৬ বছরে ৪৪ দেশের ৪ কোটি ৩১ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত

প্রকাশিত: ৩:৩৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৩

৬ বছরে ৪৪ দেশের ৪ কোটি ৩১ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত

ইউনিসেফের তথ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর প্রভাবে বিশ্বের ৪৪টি দেশে গত ৬ বছরে দৈনিক গড়ে ২০ হাজার শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। মোট সংখ্যা হচ্ছে ৪ কোটি ৩১ লাখ। বদলে যাওয়া আবহাওয়ার কারণে সৃষ্ট অতিবন্যা, ঝড়, হ্যারিকেন, খরা, দাবানলে শিশুরা কীভাবে স্থানচ্যুত/ভিটেমাটি হারা হচ্ছে তার ওপর এই প্রথম গত শুক্রবার ইউনিসেফ একটি পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে।

 

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব না হলে সামনের তিন দশকের পরিস্থিতি অবিশ্বাস্য রূপ ধারণ করতে পারে-যা মানবিকতার জন্য হবে অত্যন্ত দু:খজনক। ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক ক্যাথারিন রাশেল মন্তব্য করেছেন, প্রতিশ্রæতি অনুযায়ী বিশ্ব সম্প্রদায় যদি জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পদক্ষেপ নিতে সক্ষম না হয় তাহলে স্থানচ্যুত শিশুদের অবর্ণনীয় দুর্দশা দেখতে হবে। তারা আর নিজ ঘরে ফিরতে পারবে কিনা, স্কুলে যেতে সক্ষম হবে কিনা-তারও অনিশ্চয়তা দূর করা সম্ভব হবে না। শুধু তাই নয়, অবর্ণনীয় দুর্দশাগ্রস্ত শিশুর এই সংখ্যার সাথে যুক্ত হবে আরো অসংখ্য শিশু, বাড়বে দেশের সংখ্যাও।

 

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশী শিশু বাস্তুচ্যুত হয়েছে চীনে, আর তা ঘটেছে আবহাওয়ার চরম বৈরী অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে। একই অবস্থা ফিলিপাইনেও। এ দুটি দেশ আবহাওয়ার পূর্বাভাসের ক্ষেত্রে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করায় বাস্তুচ্যুত শিশুর সংখ্যা সঠিকভাবে নিরূপন করা সম্ভব হয়েছে। অপরদিকে, ডোমিনিকা এবং ভানুয়াতুর মত ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর শিশুরা সবচেয়ে বেশী নাজুক অবস্থায় নিপতিত হচ্ছে হারিকেন-ঝড়ের তান্ডবে। বন্যায় ভেসে গেছে সোমালিয়া এবং দক্ষিন সুদানের অগণিত শিশু।

 

দুর্যোগ সম্পর্কিত উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা হাইতি’র শিশুদের রক্ষায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির ক্ষেত্রে তেমন কোন পদক্ষেপ গ্রহণের সংবাদ এখনো পাওয়া যায়নি। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি রোধে ধনী দেশগুলো অর্থ সহায়তার যে অঙ্গিকার করেছে, তা না পাওয়ায় আরো অনেক গরীব দেশই ক্রমাগতভাবে ঝুঁকিতে নিপতিত হচ্ছে বলে ইউনিসেফ উল্লেখ করেছে।

 

মোজাম্বিকের দরিদ্র সম্প্রদায় এবং শিশুরা তাদের ভবিষ্যত নিয়ে ভীতির মধ্যে দিনাতিপাত করছে।

 

সর্বশেষ এ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে বন্যা, অত্যধিক খরা, হারিকেনের কবলে পড়ে উপরোক্ত ৪৪ দেশের মোট শিশুর ৯৫% ভিটেমাটি হারা হয়েছে, যে সংখ্যা ৪ কোটি ৯ লাখ। এ সময়ে প্রচÐ খরার কারণে স্থানচ্যুত হয়েছে ১৩ লাখ শিশু। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশী হয়েছে সোমালিয়ায়। দাবানলে ৮ লাখ ১০ হাজার শিশুর স্থানচ্যুতি ঘটেছে কানাডা, ইসরাইয়েল এবং যুক্তরাষ্ট্রে।

 

উল্লেখ্য, আসছে ৩০ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুবাইতে অনুষ্ঠিত হবে জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলন, যা ‘সিওপি২৮’ নামে পরিচিত। ১৯৯২ সালে জাতিসংঘে জলবায়ু চুক্তির পর থেকে এই সম্মেলনটি প্রতি বছর অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই সম্মেলনে বাস্তুচ্যুত হবার ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক রাশেল।

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ