প্রকাশিত: ৪:১৭ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৩
আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: অবিলম্বে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে সৌদি আরবসহ মুসলিম দেশগুলো। ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ড আত্মরক্ষার্থে–এমন যুক্তি নাকচ করে দিয়ে গতকাল শনিবার রিয়াদ থেকে এ আহ্বান জানানো হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন বলছে, আরব ও মুসলিম নেতাদের নিয়ে বিশেষ এই যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে ফিলিস্তিন অঞ্চলে ইসরায়েলের সংঘটিত মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধ ও অপরাধের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতকে আহ্বান জানানো হয়।
গাজায় সহিংসতা বন্ধ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টি করার উপায় খুঁজছে সৌদি আরব। এ দাবি আরও জোরদার করার জন্য আরব ও মুসলিম নেতাদের একত্রিত করেছেন সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগ ও মুসলিম দেশগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন ওআইসির (ইসলামি সহযোগী সংস্থা) আলাদা শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা। কিন্তু গাজায় যুদ্ধের কারণে দুই সংগঠন মিলে একসঙ্গে যৌথ শীর্ষ সম্মেলন হয় শনিবার ও রোববার।
এ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট তাইয়্যেপ এরদোয়ান, কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি ও সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল–আসাদ।
সম্মেলনে যুবরাজ মোহাম্মদ ‘ভাইদের বিরুদ্ধে বর্বরোচিত যুদ্ধের নিন্দা জানিয়ে ইসরায়েলের ব্যাখ্যা স্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান’ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা মানবিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি। এতে প্রমাণ হয় যে, নিরাপত্তা পরিষদ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে।’
ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর ‘গণহত্যা’ চালানো হচ্ছে। ইসরায়েলের ‘আগ্রাসন’ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ফিলিস্তিনি ইসলামি গোষ্ঠী হামাসের প্রশংসা করেন ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসি। ইসরায়েলের ওপর তেল ও পণ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ইসলামি দেশগুলোর প্রতি তিনি আহ্বান জানান।
রাইসি বলেন, ‘ইসরায়েলকে প্রতিহত করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আমরা হামাসকে ধন্যবাদ জানাই।’
৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালিয়ে ১,২০০ জনকে হত্যা করার পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। তখন থেকেই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল গত শুক্রবার পর্যন্ত ইসরায়েলের হামলায় ১১ হাজার ৭৮ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশই শিশু বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ।
ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সংঘাতের স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলনের আহ্বান জানান এরদোয়ান। সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘গাজায় আমাদের কয়েক ঘণ্টার জন্য বিরতি নয়, বরং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন।’
হামাসের বেশ কয়েকজন নেতা কাতারে অবস্থান করছেন। কাতার ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির মধ্যস্থতা করার চেষ্টা করছে বলে জানান দেশটির আমির। তিনি বলেন, ‘আশা করি শিগগিরই একটি মানবিক যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছানো যাবে।’
আন্তর্জাতিক মহলের প্রতি প্রশ্ন তুলে শেখ তামিম বলেন, ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইনের ঊর্ধ্বে বিবেচনা করার এই চর্চা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আর কত দিন করবে।
বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যার দেশ ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, ‘উত্তর গাজার ইন্দোনেশিয়া হাসপাতাল ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়েছে এবং হাসপাতালটির জ্বালানিও ফুরিয়ে গেছে।’ তিনি বলেন, ‘ইসরায়েলকে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করার পথ খুঁজে বের করতে হবে। মানবিক নৃশংসতার জন্য ইসরায়েলকে জবাবদিহি করতে ওআইসিকে অবশ্যই সব ব্যবস্থা ব্যবহার করতে হবে।
সৌদির পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুবরাজ ফয়সাল বিন ফারহান সাংবাদিকদের বলেন, অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আলোচনা ছাড়া গাজার ভবিষ্যত নিয়ে আর কোনো আলোচনা হতে পারে না।
সম্মেলনটিতে গাজায় অবরোধ তুলে নেওয়ারও দাবি তোলা হয়। এ ছাড়া গাজায় মানবিক সহায়তা ও ইসরায়েলিদের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের দাবি করা হয়।
Address: 4th floor, Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet 3100
isleworth, London. UK Mobile : +447438548379
Editor & Publisher : - Sohel Ahmed
Design and developed by AshrafTech