মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি  শাশুড়ির ৭কোটি টাকার ভূসম্পত্তি আত্মসাৎ এর প্রতিবাদে মানব-বন্ধন

প্রকাশিত: ১০:৫৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ১৪, ২০২৩

মৌলভীবাজারে ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি  শাশুড়ির ৭কোটি টাকার ভূসম্পত্তি আত্মসাৎ এর প্রতিবাদে মানব-বন্ধন
মনজু বিজয় চৌধুরী॥ মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ জাকারিয়া কর্তৃক নিজ শ্বাশুরী রাজিয়া খানমের ভূমিদখল বিষয়ে সমন্দি মোঃ রেজা হকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইছ আইডিতে শ্বাশুরী রাজিয়া খানম ইতিমধ্যে ভিডিওবার্তায় ভুমি দখলের বিষয়টি তুলে ধরেন। পরবতীতে জাকারিয়া ও সুমি ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। নিরুপায় হয়ে ১৪ অক্টোবর  শনিবার দুপুরে মানব বন্ধন করেছে রাজিয়া খানম ও ছেলে রেজা আহমদ এবং আত্বীয়রা। জামাতা হয়েও মেয়ের সামনেই জাকারিয়া মারধোর করেছে একাদিকবার। স্থানীয় প্রশাসন ও গরিব অসহায়ের অবলম্বন জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নিকট সমস্যা সমাধান ও নিরাপত্তা প্রদানের আকুল আবেদন জানিয়েছেন রাজিয়া  হক।
মৌলভীবাজার শহরের সিকন্দর আলী সড়কের রাজিয়া হকের পৈত্রিক প্রায় ৭কোটি টাকার সম্পদ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মোঃ জাকারিয়া ও তার স্ত্রী উম্মে সালমা হক সুমি কাগজপত্র সু কৌশলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় সর্বমহলে আলোচনা-সমালোচনার ঝর বইছে।—
আজ শনিবার দুপুরে জামাতা জাকারিয়া ও মেয়ে উম্মে সালমা হক সুমি ভুমি দখল ও আত্বসাতের হাত থেকে রক্ষায় মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব সম্মুখে আয়োজিত মানব বন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে করেন। জাকারিয়া আহমদের স্ত্রী উম্মে সালমা হক সুমির আপন বড়ভাই এবং রাজিয়া খানম হচ্ছেন তাদের মা- যিনি বয়োবৃদ্ধ হলেও সম্পূর্ণ সুস্থ্য ও শক্তসামর্থ। এর মানে রেজা হক হচ্ছেন মোঃ জাকারিয়ার সম্মন্ধী এবং রাজিয়া খানম শাশুরী। মোঃ জাকারিয়ার সম্প্রতি একটি সংবাদ সম্মেলনে সুমি ও জাকারিয়া দুজনেই রেজা হকের সাথে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি গোপন রেখেছেন। ভূমির মূল মালিক তার মা মৃতঃ সামছুন্নাহার খানম ওরফে সামছুন্নাহার খাতুন। সামছুন্নাহার খানমের গর্ভজাত তারা দুই বোন। দুই বোনের মধ্যে তিনি ছোট। তাদের কোন ভাই নেই। মায়ের ত্যাজ্যবিত্তের উত্তরাধিকারী সূত্রে ও দানপত্র সূত্রে তারা দুই বোন এ ভূমির মালিক। তার অংশের ভূমিতে স্বামী আব্দুল হক, পুত্র রেজা ও কন্যা সুমিকে তিনি বসবাসরত ছিলেন। সুমিকে জাকারিয়ার সাথে বিয়ে দেয়ার পর জাকারিয়া জামাতা হবার সুবাদে বাসায় অবস্থান নেয়। এরপর তলে তলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন পন্থায় তার নামে দলিল সৃষ্টি করে বসবাস করছেন ও মা ও ভাইকে মারদরসহ বাসা থেকে বের করে দিয়েছেন। বর্তমানে নিজের প্রায় ৭ কোটির টাকার বাসা রেখে ভাড়া বাসায় খেয়ে না খেয়ে বসবাস করছেন।
মানব বন্ধনে আসা ও অন্যান্যরা একাদিকরা বলেন- সম্পত্তি দখল, মারধর ও হুমকি-ধমকি প্রদান করে আমার বাসায় থেকে আমার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়াসহ অমানবিক নিষ্টর অঅচরনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জোর দাবী জানাই।
এব্যাপারে রেজা আহমদ, রাজিয়া হকের ছেলে বলেন- সুমি ও জাকারিয়া যা যা বলেছে তা মিথ্যা। এ ভূমি আমার পিতা মৃতঃ আব্দুল হকের ত্যাজ্যবিত্ত নয়। এ ভূমির মালিক আমার মা। মায়ের জীবদ্দশায়ও আমরা এ ভূমির উত্তরাধিকারী নই। যেখানে এ ভূমিতে আমার বা আমাদের মালিকা নাই নেই, সেখানে আমি বিক্রি করবো কিভাবে? জাকারিয়া সরকার দলীয় লোক হওয়ায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন পন্থায় তার নামে দলিল সৃষ্টি করে আমাদের মায়ের ভূমি দখল করে বসে আছে।
এবিষয়ে রাজিয়া হক,উত্তরাধীকারী সুত্রে, ভুমি মালিক জানান- জন্ম থেকে উক্ত ঠিকানায় যা আমার মায়ের নামে রেজিস্ট্রিকৃত বাসায় আমার বাবা, মা,স্বামী ও দুই সন্তান মোঃ রেজাউল হক ও উম্মে সালমা হক সহ বসবাস করে আসছি। ২০১৫ ইং সালে আমার মেয়ে ঘোড়াখাল নিবাসী মরহুম মনোর মিয়ার দুটো ছেলে পিতৃ- মাতৃহীন মোঃ জাকারিয়াকে ভালোবেসে বিয়ে করলে আমি তাদের দুজনকে আমার বাসায় আশ্রয় প্রদান করি। আমার থাবার/পানীয় দ্রব্যের সাথে চেতনানাশক মিশিয়ে ও ভুল বুঝিয়ে উপরোক্ত ঠিকানার আমার নিজ নামীয় ১২.৩৫ শতক ভূমির ০.৫ শতক ব্যাতিত বাকি পুরো সম্পত্তি আমার মেয়ে আমার কাছ থেকে হেবা দলিল করে নেয় যা আমি পরবর্তীকালে জানতে পারি। উক্ত হেবা ঘোষণাকালে আমার মেয়ে ও মেয়ে জামাই ও তাদের ষড়যন্ত্রে সহায়তাকারী ছাড়া আমার অন্য কোনো নিকট আত্মীয়, প্রতিবেশী, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর, গণ্য-মান্য ব্যক্তিবর্গ এমনকি আমার বড় ও একমাত্র ছেলে মোঃ রেজা উল হক উপস্থিত ছিল না। যা হেবা ঘোষণার পরিপন্থী । পরবর্তীকালে বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে আমার মেয়ে ও মেয়ে জামাই মোঃ জাকারিয়া পুরো সম্পত্তি দখলে নিতে চাইলে আমি বাধা দিলে আমাকে বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন জাকারিয়া ক্ষমতাসীন দলের ছত্রছায়ায় থাকায় তার বিরুদ্ধে খুব বেশি প্রতিবাদ করতে পারিনি। তবে বিভিন্ন সময় আমি স্থানীয় এমপি মহোদয়, মেয়র মহোদয়, উপজিলা চেয়ারম্যান, ভাইস-চেয়ারম্যান, স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও শহরের নেতৃস্থানীয় গণ্য-মান্য ব্যক্তিবর্গর নিকট আমার দুরাবস্থার বিবরণ দিয়ে বিচারপ্রার্থী হই কিন্তু আমার সমস্যার সমাধানত হয়নি উল্টো নিপীড়ণের মাত্রা বাড়তে থাকে। মারধর ও হুমকি-ধমকি প্রদান করে আমার বাসায় থেকে আমার খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয় এমনকি আমি খেতে বসলে আমার মেয়ে আমার হাত থেকে খাবারের প্লেট কেড়ে নিয়ে আমাকে ধাওয়া দেয়। বর্তমানে অসহায় ও মানবেতর জীবন যাপন করছি।
অসহায়- নির্যাতিতা রাজিয়া হকের সম্পত্তি পুনরুদ্ধারে ও নিরাপত্তা প্রধানে কার্যকর ভূমিকা রাখার সু দৃষ্টির সহযোগীতা এগ্রিয়ে আসবেন সরকার এমটাই প্রত্যাশা।
0Shares