প্রকাশিত: ১১:৩৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১, ২০২৪
স্পোর্টস ডেস্ক:ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন ৩ নম্বরে, এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে জায়গা দিতে নেমে যান ৪ নম্বরে। প্রায় দেড় বছর পর আগের জায়গায় ফিরেই দারুণ এক সেঞ্চুরি করলেন মুমিনুল হক। ৩ বছর পর বিদেশের মাটিতে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। কানপুরের গ্রিনপার্ক স্টেডিয়ামে মুমিনুলের এই সেঞ্চুরিকে ‘বিরল’ও বলা যায়। সবচেয়ে বড় কথা এই সেঞ্চুরির পুরো ইনিংসে মুমিনুল যেভাবে ব্যাটিং করেছেন, যেভাবে ইনিংসটাকে নিয়ন্ত্রণ করেছেন তাতে এটাকেই কী তার সেরা ইনিংস বলা যায় কিনা সেটাও আলোচনার বিষয়। ভারত-বাংলাদেশের চলতি টেস্ট ম্যাচের প্রথম দিনে খেলা হয় ৩৫ ওভার। যেখানে ৪০ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন মুমিনুল হক। এরপর বৃষ্টিতে টানা দুইদিন একটি বলও মাঠে গড়ায়নি। ফলে মুমিনুল ওই ৪০ রান নিয়েই অপেক্ষায় ছিলেন। তবে গতকাল চতুর্থদিনে তাকে দেখে মনেই হয়নি ইনিংসে কোনো বিরতি পড়েছে। বরং লাঞ্চের আগে না পরে কখন সেঞ্চুরি করবেন এটাই ছিল একপর্যায়ে আলোচনার বিষয়। টানা দুইদিন খেলা হওয়ায় গতকাল প্রথম সেশনে খেলা হয় বাড়তি ১৫ মিনিট। এর মধ্যে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে সুইপ করে তিন অঙ্কে পৌঁছান বাঁহাতি ব্যাটার। ক্যারিয়ারের ১৩তম শতক করতে ১৭২ বল খেলেন মুমিনুল, ১৬ চারের সঙ্গে মারেন ১টি ছক্কা। দেশের বাইরে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে ২০২১ সালে পাল্লেকেল্লেতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম দেশের বাইরে সেঞ্চুরি করেন তিনি। দেশের মাটিতে মুমিনুল যেমন বিদেশের মাটিতে তেমন নয়! টেস্ট ক্রিকেটে ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই এই অপবাদ সঙ্গী তার। যদিও পরিসংখ্যানও সেটাই বলে। ৩ বছর আগেও বিদেশের মাটিতে কোনো সেঞ্চুরি ছিল না। এখনো এশিয়ার বাইরে কোনো সেঞ্চুরি নেই। তবে বিদেশের মাটিতে নিয়মিত রান না করা মুমিনুলই ফেরালেন কানপুরের ১০ বছরের স্মৃতি। এই মাঠে ১০ বছর পর টেস্ট সেঞ্চুরি পেলেন কোনো সফরকারী দলের ব্যাটার। ২০০৪ সালে সর্বশেষ এই মাঠে সেঞ্চুরি করেন দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু হল। প্রথমদিনেই ভারতের মাটিতে সর্বোচ্চ ইনিংস খেলেন মুমিনুল। এর আগে ৫ টেস্ট খেলে এই দেশে তার সর্বোচ্চ ছিল ৩৭। গতকাল শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের ওপর দাপট দেখাতে চেয়েছেন মুমিনুল। প্রথম ড্রিংকস-বিরতির আগেই গতকাল ফিফটি পূর্ণ করেন মুমিনুল। একের পর এক সঙ্গী হারিয়েছেন, কিন্তু নিজে পথচ্যুত হননি একবারও। ১১০ বলে ফিফটি ছোঁয়া বাঁহাতি ব্যাটসম্যান পরের ৫০ রান করেছেন ৬২ বলে। ৫০ থেকে ১০০ পর্যন্ত যেতেই ৭টি চার ও ১টি ছক্কা মেরেছেন। ক্যারিয়ারে এটি তার ১৩তম সেঞ্চুরি, বাংলাদেশের সর্বোচ্চ। আগে থেকেই তিনি শীর্ষেই ছিলেন অবশ্য, এবার সেটিকে আরেকটু বাড়ালেন। বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ টেস্ট সেঞ্চুরি মুশফিকুর রহীমের ১১টি। রানের সংখ্যা ছাপিয়ে এদিন মুমিনুলের ব্যাটিংয়ের ধরন নজর কেড়েছে সবার। মনে হয়েছে একদম যে পরিকল্পনা নিয়ে নেমেছেন, সেটিকে নিখুঁতভাবে বাস্তবায়ন করছেন। কাট তো এমনিতেই তার সবচেয়ে শক্তির জায়গা, ড্রাইভও ভালো খেলেছেন এই ইনিংস। শর্ট বলের জবাবেও মেরেছেন দারুণ সব পুল শট। মুমিনুলকে বরাবর অফ স্পিনারদের বিপক্ষে ভুগতে দেখা যায়। তবে এদিন ভারতের অফ স্পিনার অশ্বিন কোনোভাবেই তাকে বিপদে ফেলতে পারেননি। বরং একের পর এক সুইপ শটে অশ্বিনকে বারবারই চিন্তায় ফেলেছেন মুমিনুল। তার জন্য শর্ট ফাইন লেগে ফাঁদ পেতেও সাফল্য পায়নি ভারত। পুরো ইনিংসে একটাই খুত, সেটাও ৯০ রানের পর। ৯৩ রানে মোহাম্মদ সিরাজের একটি বল লেট কাট করতে গিয়েছিলেন, ঠিকমতো না লাগায় চলে যায় স্লিপে। বিরাট কোহলি ডাইভ দিয়েও সেটা ধরতে পারেননি। এ ছাড়া বাকি ইনিংস দেখে মনে হচ্ছে, যেন নিজে থেকেই হচ্ছে সব। নিউজিল্যান্ডে ৮৮, দক্ষিণ আফ্রিকায় ৭৭ আছে মুমিনুলের সেগুলোও থাকবে সেরা ইনিংসের তালিকায়। তবে এই ইনিংসের শুরুতে যেভাবে ভারতীয় পেসারদের সামলালেন, আর গতকাল যেভাবে টেনে নিলেন তাতে এটাই হয়তো শীর্ষে থাকবে। তবে এই ইনিংসেও চাইলে খুত বের করা যায়। শেষদিকে ২২৪ রানে যখন মিরাজ বিদায় নেন, তারপর ৯ রানে শেষ ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এ সময় টেলএন্ডারদের বেশি স্ট্রাইক দিয়েছেন মুমিনুল। অথচ নিজে বেশি স্ট্রাইক নিয়ে রান বাড়িয়ে নেয়া, সময় পার করলেও দলের উপকার হতো।
Address: Kaniz Plaza, Zindabazar, Sylhet
United Kingdom, London Mobile :+447438548379
dialsylhetnews@gmail.com
Design and developed by AshrafTech