নিরাপত্তা দিতে পুলিশ চায় ৪৩০ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ৪:০০ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২৩

নিরাপত্তা দিতে পুলিশ চায় ৪৩০ কোটি টাকা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন

 

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ৪৩০ কোটি ২৫ লাখ টাকা চেয়েছে পুলিশ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুলিশকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১২৯ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। এবার পুলিশ, আনসার, র‌্যাব, বিজিবি ও কোস্ট গার্ড মিলিয়ে নির্বাচন কমিশনে (ইসি) ১ হাজার ৭১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার চাহিদা দিয়েছে। চাহিদার এই পরিমাণ আগের নির্বাচনে বাহিনীগুলোকে দেওয়া মোট বরাদ্দের দ্বিগুণের বেশি। ইসি সচিবালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

 

সূত্রমতে, বাহিনীগুলোর মধ্যে এবার সবচেয়ে বেশি পরিমাণ টাকা চেয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া কোস্ট গার্ড চেয়েছে গত নির্বাচনে বরাদ্দের তিন গুণ অর্থ। বাহিনীটি চেয়েছে ৭৮ কোটি ৬২ লাখ; গতবার দেওয়া হয়েছিল ২৫ কোটি টাকা। আনসার ও ভিডিপি চেয়েছে ৩৬৬ কোটি ১২ লাখ; গত নির্বাচনে বরাদ্দ ছিল ২৪২ কোটি ৮০ লাখ টাকা। বিজিবি চেয়েছে ১৪৫ কোটি ৮৭ লাখ; গতবার ৭৮ কোটি ৪২ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল। র‌্যাব চেয়েছে ৫০ কোটি ৬৩ লাখ; গতবার দেওয়া হয়েছিল ২২ কোটি ১২ লাখ টাকা।

 

ইসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, এসব বাহিনীর চাহিদা নিয়ে ইসি বৈঠক করবে। কোন বাহিনীকে কত দিনের জন্য মোতায়েন করা হবে, তার ভিত্তিতে বরাদ্দের পরিমাণ নির্ধারণ করা হবে।

 

জানা যায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনীকে ৬৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। তবে এবার সেনা মোতায়েন হবে কি না বা হলেও কীভাবে মোতায়েন করা হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনো কমিশন নেয়নি। তাই এবার সশস্ত্র বাহিনীর চাহিদা এখনো পায়নি ইসি।

 

ইসি সূত্রের দাবি, এবার ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেছনে বিভিন্ন খাতে ব্যয়ও বাড়বে। কারণ, কম-বেশি ৯ লাখ প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং অফিসারকে এবার দুদিনের সম্মানী ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি। গত নির্বাচনে প্রিসাইডিং অফিসাররা এক দিনের জন্য ৪ হাজার টাকা করে ভাতা পেয়েছিলেন। এবার দুদিনের সম্মানী ভাতা হিসেবে একজন প্রিসাইডিং অফিসার ৮ হাজার, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার ৬ হাজার এবং পোলিং অফিসাররা ৪ হাজার টাকা করে পাবেন। এ ছাড়া নির্বাচনী প্রশিক্ষণ খাতে ১৩৫ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

 

জানা যায়, একাদশ সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ও নির্বাচন পরিচালনায় ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছিল। সেবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যয় হয়েছিল প্রায় ৫৬৫ কোটি টাকা। অ্যাপে আচরণবিধি লঙ্ঘন কমবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসি অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু করেছে। নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মনোনীত প্রার্থীরা ঘরে বসে অনলাইনে মনোনয়নপত্র দাখিল করতে পারবেন। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীকে অনলাইনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর ১ শতাংশ ভোটারের সম্মতিসূচক স্বাক্ষরসংবলিত তালিকা রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দিতে হবে। নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় এমন বিধান রাখা হয়েছে। সে অনুযায়ী আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে রবিবার অনলাইনে মনোনয়ন জমা পদ্ধতি ও স্মার্ট নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা অ্যাপ উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

 

অ্যাপ প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, ‘এই পদ্ধতি শুধু আমাদের তথ্য সরবরাহই সহজ ও দ্রুত করে দেবে তা নয়, স্বচ্ছতার ক্ষেত্রেও এটি খুব সহায়ক হবে।’ তিনি বলেন, ‘অনলাইন সাবমিশনটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে যে শোডাউন হয়, তা আমাদের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এটি করতে গিয়ে আচরণবিধি ভঙ্গ হতে পারে, অনেক সময় সংঘাতও হতে পারে। তাই এটাকে সহজ করা হয়েছে।’

 

ভোটকেন্দ্রে সংঘাত এড়াতে কবে অনলাইন ভোটিং চালু করা হবে, জানতে চান একটি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি। জবাবে সিইসি বলেন, ‘অনলাইন ভোটিং; ঘরে বসে ভোট— এটা পৃথিবীর কোথাও হয়নি এখনো। ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার সাক্ষাতের সময় আমাকে জানিয়েছেন, তাঁরা চেষ্টা করছেন। আমার বিশ্বাস, ওটা হয়তো বাস্তবায়িত হবে।’

 

অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান বলেন, ‘অতীতে দেখা গেছে, প্রথম দিনেই মনোনয়ন সাবমিট করতে আসার সময় কিন্তু সম্মানিত প্রার্থীরা শত শত মোটরসাইকেল নিয়ে আসেন। এতে তাঁদের শক্তি প্রদর্শিত হতো। কিন্তু এতে তাঁরা প্রথম দিনেই নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করলেন। এই অ্যাপ দুটি বিশেষ পদ্ধতির, যার ফলে তাঁদের আচরণবিধি ভঙ্গ করতে দেবে না।’

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ