শিক্ষার্থীর মুখে বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের বর্ণনা

প্রকাশিত: ৫:১৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৪

শিক্ষার্থীর মুখে বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের বর্ণনা

ডায়ালসিলেট ডেস্ক:ছাত্র-জনতার বিপ্লবের (৫ আগস্ট) বিজয় মিছিলে অংশ নিয়ে রাজধানীর উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হন অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থী আসাদুর রহমান আকাশ।মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছেন উত্তরা টাউন কলেজের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্র।তিনি রাজধানীর দক্ষিণখানের কাওলা এলাকায় বাবা-মায়ের সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকেন।জানা যায়, ৫ আগস্ট রাতে বিজয় মিছিলে অংশ নেওয়া শেষে শাহজালাল বিমানবন্দর এলাকা থেকে বাসায় ফেরার পথে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের গেটের সামনে গুলিবিদ্ধ হন আকাশ। সে সময় আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের গেটের ভেতর থেকে বিজয় উল্লাসকারীদের লক্ষ করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়ে একদল পুলিশ। এতে আকাশের চোখের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই ছয়জন মারা যান। নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ওপর। বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের বর্ণনা যুগান্তরের কাছে তুলে ধরেন মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে আসা শিক্ষার্থী আকাশ।শরীরের স্পর্শকাতর অংশে গুলির ক্ষতমাখা ব্যান্ডেজ লাগানো আসাদুর রহমান আকাশ যুগান্তরকে বলেন, ‘সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরার কাওলার উদ্দেশ্যে বাসায় ফেরার পথে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের সামনে আসতেই আর্মড পুলিশ গেটের ভেতর থেকে গুলি ছোড়া হয়। তখন রাস্তার সব লাইট বন্ধ ছিল। অন্ধকারে ডানে-বামে তাকিয়ে দেখলাম আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের গেটের ভেতর থেকে শুধু ফায়ারিংয়ের আগুন বের হচ্ছে। দেখলাম আমার সামনে ছয়জন মাটিতে পড়ে আছে। আমার সামনে যে লোকটা ছিল দেখলাম তার মাথায় গুলি লেগে রাস্তার ওপর মগজ পড়ে আছে। হঠাৎ কোমরের নিচে ব্যাথা অনুভব করে নিচে তাকাতেই দেখি আমার পেটের ভুড়ি বের হয়ে গেছে। আমিও রাস্তার ওপর পড়ে যাই। সবাই তখন যে যার মতো দৌড়ে পালাচ্ছিল।’বিভীষিকাময় সেই মুহূর্তের বর্ণনা দিতে গিয়ে আকাশ বলেন, ‘এর আগে আমরা প্রায় বিশ-ত্রিশ হাজার মানুষ এয়ারপোর্টে অবস্থান করছিলাম। আমাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সদস্যরাও ছিল। কিছুক্ষণ পর পরই উত্তরা দিক থেকে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছিল। একপর্যায়ে সাড়ে সাতটার দিকে গুলির শব্দ বন্ধ হওয়ায় এবং রাত নেমে আসায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের সবাইকে যার যার বাসায় ফিরে যেতে বললেন। সেনাবাহিনীর কথায় হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে আমিও এয়ারপোর্ট থেকে উত্তরার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। কিন্তু আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান গেটের সামনে আসতেই হাজার হাজার মানুষের দিকে গুলি ছুড়ে পুলিশ। সেখানেই আমিসহ মোট সাতজন গুলিবিদ্ধ হই। আমি ছাড়া বাকি সবাই ঘটনাস্থলেই মারা যায়।’

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ