প্রকাশিত: ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ১৯, ২০২৪
ডায়ালসিলেট ডেস্ক :: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরশাসনআমলে তার ক্ষমতা ধরে রাখতে দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথম আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, এ অবস্থায় প্রতিষ্ঠানগুলোর টেকসই সংস্কার জরুরি। আর এটি করতে হলে যৌক্তিকভাবেই সময়ের প্রয়োজন। অন্তর্বর্তী সরকারকে দেশবাসী সেই সময় দিবে এমনটা আশা করে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশে টেকসই সমৃদ্ধির জন্য সবার দৃঢ় সমর্থন ও সহযোগিতা কামনা করেন।
গতকাল রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টালে ঢাকাস্থ বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, হাইকমিশনার এবং আন্তর্জাতিক সংস্থা-সংগঠনের প্রধানদের নিয়ে ব্রিফিং হয়।
সেখানে প্রধান উপদেষ্টা নিজের দায়িত্ব গ্রহণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের দুর্নীতি এবং চরম অব্যবস্থাপনার বিষয়েও বিভিন্ন কথা তুলে ধরেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা ড. ইউনূস।
পরে কূটনৈতিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে ড.ইউর্নস বলেন, পরিস্থিতি ক্লোজ টু নরমাল, এটা পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থাতে ফেরানোই অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায়োরিটি। বিচার ব্যবস্থা প্রায় ভেঙে পড়েছে। প্রশাসনে অনিয়ম আর দুর্নীতি সর্বত্র। সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে।
ক্লোজডোর কূটনৈতিক ব্রিফিং শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।
সংস্কার শেষে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন হবে বিদেশি বন্ধু উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আলাপে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস খোলাসা করেই বলেন, দেশের কাঠামোগুলোর প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পর যত দ্রুত সম্ভব অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে।
বর্তমান সরকারের প্রধান কাজ যত দ্রুত সম্ভব একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করা। তবে এর আগে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, বেসামরিক প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমের আমূল সংস্কার করতে হবে, যার মধ্যদিয়ে ভোটের সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে।
তিনি বলেন, দুই সপ্তাহ আগে বাংলাদেশ দ্বিতীয় বিপ্লবের সাক্ষী হয়েছে। শেখ হাসিনার নৃশংস স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল লাখো বীর ছাত্র-জনতা। কিন্তু তার দলের ছাত্র সংগঠন ও শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দেশে ভয়াবহতম বেসামরিক গণহত্যা করার পর শেখ হাসিনা দেশ ছাড়েন।
আমি সেই সমস্ত বীর ছাত্র এবং নিরীহ মানুষদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই, যারা সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন। আমাদের সাম্প্রতিক স্মৃতিতে অন্য কোনো দেশের ছাত্রদের তাদের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষা প্রকাশের জন্য এত মূল্য দিতে হয়নি, যেখানে একটি বৈষম্যমুক্ত, ন্যায়সঙ্গত এবং পরিবেশবান্ধব দেশের স্বপ্ন দেখতে হয়েছে, যেখানে প্রতিটি নাগরিকের মানবাধিকার সম্পূর্ণরূপে সুরক্ষিত থাকবে।
নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে। তরুণ প্রজন্ম তাদের ভোটাধিকারের চর্চা না করেই বেড়ে উঠেছে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় ব্যাংক লুট হয়েছে। আর ক্ষমতার অপব্যবহার করে লুণ্ঠন করা হয়েছে রাষ্ট্রীয় কোষাগার। তবে হ্যাঁ, দেশ নিয়ে ছাত্রদের একটি স্বপ্ন আমাদের মুগ্ধ করেছে, যে স্বপ্ন একটি নতুন যুগের সূচনা করেছে।
ছাত্ররা এমন একটি দেশের স্বপ্ন দেখছে যেখানে মানুষ তাদের রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা জাতিগত পরিচয় নির্বিশেষে, নিজেদের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবে। সরকার গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখবে। অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার কথা উল্লেখ করেন প্রধান উপদেষ্টা।
সশস্ত্র বাহিনী বেসামরিক শক্তির সহায়তায় কাজ চালিয়ে যাবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না পরিস্থিতি নিশ্চিত হবে। সব ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠীর নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকারবদ্ধ অন্তর্বর্তী সরকার।
তিনি চান এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। তদন্তে জাতিসংঘকে বাংলাদেশ সরকার সহায়তা দেবে। ড. ইউনূস বিদেশিদের বলেন, বাংলাদেশ যতগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে, তার সব বাস্তবায়ন করবে সরকার। নতুন যাত্রার এক সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। আমাদের সাহসী ছাত্র ও জনগণের জন্য আমাদের জাতির স্থায়ী পরিবর্তন প্রয়োজন। আমাদের যাত্রাটা কঠিন। তাদের আকাঙ্ক্ষা আমাদের পূরণ করতে হবে। যত তাড়াতাড়ি সেটা হয়, ততই ভালো।
আমরা বিশ্বাস করি, একটি নতুন গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের যাত্রাপথে আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের সব বন্ধু ও অংশীদারেরা আমাদের সরকার ও জনগণের পাশে দাঁড়াবে।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech