জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা  একই আইনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে

প্রকাশিত: ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২৬, ২০২৪

জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা  একই আইনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :বিগত আওয়ামী লীগ সরকার গত ১লা আগস্ট নিষিদ্ধ করেছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ছাত্রশিবির ও তাদের অঙ্গসংগঠন। প্রায় তিন মাসের ব্যবধানে বুধবার রাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ। আইনজীবীদের দেয়া তথ্যমতে, যে আইনে জামায়াত-শিবিরকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল সেই একই আইনে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকার ‘সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯’ এর ধারা ১৮ এর উপ-ধারা (১) এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’কে নিষিদ্ধ ঘোষণা করলো এবং উক্ত আইনের তফসিল-২ এ বাংলাদেশ ছাত্রলীগ নামের ছাত্র সংগঠনকে নিষিদ্ধ সত্তা হিসেবে তালিকাভুক্ত করলো। ২০০৯-এর ধারা ১৮তে  নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তালিকাভুক্তকরণ সম্পর্কে বলা হয়েছে। এই ধারার ১৮ (১) উপধারায় বলা হয়েছে- এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, কোনো ব্যক্তি বা সত্তা সন্ত্রাসী কার্যের সঙ্গে জড়িত রয়েছে মর্মে যুক্তিসঙ্গত কারণের ভিত্তিতে, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উক্ত ব্যক্তিকে তফসিলে তালিকাভুক্ত করিতে পারিবে বা সত্তাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা ও তফসিলে তালিকাভুক্ত করিতে পারিবে। ১৮(২)-এ বলা হয়েছে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, যে কোনো ব্যক্তি বা সত্তাকে তফসিলে তালিকাভুক্ত করিতে বা তফসিল হতে বাদ দিতে পারিবে অথবা অন্য কোনোভাবে তফসিল সংশোধন করিতে পারিবে।
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়টি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী মো. মহসিন রশিদ। তিনি বলেন, ছাত্রলীগ একটি সন্ত্রাসী সংগঠন। এই সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বহু মানুষকে নির্বিচারে খুন করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের লাশ দাফন ও গোসলেও বাধা দেয়ার সংবাদ মিডিয়ায় দেখেছি। তিনি বলেন, ছাত্রলীগে এক সময় মেধার মূল্যায়ন ছিল। মেধার ভিত্তিতে সবকিছু হতো। কিন্তু ছাত্রলীগ এখন হেন কোনো কাজ নেই যা তারা করে নাই। ছাত্রলীগ ধর্ষণের সেঞ্চুুরি উৎসবও পালন করেছে। গত ১৫/২০ বছর ধরে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখল ও মাদকের মতো ঘৃণিত কর্মকাণ্ডে অতিমাত্রায় জড়িয়ে পড়েছে। শুধু তাই নয়, ছাত্রলীগের নারী কর্মীরাও এসব কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে। ছাত্রলীগের নারী কর্মীরা চরিত্রহীন ও সন্ত্রাসী কর্মাকাণ্ডেও জড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, আইনে বলা আছে কি কি করলে একটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা যায়। আর ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হতে যা যা করা লাগে তার সব কিছুই করেছে। আমি মনে করি আরও আগেই ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা দরকার ছিল। অনেক কোমলমতী ছাত্র এই সংগঠনে যুক্ত হয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। মূল সংগঠন আওয়ামী লীগও  ছাত্রলীগকে নিবৃত করতে পারেনি। তিনি নিষিদ্ধ এই সংগঠনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা রুজু ও বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান। একইসঙ্গে এই সংগঠনের কোনো সম্পদ থাকলে তা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ও ব্যাংক একাউন্ট থাকলে ফ্রিজ করার আহ্বান জানান।

0Shares