ডায়াল সিলেট ডেস্ক :  মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সুমাইছড়ায় অনিয়মতান্ত্রিকভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এতে ওই ছড়ার (পাহাড়ি খাল) প্রায় এক কিলোমিটার অংশে দুই পাড়ের সরকারি ব্রিজ, বসতবাড়ি, কবরস্থান, শ্মশানঘাট ও ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একই সাথে এই ছড়ার ইজারার রসিদ দিয়ে শ্রীমঙ্গলের অনান্য লিজবিহিন ছড়া থেকে বালু উত্তোলন করে অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে একটি চক্র।
২২ জুন শহরের সাগরদিঘি সড়কে শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন উপজেলার উত্তর লামুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. ফরমান মিয়া।
ফরমান মিয়ার পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন লামুয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. জমসেদ মিয়া। এ সময় ফরমান মিয়া বলেন, শ্রীমঙ্গল উপজেলার লামুয়া মৌজার সুমাইছড়া পাহাড়ি ছড়ায় প্রায় এক কিলোমিটার অংশ জুড়ে ৫-৭টি স্থানে বালু তোলা হচ্ছে। এতে লামুয়া-সিরাজনগর গ্রামীণ সড়কের সুমাইছড়া ব্রিজ, লামুয়া কবরস্থান, সোনাছড়া ও সিরাজনগর শ্মশানঘাট, সোনাছড়া চা বাগানের চা-আবাদের ভূমি, দুই গ্রামের কয়েকটি বসতবাড়ি এবং বিস্তীর্ণ ফসলিজমি ভাঙনসহ মারাত্মকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে। এছাড়াও বহন ক্ষমতার অতিরিক্ত বালুবোঝাই ট্রাক চলাচলে গ্রামীণ সড়ক ও ব্রিজের অবকাঠামোগত ক্ষতি হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য ও গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জানানো হয়, লিজের শর্ত ও পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করে নির্বিচারে বালু উত্তোলনে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ও জীব বৈচিত্রের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে। ফরমান মিয়া জানান, শর্ত ভঙ্গ করে বালু উত্তোলন না করতে বলায় ইজারাদার আবরু মিয়া শ্রীমঙ্গল থানায় তিনিসহ গ্রামবাসীর উপর মিথ্যা চাঁদাবজির অভিযোগ করেন।
কালাপুর সিরাজনগর গ্রামের মো তাজ মিয়া বলেন, সুমাইছড়া থেকে বালু উত্তোলনে উচ্চ আদালতের আদেশও অমান্য করা হচ্ছে । তিনি বলেন, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি মহামান্য হাইকোর্টে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে মহামান্য হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ গত ৪ জুন এক আদেশে বালু উত্তোলনের উপর ৬০ দিনের স্থিতাবস্থা বজায় রেখে ৪ সপ্তাহের মধ্যে জবাব দাখিলের জন্য মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। এর পরেও বালু উত্তোলন বন্ধ না হওয়ায় এলাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সন্দীপ তালুকদার বলেন, ইতিপূর্বে এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিলো। সার্ভেয়ার পাঠিয়ে ইজারাদারের বালু উত্তোলনের স্থান চিহ্নিত করে দেওয়া হবে। তবে তিনি উচ্চ আদালতের কোনো আদেশ এখনো পাননি বলে জানান।
এদিকে এই ছড়ার পূর্বের ইজারার কাগজ দিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার অনান্য ইজারাবিহিন পাহাড়ি ছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিক্রি কররাও অভিযোগ করেন বক্তারা।
সাংবাদ সম্মেলনে মকলিশ মিয়া (রাজাপুর), মো তাজ মিয়া(সিরাজনগর), ফরমান মিয়া (উত্তর লামুয়া), মো. রাজা মিয়া (লামুয়া), লোকমান আহমেদ (রাজাপুর), মো জব্বার মিয়া ( লামুয়া), জোনাব আলী, রেদোয়ান আহমদ, নিয়ামত উল্লাহ, কুতুব মিয়া, জব্বার মিয়া, লোকমান আহমেদ, মো সাউদ আলম, মকবুল হাসান, মো, সুরুক মিয়া, মইনুল ইসলামসহ কালাপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মানুষজন উপস্থিত ছিলেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *