মৌলভীবাজারে জমিদার বাড়ি দখলে লাল মিয়ার ৩ বছরের জেল

প্রকাশিত: ১০:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৬, ২০২৩

মৌলভীবাজারে জমিদার বাড়ি দখলে লাল মিয়ার ৩ বছরের জেল

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: মৌলভীবাজার বড়লেখা জমিদার বাড়ি দখলে অভিযুক্ত লাল মিয়ার ৩ বছরের সাজা দিয়েছেন সিলেট সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত।

বড়লেখা জমিদার বাড়ির অন্যতম উত্তরাধিকার রনজিৎ কুমার রায়ের করা মামলায় সম্প্রতি এ সাজা হয়।

জালিয়াতির মাধ্যমে দেবত্তোর সম্পত্তি দখলের অভিযোগে লাল মিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আরেকটি মামলা বর্তমানে চলমান আছে।

জানা গেছে, লাল মিয়া দীর্ঘদিন ধরে পারিবারিক দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করে আসছেন। দখল ঠেকাতে পুরকায়স্ত পরিবারের অন্যতম অংশীদার ঢাকায় বসবাসরত রনজিৎ কুমার রায় মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, বড়লেখা থানা, দুদকের বিভাগীয় কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেন। এ কারণে রনজিৎকে নানাভাবে হয়রানির চেষ্টা করেন লাল মিয়া। শুরুতে প্রাণনাশের হুমকি এবং বিভিন্নভাবে আর্থিক প্রলোভন দেখান। তাতেও কাজ না হওয়ায় এক পর্যায়ে সামাজিকভাবে হেয় করতে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে মানহানির চেষ্টা করেন।

এ পরিস্থিতিতে ২০১৯ সালে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা করেন তিনি। মামলাটি পরে সাইবার ট্রাইব্যুনালের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে স্থানান্তর হয়।

সিলেটের সাইবার ট্রাইব্যুনাল আদালত উভয় পক্ষের যুক্তি তর্ক শোনেন। পরবর্তীতে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ফরেনসিক রিপোর্ট সংগ্রহ করেন। সেখানে লাল মিয়ার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাকে সাজা দেন আদালত। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ৩টি ধারায় আলাদাভাবে লাল মিয়ার মোট ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তবে সব দণ্ড একসঙ্গে চলবে বিধায় তাকে ৩ বছরের জেল খাটতে হবে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী রনজিৎ কুমার রায় বলেন, লাল মিয়া জোর করে আমাদের পারিবারিক দেবত্তোর সম্পত্তি দখলের চেষ্টা করেন। এতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোয় নানাভাবে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন। এক পর্যায়ে বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং আমার ঘনিষ্টজনের কাছে এসএমএস করেন। এ কারণে আমি মামলা দায়ের করেছিলাম।

বিয়ানিবাজার-ঢাকা আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বড়লেখার পানিধার গ্রামে প্রায় ১০ বিঘা জমি নিয়ে রাম কুমার পুরকায়স্থের জমিদার বাড়ির অবস্থান। তবে জমিদারের উইল করা মোট পারিবারিক দেবত্তোর সম্পত্তি ১ হাজার ৩০৪ একর। এ জমি দখলের জন্য একাংশে টিনের ঘর নির্মাণ করেন লাল মিয়া। তার দাবি, ২০১৭ সালের জুনে জমিদারের নাতি রাধা কান্ত পুরকায়স্থ এ জমির মধ্যে ১৮ শতক আছার উদ্দিনকে আমমোক্তার নিযুক্ত করেন। এই আমমোক্তার নামার ক্ষমতাবলে তিনি ৯ দশমিক ৪৬ শতক ভূমি যুক্তরাজ্য প্রবাসী শামীম আহমদ, জালাল আহমদ, জসীম উদ্দিনের কাছে বিক্রি করেন। সে সূত্রে প্রবাসীর ভগ্নিপতি লাল মিয়া টিনের ঘর নির্মাণ করে ওই জমি দখল করেছেন। তবে তাদের ভুয়া কাগজের জালায়াতির বিষয়টি দুদকের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে। অভিযোগপত্রে লাল মিয়াসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়।

জমিদার বাড়ির উত্তরাধিকার ও রনজিৎ কুমার রায়ের কাকা শ্যামাকান্ত রায় বলেন, ভূমিদস্যু চক্রের ভয়-ভীতিতে আমি ও আমার ভাতিজার পরিবার দীর্ঘদিন রাতে বাড়িতে থাকতে পারি না। বড়লেখার লতিফ মেম্বারের নেতৃত্বে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে জমি দখলে সক্রিয় রয়েছে।

0Shares