ঢাকায় নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তি-বিশৃঙ্খলা

প্রকাশিত: ১০:৩৬ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২৪

ঢাকায় নাগরিক সেবা পেতে ভোগান্তি-বিশৃঙ্খলা

ডায়ালসিলেট ডেস্ক :ঢাকায় নাগরিক সেবা পেতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের। সেবা পেতে সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর থেকে আঞ্চলিক অফিসগুলোতে বার বার ঘুরছেন নগরবাসী। অধিকাংশ কাউন্সিলর অফিসগুলোতেই স্বাভাবিক সেবা ব্যাহত হচ্ছে। আঞ্চলিক  অফিসেও সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন নগরবাসী। জন্মনিবন্ধন, মৃত্যুসনদসহ গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো নিতে হয়রানি আর বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে সেবাগ্রহীতাদের। এতে উষ্মা প্রকাশ করছেন নগরের বাসিন্দারা।  সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে,  গত ২৬শে সেপ্টেম্বর সিটি করপোরেশনের সব কাউন্সিলরকে অপসারণ করে সরকার। তাই কাউন্সিলরদের পরিবর্তে প্রতিটি ওয়ার্ডে সিটি করপোরেশনের সহকারী স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, ওয়ার্ড সচিব এবং সমাজকল্যাণ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। কোনো কোনো ওয়ার্ড সচিবকে দু’টি ওয়ার্ডের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। সরজমিন রাজধানীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অফিসে গিয়ে ও সেবাগ্রহীতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক কাউন্সিলর অফিস এখন বন্ধ রয়েছে। অসংখ্য অফিস সময়মতো খুলছে না। কাউন্সিলরদের অবর্তমানে দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারাও ঠিকমতো অফিস করছেন না। সকাল থেকে সেবাগ্রহীতারা অফিসগুলোতে গিয়ে অপেক্ষায় থাকেন। এমনকি বর্তমান পরিস্থিতিতে কিছু ওয়ার্ডের বাসিন্দারা জানেন না, জন্ম ও মৃত্যুসনদের সেবাগুলো তারা কোথায় পাবেন? ওয়ার্ড সচিবরা কোথায় বসেন সেটিও তারা জানেন না কেউ কেউ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিশাল জনসংখ্যার বিপরীতে প্রশাসনিক বাড়তি দায়িত্ব পালনে হিমশিম খাচ্ছেন সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। অনেক ওয়ার্ড সচিবকে দুই ওয়ার্ডের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে, তাই তারা নাগরিক সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন। লোকবল বাড়িয়ে নাগরিক সেবা দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অনেকেঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৬২ ও ৬৩ নং ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, দুপুর পেরিয়ে বিকাল হলেও সেখানে কাউন্সিলর অফিস বন্ধ। তার থেকে কিছু দূরে একটি দোকানে ওয়ার্ড সচিব এবং আঞ্চলিক কর্মকর্তা মাঝেমধ্যে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৫ই আগস্ট সরকার পতনের পর ৬২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মোস্তাক আহমেদ পলাতক রয়েছেন। সেখানে ওয়ার্ড সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. রিপন হোসেন। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা জন্মনিবন্ধন, নাগরিক সনদ, মৃত্যু সনদপত্র ও ট্রেড লাইসেন্সসহ বিভিন্ন নাগরিক সেবা নিতে ভোগান্তিতে পড়ছেন। অনেক জায়গায় অতিরিক্ত টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে সেবা পাচ্ছেন  না তারা। ডেঙ্গু মশা নিধনে কর্মচারীরা দায়িত্বে অবহেলা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, মশক নিধনকর্মীরা নিয়মিত আসেন না। কিছু এলাকায় কয়েক মাস ধরে মশকনিধনকর্মীর দেখা মিলেনি- এমন অভিযোগও আছে। দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি ছেলের জন্মসনদ নিতে এসেছেন। কিন্তু নানা জটিলতায় জন্মসনদ পাচ্ছেন না। তরুণ উদ্যোক্তা রহমত উল্যাহ। স্বল্প পুঁজিতে অনলাইন ব্যবসা শুরুর স্বপ্ন তার। ঢাকা দক্ষিণ  সিটি করপোরেশনের ৬২ নং ওয়ার্ডের এই বাসিন্দা ট্রেড লাইসেন্স করাতে কার্যালয়ে দু’-একদিন পরপরই যাচ্ছেন এবং প্রতিবারই নিরাশ হয়ে ফিরছেন। তিনি বলেন, যিনি ট্রেড লাইসেন্সের কাজ করবেন, তাকে অফিসে পাইনি। গেলেই বলা হয়, তিনি আজ আসবেন না। সাজ্জাদ নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ওয়ারিশান সনদ নিতে আজকে ১৫ দিন ধরে ঘুরছি কিন্তু অফিসে লোক না থাকায় ওয়ারিশান সনদ পাচ্ছি না। শারমিন আক্তার নামে এক গৃহবধূর স্বামী প্রবাসী। তাই নিজেই এসেছেন ছেলের জন্মসনদ নিতে।

0Shares

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ