রাষ্ট্রদূতরা এ দেশে নিজেদের সম্রাট মনে করেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২:০৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ২২, ২০২৩

রাষ্ট্রদূতরা এ দেশে নিজেদের সম্রাট মনে করেন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

সিলেটে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক পেলেন ৫ গুণীশিল্পী

 

ডায়াল সিলেট রিপোর্ট :: বিদেশিদের মন্তব্য গণমাধ্যমে অতিপ্রচারের ফলে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কথা বলে তারা মজা পান বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, পৃথিবীর আর কোথাও অ্যাক্টিভিস্ট রাষ্ট্রদূতরা দলবেঁধে মন্তব্য করে বেড়ান না। তারা এ দেশে নিজেদের সম্রাট মনে করেন।

 

শুক্রবার দুপুরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সিলেটের উদ্যোগে নগরের পূর্ব শাহী ঈদগাহস্থ একাডেমি মিলনায়তনে সম্মাননা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে বিদেশিদের মন্তব্য অযাচিত। বিদেশে প্রায় লোক মেরে ফেলে, কিন্তু এগুলো নিয়ে আমরা কখনো হইচই করি না। আমাদের দেশের মিডিয়া ওদের (বিদেশিদের) খুব বেশি পাত্তা দেয়। ওরা বললেই বড় করে দেখে। এর ফলে ওরা মজা পায়। মনে করে, তারা এই দেশের সম্রাট। তাই তারা যেকোনো বিষয়ে কথা বলে।’

 

মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৪০ জন মারা গেলো। একটা দেশও কথা বলেনি। আর আমাদের দেশে কে কী করল সাথে সাথে চিৎকার। এটি অভন্তরীণ বিষয়ের উপর হস্তক্ষেপ। যা জেনেভা কনভেনশনের ধারেকাছেও নেই।

 

পৃথিবীর আর কোথাও রাষ্ট্রদূতরা দল বেঁধে মন্তব্য করে বেড়ায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করব, বিদেশি অ্যাকটিভিস্ট রাষ্ট্রদূত যারা, তারাও আগামীতে এ ধরনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন না।’

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমি যা বলতে চাচ্ছি, বিভিন্ন দেশে লোক যে মারা যায়, ইউএন কিংবা বিভিন্ন দেশ দল বেঁধে বা অ্যাকটিভিস্ট রাষ্ট্রদূতদের কখনো কোনো স্টেটমেন্ট দিতে আমি দেখিনি। সাংবাদিকদের প্রশ্ন করে তিনি বলেন, ‘আপনারা কি কেউ দেখেছেন, দেখে থাকলে বলেন, কোন কোন দেশ দল বেঁধে বা অ্যাকটিভিস্ট রাষ্ট্রদূতরা স্টেটমেন্ট দিয়েছেন?’

 

বিএনপির চলমান আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উদ্বেগের বিষয়ে আব্দুল মোমেন বলেন, তিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বহু বছর সদস্য ছিলেন। এটি ব্রিটিশ অর্গানাইজেশন। ব্রিটিশরা তাদের মতো অনেক সময় কাজ করে। তবে হ্যাঁ, প্রাইভেট ফান্ডিংও হয়। ব্রিটিশরা মোটামুটি চালায়।

 

এসময় তিনি বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে মন্তব্যকারীদের বয়কট করতে গণমাধ্যমকে ভূমিকা নেওয়ারও আহ্বান জানান। তাদের দেশের পুলিশ কী করে, সেই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করার আহ্বান জানান তিনি।

সিলেটে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক পেলেন ৫ গুণীশিল্পী

 

জেলা পর্যায়ে শিল্প-সংস্কৃতিতে সামগ্রিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ সিলেট জেলার ৫ জন শিল্পীকে দেওয়া হয়েছে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক ২০২২। শুক্রবার সকালে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সিলেটের উদ্যোগে নগরের পূর্ব শাহী ঈদগাহস্থ একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজন করা হয় এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের।

 

৫টি ক্যাটাগরিতে ৫ জন গুণীশিল্পীর হাতে সম্মাননা পদক, সম্মাননা চেক, সনদপত্র ও উত্তরীয় তুলে দেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন এমপি।

 

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. নাসির উদ্দিন খান ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিলেট জেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী।

 

স্বাগত বক্তব্য দেন জেলা কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশ গুপ্ত। আবৃত্তিশিল্পী রোহেনা সুলতানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সম্মাননাপ্রাপ্ত গুণীশিল্পীদের পক্ষে অনুভূতি প্রকাশ করেন মিহিরকান্তি চৌধুরী।

 

জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা ২০২২ পদক প্রাপ্ত গুণীশিল্পীরা হলেন মিহিরকান্তি চৌধুরী (লোকসংস্কৃতি), পূর্ণিমা দত্ত রায় (কণ্ঠসংগীত), চম্পক সরকার (নাট্যকলা), জ্যোতি ভট্টাচার্য্য (আবৃত্তি) ও মো. মিনু মিয়া (যন্ত্রসংগীত)।

 

সম্মাননা প্রদান আয়োজনের শুরুতেই পপি দাসের সহ-পরিচালনায় ‘আলো আমার আলো, ওগো আলোয় ভুবন ভরা’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা। গ্রুপ ফটোসেশনের মধ্য দিয়ে আয়োজনটির সমাপ্তি ঘটে।

 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ইতোমধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ৪৪ জন গুণীব্যক্তি ও ১টি সাংস্কৃতিক সংগঠনকে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সম্মাননা পদক প্রদান করা হয়েছে।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ