এমপি আনার হত্যায় একের পর এক বাড়ছে রহস্য

প্রকাশিত: ৫:৪৭ পূর্বাহ্ণ, মে ২৪, ২০২৪

এমপি আনার হত্যায় একের পর এক বাড়ছে রহস্য

ডায়ালসিলেট রিপোর্ট :: কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে খুন হন ঝিনাইদাহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। এ হত্যাকাণ্ডে মাস্টারমাইন্ড হিসেবে নাম এসেছে আকতারুজ্জামান শাহীন নামে এক ব্যক্তির। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পরিকল্পনায় কেবল যে শাহীনই ছিলেন এমনটা নাও হতে পারে। এ ঘটনার ডালপালা হয়তো অনেকদূর বিস্তৃত।

 

 

শাহীন নিজে ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন। তিনি আবার এমপি আনোয়ারুল আজিমের দীর্ঘদিনের বন্ধু। পারিবারিকভাবে পরিচয় হলেও এক সময় দুইজনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠে।

 

 

 

জানা যায়, ভারতে খুন হওয়া সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার রাজনীতিতে আসার আগে চরমপন্থি গ্রুপের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা ছিল। আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার পর থেকে ওই মামলাগুলো থেকে একে একে অব্যাহতি পান তিনি।

 

 

আনারের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিস্ফোরক, মাদকদ্রব্য ও স্বর্ণ চোরাচালান, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি এবং চরমপন্থিদের আশ্রয় দেয়ার অভিযোগে ৯টির বেশি মামলা ছিল। ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড আসামি হিসেবে পুলিশ একবার তাকে আটক করলেও ক্যাডাররা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়েছিল। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে যৌথ বাহিনীর অপারেশনের সময় দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন আনার।

 

 

 

শাহীনের বড় ভাই ও কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র সাহেদুজ্জামান সেলিম বলেন, আমার ভাই যদি এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হয় তাহলে তার বিচার হবে। আইনে যে বিচার হবে তা আমরা মেনে নেবো। কিন্তু আমাদের ধারণা সে এর সঙ্গে জড়িত না। এমপি আনারের বড় ভাই মো. এনামুল হক ইমান বলেন, আনার আর শাহীনের পরিচয় ছিল না। মূলত আমার সঙ্গে শাহীনের বড় ভাই সেলিমের (কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র) সম্পর্ক থেকে তাদের পরিচয়।

 

 

তার দাবি এমপি আনার ও শাহীনের মধ্যে কোনো ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল না। এমনকি তার ছোট ভাই স্বর্ণ চোরাচালান, হুন্ডি, মাদক কারবার ও নারী পাচারের সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত না। এসব বলে হত্যাকাণ্ডের কারণ ভিন্নখাতে প্রভাবিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, শাহীন একজন খুনি। সে টাকার বিনিময়ে এসব কাজ করে। তাকে দিয়ে আনারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। ব্যবসায়িক ঝামেলা হলে সেটি দেশেই মিটমাট করার কথা। সেটি কেন ইন্ডিয়াতে করতে হবে। আমার ভাই কলকাতায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে ও চিকিৎসা করাতে গিয়েছিল।

 

 

 

বছর দুয়েক আগে প্রায় ২০০ কোটি টাকার একটি চালান নিয়ে তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয় বলে আলোচনা রয়েছে। যেটি ভালোভাবে নিতে পারেনি শাহীন। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সমাধান করতে চাচ্ছিল শাহীন কিন্তু দুইজনের মধ্যে এটির সমাধান হয়নি।

 

 

স্থানীয় সূত্রের দাবি, ১৯৮৬ সালের দিকে জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় থাকাকালে আনার মাদক কারবারে জড়িয়ে পড়েন। এই মাদক কারবারের মাধ্যমে বিপুল অর্থবিত্তের মালিক হন বলে অভিযোগ রয়েছে। ১৯৯৬ সালে আনার বিএনপি থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেন। সর্বশেষ তিনি কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। আনার ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে টানা তিনবার আওয়ামী লীগ থেকে এমপি নির্বাচিত হন।

 

 

 

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ