একমাসে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার সোনা উদ্ধার, গ্রেফতার ১২

প্রকাশিত: ৪:২৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০২৩

একমাসে প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার সোনা উদ্ধার, গ্রেফতার ১২

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত

 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু, কফের সিরাপ ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পাচার হয়। ঠিক একই ভাবে ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলায়ও চোরাপথে আসে বিভিন্ন ধরনের পণ্য। বাংলাদেশ থেকে চোরাই পথে কেজি কেজি সোনা পাচার হচ্ছে।

 

বর্তমান যুগে প্রযুক্তির কারণে বদলেছে বিভিন্ন পদ্ধতি, বদলেছে রুট। অনেক কিছু বদলালেও আগের মতোই মাফিয়াদের হাত ঘুরেই পাচার হচ্ছে কোটি কোটি রুপির সোনা।

 

বিশ্বে যে কয়েকটি দেশে সোনার চাহিদা সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে বেশ উপরের দিকেই নাম রয়েছে ভারতের। এ চাহিদা মেটাতে একসময় বিভিন্ন অসৎ উপায়ে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করে সোনা আসতো দেশটিতে।

 

ব্যাগে ভরে বা জুতার সোলের নিচে লুকিয়ে বা অন্য সব পুরোনো পদ্ধতি এখন অতীত। নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে সোনা নিয়ে আসছেন পাচারকারীরা।

 

কেন্দ্রীয় শুল্ক দপ্তর সূত্রের খবর অনুযায়ী, বাংলাদেশ থেকে চোরাই সোনা পশ্চিমবঙ্গে আসার অন্যতম রুট হলো পেট্রাপোল স্থলবন্দরের কাছে জয়ন্তীপুর ছাড়াও উত্তর২৪ পরগণার বনগাঁ, বসিরহাট, বাগদার আন্তর্জাতিক সীমান্তে হয়ে চলে সোনা পাচার।

 

কখনো লরির ড্রাইভারের সিটের নিচে আবার কখনো সাইকেলের টায়ারে, মসলার বালতির ভেতরে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সোনা পাচার করা হয়ে থাকে।

 

গত এক মাসে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে ৯ কেজি ০৬৪.৩৮৫ গ্ৰামের সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। যার আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য আনুমানিক ৮ কোটি ৯৭ লাখ ৪৭২ হাজার ৬৭৫ রুপি বা ১১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।

 

গত এক মাসে যে পরিমাণ সোনা উদ্ধার হয়েছে তা দেখে চক্ষু চরকগাছ সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তাদের। আন্তর্জাতিক সীমান্তে বেআইনি ভাবে সোনা পাচারের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে মোট ১২ জনকে গ্ৰেফতার করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

 

এদের মধ্যে ৯ জন বাংলাদেশের নাগরিক। এরা কুমিল্লা, নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এছাড়া আরও তিন ভারতীয় নাগরিককে গ্ৰেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে একজন নারী রয়েছেন বলে জানা গেছে। এরা পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা বলে শুল্ক দফতরের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।

 

পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচারের ঘটনা নতুন নয়। বেকারত্ব বেশি থাকায় রীতিমত কর্পোরেট কায়দায় বেতন দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে নিয়োগ দিয়ে এ ধরনের পাচারের কাজ হচ্ছে। ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় গরিব মানুষরাই এখন গোল্ড মাফিয়াদের প্রধান টার্গেট। টাকার লোভে অনেকেই পাচারকারীদের দলের নাম লেখাচ্ছেন।

 

এ বিষয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিআইজি এ কে আর্য জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চোরাকারবারিরা এই পাচারের কাজে সাধারণত গরিব মানুষদেরকেই টার্গেট করছেন। তারা বিভিন্ন উপায়ে সীমান্ত দিয়ে পাচারের চেষ্টা করে। তবে সীমান্তে যেকোনো ধরনের চোরাচালান বন্ধে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

 

এছাড়া সীমান্তে বসবাসকারী জনগণকে সীমান্তের একটি হেল্পলাইন নম্বর দেওয়া হয়েছে। মেসেজ করে সোনা চোরাচালান সংক্রান্ত কোনো তথ্য থাকলে সেই নম্বরে জানানোর অনুরোধ করা হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রদানকারীকে উপযুক্ত পুরস্কার দেওয়া হবে এবং তার পরিচয় গোপন রাখা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ