ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় অনাহারকে একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে

প্রকাশিত: ১২:০৪ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৮, ২০২৪

ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় অনাহারকে একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক :উত্তর গাজায় ইসরাইলের ধ্বংসাত্মক অবরোধ ও বোমাবর্ষণের ২৩তম দিনে মানুষের জীবনযাত্রার লড়াই অব্যাহত।অক্সফামের একজন কর্মকর্তা আল জাজিরাকে বলেছেন যে, ইসরাইল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় অনাহারকে একটি অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে এবং ইসরাইলের চলমান বোমা হামলার কারণে যুক্তরাজ্যভিত্তিক এনজিও উত্তরের মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।

মাহমুদ আলসাক্কা, যিনি অক্সফামের খাদ্য নিরাপত্তা এবং গাজায় জীবিকা নির্বাহের নেতৃত্ব দিয়েছেন, সতর্ক করেছেন যে কিছু ফিলিস্তিনি উত্তর গাজায় ক্ষুধায় ‘অনাহারে মরছে’ এবং আগামী দিনে আরও বেশি লোক মারা যাবে। তিনি বলেন, ‘এলাকার বেশিরভাগ ফিলিস্তিনিরা সহায়তা সরবরাহের উপর নির্ভর করে। কিন্তু কয়েক দিন ধরে তারা কোনও সরবরাহ পাচ্ছে না।’ ত্রাণ সংস্থাগুলো বলছে, গাজার জনসংখ্যার প্রায় ৯৬ শতাংশই উচ্চ মাত্রার খাদ্য সংকটের সম্মুখীন। ইউনিসেফের মতে, ১০টির মধ্যে নয়টি শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব রয়েছে। যুদ্ধের এক বছরে অন্তত ৩৭টি শিশু অপুষ্টি বা পানির অভাবে  মারা গেছে। জাতিসংঘ বলেছে যে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইল উত্তর গাজায় খাদ্য সহায়তার ৮৩ শতাংশ প্রবেশে বাধা দিয়েছে। বছরের শেষ নাগাদ পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রায় ৫০,০০০ শিশুর অপুষ্টির জন্য জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। রবিবার জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, জিম্মিদের মুক্তি এবং আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে অপরাধের জন্য জবাবদিহিতার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি এক্স-এ বলেছেন, উত্তর গাজায় ইসরাইলের সামরিক অভিযানের ফলে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ ও বঞ্চনা সেখানকার ফিলিস্তিনি জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রাকে অসহনীয় করে তুলছে। আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের তোয়াক্কা না করে এই সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। অক্সফাম সতর্কবার্তাটি এসেছে যখন ইসরাইলি বাহিনী রবিবার উত্তর গাজার  আশেপাশে বোমাবর্ষণ করেছে এবং মানবিক কর্মকর্তারা ইসরাইলি বাহিনীর চলমান স্থল হামলার বিষয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে, সেখানে জোরপূর্বক কয়েক হাজার বাসিন্দাকে এলাকা থেকে বাস্তুচ্যুত করা হয়েছে। শনিবার বিত লাহিয়ায় ইসরাইলি সেনাবাহিনীর স্ট্রিপের  উত্তরে পাঁচটি ভবনকে  লক্ষ্যবস্তু করার পর অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন। বেত লাহিয়ায় পৃথক হামলায় আরও ১০ জন নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর গাজার জাবালিয়া, বেইট হানুন এবং বেইট লাহিয়া শহরে ইসরাইলের হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৮০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আল জাজিরার হানি মাহমুদ, মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ থেকে রিপোর্ট করছেন, অন্তত ৩৫ জন নিখোঁজ রয়েছেন অথবা ধ্বংসস্তূপের নীচে থাকার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি রবিবার সকালে জাবালিয়ায় একটি বাসায়  ইসরাইলি বিমান হামলায় বেশ কয়েকজন নিহত এবং অন্যান্য আহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন  ফিলিস্তিনি চিকিৎসকরা। ইসরাইলি সৈন্যরা মানুষকে উচ্ছেদ কেন্দ্র থেকে বের হতে বাধ্য করেছে  এবং আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

0Shares