কাণ্ডারিহীন জেলা যুবলীগ নেতাকর্মীদের ক্ষোভ

প্রকাশিত: ২:৪০ অপরাহ্ণ, জুন ২৪, ২০২৩

কাণ্ডারিহীন জেলা যুবলীগ নেতাকর্মীদের ক্ষোভ

ডায়াল সিলেট ডেস্ক : আগের মতো যুবলীগের একক ব্যানারে এখন কোনো কর্মসূচি পালন হচ্ছে না মৌলভীবাজারে। দুই একজন বিচ্ছিন্নভাবে পদ পাওয়ার আশায় অভিভাবক সংগঠনের সঙ্গে নিজেদের সমর্থকসহ মিছিল মিটিংয়ে অংশ নিলেও  নেই সেই প্রাণচাঞ্চল্যতা। দীর্ঘদিন থেকে জেলা কমিটি না থাকায় এর প্রভাব পড়েছে উপজেলা ও পৌর শাখাগুলোতে। কাণ্ডারিহীন থাকায় অনেকটাই নিষ্ক্রিয় সাংগঠনিক কার্যক্রম। আসছে জাতীয় নির্বাচনের আগে জেলা কমিটি না হলে এর ব্যাপক প্রভাব পড়বে। এমনটি ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছেন জেলার তৃণমূলের যুবলীগের কর্মীরা। জানা যায়, জেলাজুড়ে স্থবিরতা কাটিয়ে সাংগঠনিক কাজে গতিশীলতা আনতে উদ্যোগী হয় কেন্দ্রীয় কমিটি। সে লক্ষ্যে সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে গেল বছরের ১০ই অক্টোবর সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলন  শেষে কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও তা আর হয়নি। ওই দিন মৌলভীবাজার শহরের সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে দৃষ্টিনন্দন বর্ণিল আয়োজনে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।

১ম অধিবেশনে সম্মেলন শেষ হলে ২য় অধিবেশনে কাউন্সিল হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা হয়নি বলে অভিযোগ নেতাকর্মীদের।

দলের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদক আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি কিছুদিনের মধ্যে ঘোষণা করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও এখনো তা উপেক্ষিত। নেতাকর্মীরা ক্ষোভের সঙ্গে অভিযোগ করে বলেন জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দের নিজেদের বলয় ও পছন্দের ব্যক্তিদের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের তালিকা দেয়াতে এমনটি হচ্ছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন সৎ, যোগ্য ও কর্মীবান্ধব নেতৃত্ব না আসলে কারও ব্যক্তিগত পছন্দকে গুরুত্ব দিলে এর পরিণতি ভালো হবে না। আমরা তাদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা দিয়ে মাঠের আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবো।

জানা যায়, ওই সময় সম্মেলন ও কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে উজ্জীবিত  নেতাকর্মীরা তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ প্রায় তিন শতাধিক তোরণ নির্মাণ করেন। ১০ই অক্টোবর সম্মেলনের উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সম্মানিত অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতা এডভোকেট জাহাঙ্গীর  কবির নানক, মাহবুল আলম হানিফ এমপি, আহমদ হোসেন, বন ও পরিবেশমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি, উপাধ্যক্ষ মো. আব্দুস শহীদ, এমপি। প্রধান বক্তা ছিলেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো.  মাইনুল হোসেন খান নিখিল, বিশেষ অতিথি ছিলেন নেছার আহমদ এমপি, সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন এমপি, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ মিছবাহুর রহমান প্রমুখ। জানা যায় ১০ই অক্টোবরের আগে ২০১৭ সালের ৪ঠা মে মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সময় সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাহিদ আহমদকে সভাপতি এবং সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।

জেলা ও উপজেলার তৃণমূলের  নেতাকর্মীদের অভিযোগ মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি হওয়ায় ও  কোভিড-১৯ এর কারণেও অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়ে দলীয় কার্যক্রম। তৃণমূলের কর্মীদের এমন অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে আমলে নেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। জানা যায়- ২০২২ সালের ১৩ই মে জেলা সভাপতি/সম্পাদক হতে ইচ্ছুকদের জীবনবৃত্তান্ত আহ্বান করে কেন্দ্র। ওই সময় মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের ২২ জন নেতা তাদের জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন। সভাপতি পদে ১০ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১২ জন। নেতাকর্মীদের দেয়া তথ্যমতে সভাপতি পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দেন বিলুপ্ত কমিটির সাধারণ সম্পাদক  সৈয়দ রেজাউর রহমান সুমন, সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব, সহ-সভাপতি মহি উদ্দিন চৌধুরী ফাহিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সেলিম হক, পান্না দত্ত, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রুমেল, সহ-সম্পাদক সিতার আহমদ, সদস্য মবশ্বির আহমেদ, আব্দুর রহমান, মতিউর রহমান মতিন। সাধারণ সম্পাদক পদে বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক এডভোকেট গৌছ উদ্দিন নিক্সন, সাংগঠনিক সম্পাদক হোসেন মো. ওয়াহীদ সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক সুমেশ দাশ যীশু, প্রচার সম্পাদক হাবিবুর রহমান রাজিব, শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক সৈয়দ নাজমুল, অর্থ সম্পাদক সন্দ্বীপ দাস, উপ-দপ্তর সম্পাদক তুষার আহমদ, সহ-সম্পাদক সাদমান সাকিব, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আসাদুজ্জামান রনি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রনি, সাবেক ছাত্রনেতা সাইফুজ্জামান সুমন।   যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ  বলেন পর্যায়ক্রমে কমিটিগুলো আসছে। সব জায়গায়ই ভালোরাই কমিটিতে স্থান পাচ্ছেন। মৌলভীবাজারেও এর ব্যতিক্রম হবে না। যাচাই বাছাই চলছে। দলের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ভালো কমিটি উপহার দিতে বদ্ধপরিকর। এটা নিশ্চিত নতুন কমিটিতে চাঁদাবাজ, ভূমিদূস্য ও অযোগ্য কেউ স্থান পাবে না।  কেন্দ্রীয় যুবলীগের মহিলা বিষয়ক উপ-সম্পাদক ও প্রয়াত সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসীন আলীর মেয়ে সৈয়দা সানজিদা শারমিন  বলেন বর্তমান  কেন্দ্রীয় কমিটির যোগ্য নেতৃবৃন্দের সার্বিক দিকনির্দেশনায় সারা দেশের ন্যায় মৌলভীবাজার যুবলীগেও নতুন নেতৃত্ব আসবে। যাদের নেতৃত্বে সাংগঠনিক কার্যক্রম আরও বেগবান হবে। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল মুঠোফোনে জানান, খুব দ্রুত হবে, আসছে জাতীয় নির্বাচনের আগেই  দেয়া হবে মৌলভীবাজার জেলা যুবলীগের কমিটি।
0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ