গ্রাহকদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক তথ্য জানতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার

প্রকাশিত: ৩:৩৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২২, ২০২৩

গ্রাহকদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক তথ্য জানতে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার আইনশৃঙ্খলাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার

ডায়ালসিলেট ::  এবার বাংলাদেশে বর্তমান সরকার দেশের অভ্যন্তরে নাগরিকদের অবস্থান শনাক্তে নয়া প্রযুক্তি চালু করতে যাচ্ছে। মোবাইল ফোনে গ্রাহকদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক তথ্য জানতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।

যেটির মাধ্যমে কেউ রাষ্ট্র ও সরকারবিরোধী কথা বা ভিডিও প্রচার/ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তাই সরকার মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সমন্বিতভাবে কাজ করবে।

 

এর মাধ্যমে যেকোন সমাজ বিরোধী কার্যক্রম রোধে শিগগিরই কঠোর এই নজরদারি সিস্টেম কার্যকর হবে। নতুন এই প্রযুক্তির নাম- ইন্টিগ্রেটেড ল’ফুল ইন্টারসেপশন সিস্টেম বা সমন্বিত আইনসম্মত আড়িপাতা পদ্ধতি।

 

 

তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, এর মাধ্যমে নাগরিকদের ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক হয়রানির আশঙ্কা রয়েছে। যেটি মানুষের মধ্যে ভীতির পরিবেশ সৃষ্টি করবে এবং বাংলাদেশকে একটি কঠোর নজরদারি রাষ্ট্রে পরিণত করবে। একই সঙ্গে আদালতের অনুমতি ব্যতীত এ ধরনের প্রযুক্তির ব্যবহার করা হলে তা রাষ্ট্রীয় আইনেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে।

নতুন প্রযুক্তি চালু হলে অপারেটরদের সহায়তা নিয়ে কিংবা সহায়তা ছাড়াই নির্ধারিত সার্ভারে প্রবেশ করে সন্দেহভাজন ব্যক্তির সুনির্দিষ্ট অবস্থান শনাক্ত করতে পারবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এতে মোবাইল ফোন অপারেটর ছাড়াও ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান (আইএসপি), ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) এবং ন্যাশনাল ইন্টারনেট এক্সচেঞ্জের (এনআইএক্স) মতো প্রতিষ্ঠানগুলোও সরকারি সংস্থার সঙ্গে সংযুক্ত থাকবে।

 

 

প্রয়োজনবোধে একই সঙ্গে অনেক মানুষের গতিবিধিও নজরদারি করা যাবে। এটি ফ্রান্সের একটি কোম্পানি থেকে প্রয়োজনীয় উপকরণও কেনা হয়েছে।

 

 

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মূলত প্রত্যেকটি মোবাইল ফোনের আইএমইআই নাম্বারকেই নজরদারির এই সিস্টেমে সংযুক্ত করে দেয়া হবে। একই সঙ্গে ওই মোবাইলে থাকা সবগুলো সিমকে ট্র্যাক করা হবে। আগে এসব ব্যক্তির অবস্থান শনাক্ত করতে কাছাকাছি কয়েকটি টাওয়ারের সিগন্যাল থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে কাজ করতো সরকারি সংস্থাগুলো।

 

সেক্ষেত্রে সন্দেহভাজন ব্যক্তির কাছাকাছি অবস্থান শনাক্ত করা গেলেও সুনির্দিষ্ট অবস্থান শনাক্ত করা যেতো না। কিন্তু নতুন প্রযুক্তিতে একটি ট্রায়াংগুলেশন মেথড ব্যবহার করে বিভিন্ন উপকরণের সহায়তায় ওই মোবাইল ফোনটির সুনির্দিষ্ট অবস্থান চিহ্নিত করা যাবে।

 

২০২১ সালে আল-জাজিরার এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয় সরকার ইসরাইল থেকে নজরদারি প্রযুক্তি কিনেছে। গত বছর ইসরাইলি সংবাদ মাধ্যম ‘হারেৎজ’ বাংলাদেশের কাছে ইসরাইলের গোয়েন্দা নজরদারি প্রযুক্তি বিক্রি করার খবর প্রকাশ করে। যে প্রযুক্তির মাধ্যমে, আধা কিলোমিটার পরিধিতে থাকা সব ডিভাইসে হোয়াটসঅ্যাপের এনক্রিপ্টেড বার্তা, ফেসবুকের চ্যাট, কন্টাক্ট লিস্ট, কল এবং বার্তায় প্রবেশ করা যায়।

 

অনেকে মনে করছেন আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মোবাইল ফোনে এ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের টার্গেট করা হবে এবং সে বিষয়ে তাদের মধ্যেও উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ