২৩ দিন পর সিলেট দিয়ে শুরু হচ্ছে পাথর আমদানি

প্রকাশিত: ২:১৫ পূর্বাহ্ণ, জানুয়ারি ৩১, ২০২৪

২৩ দিন পর সিলেট দিয়ে শুরু হচ্ছে পাথর আমদানি

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: ২৩ দিন বন্ধ থাকার পর সিলেট বিভাগের সকল স্থল বন্দর ও স্থল শুল্ক ষ্টেশন দিয়ে শুরু হচ্ছে পাথর আমদানি। বুধবার (৩১ জানুয়ারি) থেকে আমদানি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন আমদানিকারকরা।

 

মঙ্গলবার আমদানিকারক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কমিশনার কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট সিলেট কমিশনারেট এর সাথে যৌথ মতবিনিময় সভায় এ সিদ্ধান্ত

 

পাথর ও চুনাপাথর আমদানিতে শুল্ক (অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু) বাড়ানোর প্রতিবাদে গত ৭ জানুয়ারি থেকে আমদানি বন্ধ রাখেন আমদানিকারকরা।

 

তখন আমদানিকারকরা অভিযোগ করেন, গত চার মাসের মধ্যে দুইবার পাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়িয়েছে কাস্টমস। এতে আমদানিকারদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

আমদানিকারকরা জানান, প্রতি টন পাথর ও চুনাপাথর সর্বোচ্চ ৮ থেকে ১০ ডলারে তারা আমদানি করেন। তবে এই পাথরের ২০ থেকে ৩০ শতাংশ নিম্নমানের থাকায় তা ফেলে দিতে হয়। তবুও গত বছরের জুলাই পর্যন্ত এনবিআর আমদানি মূল্য নির্ধারণ করেছিল পাথর ১১ ডলার ও চুনাপাথর সাড়ে ১১ ডলার। ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদে পর ৭৫ সেন্ট বৃদ্ধি নির্ধারণ করে নতুন অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু দাঁড়ায় পাথরের ক্ষেত্রে ১১.৭৫ ডলার আর চুনাপাথরের ক্ষেত্রে ১২.২৫ ডলার।

 

এরপর ৪ জানুয়ারি আবারও অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১.২৫ ডলার বৃদ্ধি করে পাথরের ক্ষেত্রে ১৩ ডলার আর চুনাপাথরের ক্ষেত্রে ১৩.৫০ ডলার নির্ধারণ করে চিঠি দেয় কাস্টমস। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে সিলেট বিভাগের সব স্থলবন্দর ও শুল্ক স্টেশন দিয়ে পাথর ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

 

তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ জানায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমানিতে শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। যা গত ৮ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে।

 

এদিকে, আমদানি বন্ধ থাকায় রাজস্ব হারায় সরকার। আর স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশনের লক্ষাধিক শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েন।

 

এ অবস্থায় মঙ্গলবার নগরীর উপশহরস্থ কাষ্টমস অফিসে কাস্টমস কর্মকর্তা ও আমদানিকারকরা বৈঠকে বসেন। বৈঠকে পাথর আমদানিতে অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু ১.২৫ ডলার বাড়ানোর ৭৫ সেন্ট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহার করে বুধবার থেকে পাথর আমদানি শুরুর ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা।

 

এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সাবেক সভাপতি মো. এমদাদ হোসেন, সিলেট জেলা পাথর আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি ও সিলেট চেম্বারের সহ সভাপতি মো. আতিক হোসেন, অর্থ সম্পাদক জয়দেব চক্রবর্ত্তী, তামাবিল পাথর, চুনাপাথর ও কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের সভাপতি মো. লিয়াকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন ছেদু, ভোলাগঞ্জ পাথর আমদানীকারক গ্রুপের সহ সভাপতি মো. বশির আহমদ, সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান মিন্টু, ছাতক লাইমষ্টোন ইম্পোর্টারস এন্ড সাপ্লাইয়ার্স গ্রুপের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক আহমেদ শাখায়াত সেলিম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক অরুন দাস, তাহিরপুর কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের মনমোহন পাল মতিশ, সুনীল পাল চৌধুরী, মো. খসরুল আলম, তাহিরপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান আনিসুল হক, শাহীন চৌধুরী, সিলেট জেলা পাথর আমদানীকারক গ্রুপের কার্যকরী সদস্য মো. শাহ আলম, শাহীন আহমদ, আলতাফ হোসেন প্রমুখ।

 

জানা যায়, সিলেট সীমান্তের কাছে ভারতের পাথর-চুনাপাথরের খনি সমৃদ্ধ মেঘালয় রাজ্য। এর ফলে অন্য স্থানের তুলনায় কম পরিবহন খরচ ও কিছুটা কম দামে মেঘালয় থেকে পাথর আমদানি করেন সিলেট অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। এ কারণে সিলেটের গোয়াইনঘাটের তামাবিল, বিয়ানীবাজারের শেওলা স্থলবন্দর ছাড়াও কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বাগলি, বড়ছড়া ও চারাগাঁও এবং ছাতকের ইছামতী ও চেলা স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর ও পাথর আমদানি হয়ে থাকে।

 

শুল্ক বিভাগের তথ্যমতে, সিলেট অঞ্চলের স্থল বন্দর ও শুল্ক স্টেশনগুলো দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২০ হাজার টন পাথর ও চুনাপাথর আমদানি হয়।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ