বিতর্কিত রুয়ান্ডা পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা

প্রকাশিত: ৩:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩

বিতর্কিত রুয়ান্ডা পরিকল্পনার পক্ষে ভোট দিলেন ব্রিটিশ এমপিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :: নিজের দলের বিদ্রোহ সামলে বিতর্কিত রুয়ান্ডা পরিকল্পনা পাস করালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। যুক্তরাজ্যে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়ার এই পরিকল্পনা ৩১৩-২৬৯ ভোটে পাস করেছে হাউস অফ কমন্স।

 

পার্লামেন্টে সুনাকের দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও তার দলের বেশ কয়েকজন এমপি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছিলেন। বিরোধীরাও আগেই জানিয়েছিলেন, তারা এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করেন না। ফলে ভোটাভুটিতে হেরে গেলে ঋষি সুনাককে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে হতো।

 

এ অবস্থায় কোনো ঝুঁকি না নিয়ে পরিবেশমন্ত্রী গ্রাহাম স্টুয়ার্টকে কপ২৮ বৈঠক ছেড়ে লন্ডন ফিরে এসে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে বলা হয়।

 

সরকারের বক্তব্য : ভোটাভুটির আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পর্লামেন্টের সদস্যদের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে ভোট দিতে আহ্বান জানান। তার দাবি, এটি বেআইনি অভিবাসন মোকাবিলায় সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ।

 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুনাক লিখেছিলেন, এই বিল পাস হলে কে যুক্তরাজ্যে ঢুকতে পারবে, তা আমরা ঠিক করতে পারবো। অভিবাসীদের নৌকাগুলোকে থামানোর জন্য আমাদের এই বিল পাস করা জরুরি।

 

এ বছর নৌকায় ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে প্রায় ২৯ হাজার মানুষ অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন। ২০২২ সালে গিয়েছিলেন ৪৬ হাজার মানুষ।

 

যা আছে পরিকল্পনায় : ব্রিটিশ সরকারের পরিকল্পনা অনুয়ায়ী, যুক্তরাজ্যে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা সেখানেই বসবাস করবেন।

 

এর জন্য এরই মধ্য়ে রুয়ান্ডাকে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। তাদের দাবি, এই নিয়ম চালু হলে অবৈধ অভিবাসীরা আর যুক্তরাজ্যে আসবেন না।

 

সমালোচকরা যা বলছেন : রক্ষণশীল দলের কট্টরপন্থিদের অভিযোগ, এই বিলে এটি বলা নেই, যেসব অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাজ্যে চলে আসবেন, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তখন তারা ব্রিটিশ আদালতে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারবেন। মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপীয় আদালতেও যেতে পারবেন।

 

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এই পরিকল্পনা কার্যকরই করা যাবে না। তাছাড়া এটি অনৈতিকও। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সাড়ে ছয় হাজার কিলোমিটার দূরের একটি দেশে পাঠানো মেনে নেওয়া যায় না।

 

গত মাসে ব্রিটিশ সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রুয়ান্ডাকে কখনোই নিরাপদ দেশ বলা যায় না। যুক্তরাজ্যের অ্য়ামনেস্টি ইন্টারন্য়াশনালের প্রধান সাচা দেশমুখ বলেছেন, এই পরিকল্পনায় মানবাধিকারের ধারণাকে আক্রমণ করা হয়েছে।

 

ঋষি সুনাক জানিয়েছেন, হাউস অফ কমন্সে বিলটি অনুমোদিত হওয়ার পর তারা নতুন উদ্যমে এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন। তবে আদালতের উদ্বেগের বিষয়গুলো মাথায় রাখা হবে।

 

-সূত্র: ডয়েচে ভেলে

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ