দেশের ভবিষ্যৎ আগামী কয়েক দিনের ওপর নির্ভর করছে: ফখরুল

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২৩

দেশের ভবিষ্যৎ আগামী কয়েক দিনের ওপর নির্ভর করছে: ফখরুল

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: দেশের ভবিষ্যৎ কী হবে তা আগামী কয়েক দিনের ওপর নির্ভর করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ নিজেরা রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে এখন বিএনপিকে ভাঙার ষড়যন্ত্র করছে। কোনো প্রচেষ্টাতেই কাজ হবে না।

 

বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রয়াত বিএনপি নেতা আ স ম হান্নান শাহ্’র ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

ফখরুল বলেন, জেনারেল আ স ম হান্নান শাহ ছিলেন বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী। দেশ ও দেশের রাজনীতিকে ভালোবেসে বিএনপিতে যোগ দিয়েছিলেন। নিজে নেতৃত্ব দিয়ে দল সংগঠিত করা এবং দুর্দিনে ঢাল হয়েছিলেন তিনি।

 

তিনি বলেন, আজ দেশের অবস্থা ভয়াবহ। পুরো বাংলাদেশ বিপদগ্রস্ত। বিএনপি নয়, জাতি বিপদগ্রস্ত। বিএনপি সংগঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী জবড়দখলকারী এ সরকার। রাষ্ট্রের মূল আত্মা ধ্বংস করেছে। সব ধরনের অধিকারই হরণ করা হয়েছে। সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে, তাদের স্কুলপড়ুয়া ছেলে মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। কোথায় যাবো না যাবো, কোন অনুষ্ঠানে যাবো, যাবো না, সেসবও নিয়ন্ত্রণ করা হয় এখন।

 

বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে দেশগুলো মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, তারা ভিসা নীতির আওতায় পড়ে। কেন জাতিকে এই অবস্থায় পড়তে হবে? এটা খুশির কথা না, লজ্জার। এজন্য সম্পূর্ণ দায়ী ভয়াবহ কর্তৃত্ববাদী সরকার। নিজেদের স্বার্থে ক্ষমতায় থাকতে গোটা দেশ ও জাতিকে জিম্মি করে ফেলেছে। মনে হয় তারা রাজা, আমরা সবাই প্রজা।

খালেদা জিয়ার সাজা নিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার এমন মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে নিয়ে সরকার মিথ্যা কথা বলছে। রাজনীতি থেকে দূরে রাখতেই তাকে আটক রাখা হয়েছে।

 

তিনি আরও বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কোনো নির্বাচনে এ দেশের মানুষ অংশ নেবে না। তাদের অধীনে নির্বাচন হবে না। আমরাও যাবো না। তারা দেউলিয়া হয়ে গেছে, এজন্য অন্যদের দল ভাঙতে চায়। এগুলো করে লাভ হবে না। মানুষকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। বর্তমানে যে সংকট, এ সংকট গোটা জাতির। আওয়ামী লীগের হাতে দেশ কতটা নিরাপদ থাকবে? আগামী দিনের দেশ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে আগামী কয়েক দিনের ওপর। তাই সবাইকে রাজপথে বের হয়ে আসতে হবে।

 

‘ভিসানীতি খুশির নয়, লজ্জার’

বাংলাদেশের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ভিসানীতি খুশির খবর নয় বরং দেশের জন্য লজ্জার বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

 

বুধবার বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্রি.জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহর সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, এসবের জন্য শেখ হাসিনা দায়ী, এই কর্তৃত্ববাদী সরকার যারা দেশকে জিম্মি করে রেখেছে তাদের কথাবার্তা শোনে মনে হয় এই দেশে শুধু তারাই থাকতে পারবে। সরকারের লোকজন বলছে, ভিসানীতির ফলে বিএনপি বিপদে আছে। আসলে বিএনপি কোনো বিপদে নেই বরং বিএনপি আন্দোলন করতে গিয়ে আরও শক্তিশালী হয়েছে।

 

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই সরকারকে সরকার বলা যায় না। আমরা বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করেছিলাম শুধু ভুখণ্ড বা ম্যাপ পাওয়ার জন্য নয়, আমরা চেয়েছিলাম একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য যেখানে আমার কথা বলার অধিকার, বিভিন্ন সংগঠন করার অধিকার থাকবে।

 

তিনি আরও বলেন, ‘গতকাল এক ছেলের সাথে কথা হলো, সে বিসিএসে লিখিত পরীক্ষায় পাস করেছে কিন্তু পরিবার বিএনপির সাথে সম্পৃক্ত থাকার কারণে চাকরি হয়নি। বিএপির পরিবারের সাথে নূন্যতম সম্পর্ক থাকলে তার চাকরি-প্রমোশন হয় না। প্রত্যেক মানুষ আজ অসহ্য হয়ে পড়ছে মিথ্যা মামলার জন্য। সরকারের মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে তো দেশকে জিম্মি করতে পারে না। এটা দেশের জন্য সুখকর নয়।

 

বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ব্রি.জে. (অব.) আ স ম হান্নান শাহর স্মরণে মির্জা ফখরুল বলেন, সেনাবাহিনী থেকে যে নেতা বের হয়ে আসেন তিনি যোগ্যতা দক্ষতা নিয়ে বের হয়ে আসেন। বাংলাদেশকে ভালোবেসে, বাংলাদেশের রাজনীতীকে ভালোবেসে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। সবসময় তার মতো নেতা পাওয়া যায় না।

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ