স্পোর্টস ডেস্ক :২০১৬ সালে গুয়াহাটি সাউথ এশিয়ান (এসএ) গেমসে প্রথম স্বর্ণপদকটি এনে দেন ভারোত্তোলক মাবিয়া আক্তার। ২০১৯ নেপাল এসএ গেমসেও তার ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন এই ভারোত্তোলক। তখন থেকেই মাবিয়াকে আইডল মেনে ভারোত্তোলনে আসা রোকেয়ার। গতকাল ভারোত্তোলন জিমন্যাশিয়ামে অনুষ্ঠিত ৫৫ কেজি ওজন শ্রেণিতে তিনটি রেকর্ড গড়ে স্বর্ণপদক জেতেন দিনাজপুরের এই ভারোত্তোলক। স্ন্যাচে ৬০ কেজি এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্কে ৭২ কেজি তুলে রেকর্ড গড়েছেন তিনি। দুটি ওজন মিলিয়ে ১৩২ কেজি তুলে তৃতীয় রেকর্ডটি গড়েন দিনাজপুরের এই ভারোত্তোলক। দিনাজপুর সদরে পরিবারের সঙ্গে থাকেন রোকেয়া পারভীন। পরিবারে বাবা, মা এবং দুই বোন ও এক ভাই। বাবা দিনাজপুরের একটি মাদ্রাসার কেরানি। এই চাকরি করেই তিনি ছেলেমেয়েদের মানুষ করছেন। বিয়ে করে বড় বোন এখন ঘরনি। ছোট ভাই পুলিশে চাকরি করেন। আর রোকেয়া দিনাজপুর সরকারি মহিলা কলেজে ডিগ্রির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী
২০১৯ সালে মাবিয়ার দ্বিতীয় স্বর্ণজয়ের পরেই ভার তোলা শুরু তার। দিনাজপুর মডার্ন বডিবিল্ডিং ক্লাবের কোচ শাহিন পারভেজের কাছেই হাতেখড়ি রোকেয়ার। জুনিয়রের চৌকাঠ মাড়িয়ে এখন সিনিয়র পর্যায়ে খেলছেন। জুনিয়রে সাতটি পদক জিতেছেন। যার মধ্যে দুটি স্বর্ণ, তিনটি রুপা ও দুটি ব্রোঞ্জ। ২০২৪ সালে সিনিয়র প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়া শুরু করলেও ক্লাব পর্যায়ে সিনিয়র বিভাগে খেলছেন তারও দুই বছর আগে। সিনিয়র চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বোচ্চ ব্রোঞ্জই তার অর্জন। তবে ২০২২ ও ২০২৪ দুই বছরে অনুষ্ঠিত ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি স্বর্ণপদক জিতে নিয়েছেন রোকেয়া। দলগত খেলায় কোনো পরিচিতি নেই। তাই স্বর্ণকন্যা মাবিয়াকে দেখে ব্যক্তিগত খেলাকেই বেছে নেন রোকেয়া। তিনি বলেন, ‘অনেক খেলায় অনেকে পরিচিত। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে ভারোত্তোলনকে বেছে নিয়েছি। এই খেলাটিতে ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সের আলোয় উদ্ভাসিত হওয়া যায়। বিদেশে গেলে আমি যা খেলবো ব্যক্তিগতভাবে সেই ফলই পাবো।’ মাবিয়াকে আইডল মেনে রোকেয়া বলেন, ‘মিডিয়াতে মাবিয়া আপুর স্বর্ণজয়ের খবর শুনেই আমি ভারোত্তোলনে খেলা শুরু করি। তখন শুনেছিলাম, বাংলাদেশে একটি মেয়ে আছে যে আন্তর্জাতিক গেমসে পদক জিতেছে। উনাকে দেখেই উঠে আসা আমার। মাবিয়া আপা পারলে আমি কেন পারবো না।’ ভবিষ্যৎ লক্ষ্য নিয়ে রোকেয়া বলেন, ‘ভবিষ্যতে লক্ষ্য মাবিয়া আপু যেমন বিদেশে ভালো করেছেন, আমিও করতে চাই। বিশ্বসেরা গেমস অলিম্পিকে খেলতে চাই।’