বাংলাদেশ ক্যান্সার আক্রান্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে: মঞ্জু

প্রকাশিত: ৩:৩৩ পূর্বাহ্ণ, ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪

বাংলাদেশ ক্যান্সার আক্রান্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে: মঞ্জু

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: আমার বাংলাদেশ পার্টির(এবি পার্টি) সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, বাংলাদেশ ক্যান্সার আক্রান্ত রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক গোলটেবিল বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।

 

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেবের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে মঞ্জু বলেন, যারা আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, বিনা ভোটে এমপি হয়েছে, দুর্নীতি করেছে, বিদেশে টাকা পাচার করেছে তারা সবাই দেশদ্রোহী। তাদের বিচার করতে হবে।

 

তিনি বলেন, আজকে দেশে বহুমুখী সংকট। এই সংকটের মাত্রা কতটুকু? এটা বোঝার জন্য সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রীর শ্লোগানেই স্পষ্ট। এই রাষ্ট্রের রোগ কোথায়? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে কীভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে, হেনস্তা-সম্মানহানি করা হয়েছে। একইভাবে আগের নির্বাচনের পর নোয়াখালীর সুবর্ণচর গ্রামেও পাশবিক ঘটনা জনগণ দেখেছে। জানি না শেষ পর্যন্ত এর শাস্তি হয় কি না। কারণ ব্যাংক লুটেরাদের বিচার হতে তো আমরা দেখিনি।

 

তিনি আরও বলেন, কেমন বিচার ব্যবস্থা, কেমন আমাদের সমাজ, শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান? ৯২ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে লুটপাট-পাচার হয়ে গেছে। কারা করেছে, তাদের তালিকা হয়েছে। যারা ধর্ষণ করছে তারা কারা, যারা সংসদে তারা কিসের বিনিময়ে প্রতিনিধিত্ব করছে? এগুলো সবাই আমরা জানি।

 

মজিবুর রহমান বলেন, কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য আমাদের দেশপ্রেমিক নাগরিক প্রয়োজন। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী, দুর্নীতি কি জায়েজ? ধর্ষণ কি পুণ্যের কাজ? টাকা পাচার করা কি জায়েজ বা বৈধ নিয়ম? সংবিধান যে জায়গায় আছে, যে দণ্ডবিধি আছে তাতে কিন্তু কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়।

 

তিনি বলেন, অধ্যাপক ড. ইউনুস একটা রাজনৈতিক দল তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তখন একটা ডায়ালগে আমি বলেছিলাম, কেমন রাষ্ট্র হতে পারে কল্যাণকর? কল্যাণকর রাষ্ট্র হবে তেমন, যেখানে একজন শাসক চিন্তা করবে, একটা কুকুরও যদি না খেয়ে মারা যায় তাহলে সেটির দায়-জবাব দিতে হবে শাসককে। এটাই কল্যাণকর রাষ্ট্রের ধারণা।

 

আমরা তাহলে কোথায় আছি— এমন প্রশ্ন তুলে মজিবুর রহমান বলেন, যে রাষ্ট্রে আছি সেখানে আমরা তৃতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত হয়েছি। বরিশালে চরমোনাই পীর প্রার্থী হিসেবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় জুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। একই মামলায় একজন জামিন পেয়ে রাতারাতি এখন এমপি, আরেকজন মাসের পর মাস জেল খাটছেন।

 

সেই স্বপ্নের কল্যাণকর রাষ্ট্র তাহলে কেন পাচ্ছি না— প্রশ্ন তুলে মঞ্জু বলেন, আমরা যে লক্ষ লক্ষ আলেম, হাফেজ, দ্বিনি শিক্ষায় শিক্ষিতরা, আমাদের সামনে যে দিনের পর দিন জুলুম হচ্ছে, অন্যায়-অত্যাচার, ধর্ষণ লুটপাট হচ্ছে। এসবের জবাবদিহিতা তাহলে বেশি কার? আমি জানি, যিনি জ্ঞানী, বেশি জানেন তাদের জবাবদিহিতা সবচেয়ে বেশি। আমরা এতো বড় বড় অন্যায় মেনে নিচ্ছি।

 

তিনি বলেন, ইসলামী আন্দোলনের সদস্য সংখ্যা কত? খেলাফত আন্দোলনের সংখ্যা কত? অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদস্য সংখ্যা কত? সবচেয়ে বেশি জবাবদিহিতা তো আমাদেরই।

 

তিনি আরও বলেন, আজকে বাংলাদেশ স্পষ্টত দুই ভাগে বিভক্ত। দেশপ্রেমিক জনতা আর দেশের শত্রু বিরোধীরা। আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতেই পারে। ক্যান্সার আক্রান্ত হলে কিন্তু আমরা ডাক্তারের কাছে যাই। তখন কিন্তু ডাক্তার ধর্ম-বর্ণ, দল-মত নিয়ে কথা বলে না। তিনি নামাজ পড়েন না কি পূজা করেন জানতে চান না। আজকে সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার সময় একশবার পিছিয়েছে। মিয়ানমার, আরাকান, ভারত সীমান্তে বাংলাদেশের মানুষ নির্মমভাবে গুলিতে মারা যাচ্ছে, তাতে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নাই।

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ