প্রকাশিত: ১০:২৪ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৭, ২০২৩
ডায়াল সিলেট ডেস্ক: সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী। তিনি দীর্ঘদিন ছিলেন সিলেট নগরে। কলাগাছের তন্তু থেকে শাড়ি তৈরি তাক লাগিয়েছেন তিনি, সৃষ্টি করেছেন ইতিহাস। আর এ তাক লাগানো শাড়ি এখন খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে।রাধাবতী কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি কলাবতী শাড়ি ও আরও ৩টি শাড়ি এবং হস্তশিল্পজাত কিছু পণ্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে সোমবার (১৭ জুলাই) হস্তান্তর করা হয়েছে।প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মন্ত্রিসভা কক্ষে কলাগাছের তন্তু থেকে তৈরি কলাবতী শাড়ি ও হস্তশিল্পজাত পণ্য গ্রহণ করেন। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াসমিন পারভিন তিবরীজি কলাগাছের তন্তু থেকে প্রস্তুত তিনটি শাড়ি ও দুটি জুয়েলারি বক্স প্রধানমন্ত্রীর কাছে হস্তান্তর করেন। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কলাগাছের তন্তু থেকে মণিপুরী ডিজাইনের এই শাড়ি প্রস্তুত করেন মৌলভীবাজারের তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী।কিছুদিন পর মা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। ফলে রাধাবতী বড় হন চাচার কাছে। স্থানীয় তেতইগাঁও রশিদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় তার বিয়ে হয়ে যায়। সংসার জীবন শুরুর তিন মাস পর বিচ্ছেদ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে তার মাও মারা যান। বিচ্ছেদ আর বিষণ্নতার মধ্যে রাধাবতী দেবী বয়ে চলেছেন ৬৬ বছরের জীবন। বর্তমানে চাচাতো ভাই অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক রণজিৎ সিংহের পরিবারে থাকেন।তিনিসহ রঞ্জিতের পরিবারের সদস্য ১০ জন। সাধ্যমতো কাজ করে পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন রাধাবতী। রাধাবতী জানান, পারিবারিক ঐতিহ্য হিসাবে ১৯৭৫ সাল থেকে তিনি মণিপুরী তাঁতবস্ত্র তৈরি করছেন। ১৯৯২ সাল থেকে শাড়ি তৈরি শুরু করেন। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে তিনিই প্রথম শুরু করেন তাঁতের তৈরি বস্ত্রগুলো। মাফলার, ওড়না, শাড়ি, গামছা, উত্তরীয়সহ বিভিন্ন পণ্য তিনি তৈরি করতেন। সেসব তৈরি পণ্য কিছু পাইকাররা বাড়িতে এসে নিয়ে যেতেন।পাশাপাশি জেলার বিভিন্ন তাঁতবস্ত্র দোকানের চাহিদা এলেই তিনি সে হিসাবে মণিপুরী তাঁতবস্ত্র তৈরি করে দিয়ে থাকেন। বাড়িতে টকটকি (তাঁতের কাঠের মেশিন) দিয়ে মণিপুরী বস্ত্র বুনন করেন। তাঁতবস্ত্র তৈরিতে ১৯৮৬ সালে প্রথম ভারতের মণিপুরের ইম্পলে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছিলেন। এরপর কমলগঞ্জের মাধবপুরে মণিপুরী ললিত কলা একাডেমিতে ২০১০ সালে ২ বার প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।সেই থেকে তিনি এখন মণিপুরী তাঁতবস্ত্র বুননে এলাকায় একজন ওস্তাদ (গুরু) হয়ে গেছেন। মণিপুরী তাঁতশিল্পী রাধাবতী দেবী এক সময় সিলেট অবস্থান করায় সেখানে মীরাবাজার এলাকায় সমবায় অফিসের তাঁতবস্ত্র বুননের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তখন নিজ এলাকার অনেক মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন স্থানে বস্ত্র বুনন উদ্যোক্তা বানিয়েছেন।যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তারা আজ সফল হয়েছেন বলে জানান রাধাবতী দেবী। রাধাবতীর ফুফাতো ভাই গুনমনির বান্দরবান এলাকায় কাজ করেন। গুনমনির মাধ্যমে রাধাবতী দেবীর দক্ষতার খোঁজ পান বান্দরবানের জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি। বান্দরবন জেলার জেলা প্রশাসক ইয়াছমিন পারভীন তিবরীজি কয়েক মাস আগে কমলগঞ্জ থেকে তাকে নিয়ে যান বান্দরবনে। বান্দরবান জেলার জেলা প্রশাসক তাকে দিয়ে আরও কয়েকটি শাড়ি তৈরির চিন্তা করেছেন বলে তাকে জানিয়েছেন। এমনকি তাকে দিয়ে কলার সুতার শাড়ি তৈরির একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করার মনোভাবও তিনি প্রকাশ করেন।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech