ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলার ঘটনায় আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, এমপি, মেয়র ও কাউন্সিলরসহ ২৮৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে সিলেট কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যাচেষ্টা ও বিস্ফোরক আইনে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. জিয়াউল হক। তিনি জানান, মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসআই মোহাম্মদ খবির উদ্দিনকে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার শেখ শফিউর রহমান কয়েছ (১৮) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। তিনি সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রণকেলী উত্তর গ্রামের শেখ আবদুর রহমান জানির ছেলে।
মামলায় অভিযুক্তরা সবাই আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয়সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী বলে জানা গেছে।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী (৬০), সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সিলেট-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ আহমদ মজুমদার (৬৫), সিলেট-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদ চৌধুরী (৬৫), সিলেট-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হুসাম উদ্দিন চৌধুরী, সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী (৫২), আওয়ামী লীগ ও বিএমএ নেতা ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল (৬৫), সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আহমদ আল কবির (৬৬), সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর স্ত্রী সেলিনা মোমেন (৫০), সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলেন আহমদ (৫০), সিলেট-৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. সেলিম উদ্দিন (৫৬), সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও ৮নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশ (৫৫), সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরমান আহমদ শিপলু (৪৫), সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ (৫৮), বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর (৫৬), সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিসিকের সাবেক কাউন্সিলর সালেহ আহমদ সেলিমসহ (৫৬) ২৮৫ জন।
বাদীর অভিযোগ- বাদী বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী। আসামিরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের নির্দেশে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আওয়ামী লীগ ও তার বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠন কোটাবিরোধী আন্দোলনকে দমানোর জন্য বিগত বছরের ১৭ জুলাই রাতের বেলায় সিলেট শহরের জিন্দাবাজারে একটি গোপন বৈঠকের মাধ্যমে পরদিন পূর্ব থেকে ঘোষিত কর্মসূচি বানচাল করতে আন্দোলনকারীদের ওপর সশস্ত্র হামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়। এ সিদ্ধান্ত মোতাবেক আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের মারণাস্ত্র নিয়ে বিগত ১৮ জুলাই আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী ক্যাডারদের হামলায় বাদীসহ উপস্থিত ছাত্র-জনতাকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে তাদের হাতে থাকা বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্র দ্বারা গুলি ও বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র যথাক্রমে হকিস্টিক, চাপাতি, দা, রামদা ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে অবস্থানরত ছাত্র-জনতার ওপর অতর্কিতভাবে আক্রমণ করতে থাকে।