দুই যুগেও সংযোগ সড়ক পায়নি সেতুটি

প্রকাশিত: ৫:০১ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২৩

দুই যুগেও সংযোগ সড়ক পায়নি সেতুটি

ডায়াল সিলেট ডেস্ক: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার ফলদ গ্রাম দিলবরনগরে সংযোগ সড়কের অভাবে দুই যুগ ধরে পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে সেতু। দুই পাশে গাইডওয়াল ও মাটি ভরাট না হওয়ায় নির্মাণের পর থেকেই সংযোগহীন দাঁড়িয়ে রয়েছে সেতুটি।

সড়ক না হওয়ায় ব্যবহারের আগেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পথে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে ‍দিলবরনগর-ডলুছড়া সড়কের পাহাড়ি ছড়ার ওপর নির্মিত সেতুটি। এতে দুর্ভোগ আর শেষ হয়নি চার গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের।

জানা যায়, স্থানীয়দের দাবির কারণে ১৯৯৯-২০০০ সালে দিলবরনগরে ইউনিয়ন পরিষদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হয় সেতুটি। এতে এ সড়কে চলাচলকারী জেরিন চা বাগান ছাড়াও রাধানগর, দিলবরনগর ও ডলুছড়া গ্রামের সহস্রাধিক মানুষের স্থানীয় ফলদ বাগানগুলোর উৎপাদিত ফল সহজেই বাজারজাতের সম্ভাবনাও তৈরি হয়ছিল। কিন্তু সেতুটি চালু না হওয়ায় সে আশা গুড়েবালি হয় স্থানীয়দের।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, এলাকাবাসী সেতুর নিচ ও ছড়ার পানির ওপর দিয়ে যাতায়াত করছে। এলাকার উৎপাদিত ফল ঠেলাগাড়ি করে পানি পার করেই বাজারে নিচ্ছে কৃষকরা। সেতুটির ওপর ও আশপাশ এলাকা জঙ্গলে পরিণত হয়েছে।

ওই এলাকার বাগানমালিক শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. কামাল হোসেন বলেন, সংযোগ সড়কের অভাবে দীর্ঘদিন সেতুটি পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। বিপুল অর্থে নির্মিত সেতুটি কোনো কাজে আসছে না। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানিয়েছিলেন জুন মাসের মধ্যে সেতুটির অসম্পূর্ণ কাজ হবে। কিন্তু সেই কাজ এখনও হয়নি।

দিলবরনগর গ্রামের বাসিন্দা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘১৯৯৯-২০০০ সালে শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন চেয়ারম্যান মো. আফজল হক জনদুর্ভোগ নিরসনে সেতুটি নির্মাণ করেছিলেন। কিন্তু চালু না হওয়ায় এখনও আমাদের পানির ওপর দিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আব্দুস শুকুর বলেন, সেতু চালু না হওয়ায় চার গ্রামের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগে আছে। এটির গাইডওয়াল নির্মাণ ও মাটি ভরাটের জন্য স্থানীয়রা কয়েকবার লিখিত ও মৌখিকভাবে জনপ্রতিনিধিদের জানালেও দীর্ঘদিনে এ সমস্যার কোনো প্রতিকার হয়নি।’

শ্রীমঙ্গল উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ভানু লাল রায় প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘অপরিকল্পিতভাবে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছিল। আমি ৩নং শ্রীমঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় কয়েকবার চেষ্টা করেছিলাম সেতুটির গাইডওয়াল ও মাটি ভরাট করে জনসাধারণের জন্য তা উন্মুক্ত করে দিতে।’

তিনি আরও বলেন, প্রকৌশলীর মাধ্যমে প্রাক্কলন করে দেখেছি ইউনিয়নের বাৎসরিক মোট বরাদ্দের বেশিরভাগই এ খাতে খরচ করতে হবে। তারপরও আমি পরিষদে তা উত্থাপন করলেও ইউপি সদস্যরা এত অর্থ ব্যয়ে এ কাজ করতে আপত্তি দেন। তাই সে সময়ে কাজ করতে পারিনি। বর্তমানে আমি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। আমি নির্বাচিত হওয়ার পর সেতুটির ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। কিন্তু অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় এখনও কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে সেতুটির কাজ সম্পন্ন করার ব্যাপারে আমি এখনও আশাবাদী।

জানতে চাইলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন খান সেতুটি অনেক আগের প্রজেক্ট উল্লেখ করে এ ব্যাপারে কোনো ধরনের মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।

0Shares