১২০০ কোটি টাকা পাচ্ছে।
শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি ও টিউশন ফি মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এ ছাড়া ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ১৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে, যারা বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩ এর মাধ্যমে পুরস্কৃত হয়েছেন এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ের ২২ জন শিক্ষার্থীকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বৃত্তি পুরস্কার-২০২২ এ ভূষিত করা হয়েছে।
১৫ জন শিক্ষার্থীর প্রত্যেকে একটি ক্রেস্ট, সনদ এবং ২ লাখ টাকা এবং বৃত্তি পুরস্কার-২০২২ এর জন্য নির্বাচিত ২২ শিক্ষার্থীর প্রত্যেকে একটি ক্রেস্ট, সনদ এবং ৩ লাখ টাকা পেয়েছে।
হাজারীবাগ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী রেশমি কানিজ, রাজশাহীর গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসদিক আহমেদ তন্ময়, রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্রী কুইন, ন্যাশনাল কার্ডিওভাসকুলার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড হাসপাতালের ডা. রাকিবুল আমিন বিজয় এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবা আহমেদ পুরস্কারপ্রাপ্তদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech