আদালতে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও আইনজীবীরা, দেখে নেওয়ার হুমকি

প্রকাশিত: ৯:৪৪ অপরাহ্ণ, মে ১৩, ২০২৫

 

 

ডায়াল সিলেট ডেস্ক :: সাবেক সংসদ সদস্য মমতাজ বেগমের রিমান্ড শুনানিকে কেন্দ্র করে অধস্তন আদালতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কাজ করা সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

 

মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে বিকেলে বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়ে এ হুমকি দেন।

 

এদিন দুপুর ২টা ২০ মিনিটের দিকে মমতাজকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে ঢাকার সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। বিকাল ৩টা ৪ মিনিটের দিকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তাকে ঢাকার মহানগর হাকিম জুয়েল রানার আদালতে তোলা হয়।

 

এ সময় আদালতে অন্য মামলার শুনানি চলছিল। তবে মমতাজকে আদালতে নেওয়া হলে পুরো এজলাস কক্ষ পরিপূর্ণ হয়ে যাই। এ সময় কিছুটা হট্টগোলের তৈরি হয়।

 

মমতাজ বেগমকে যখন এজলাসকক্ষে নেওয়া হয় তখন সাংবাদিকরা তথ্য সংগ্রহের জন্য সেখানে যান। তারা এজলাসকক্ষে প্রবেশ করেন। তখন দুই আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এজলাস কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার জন্য বলেন। এনিয়ে কিছু কথা কাটাকাটি হয় দুই পক্ষের। পরে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

 

মমতাজের সাত দিনের রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত তার চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

 

রিমান্ডের আদেশ হওয়ার পর মমতাজ বেগমকে হাজতখানায় নেওয়া হয়। পরে আইনজীবীরা ব্রিফ করতে সিএমএম আদালতের সামনে রাখা ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে পড়েন। ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোকে কেন্দ্র করে নিজেদের (আইনজীবীদের) মধ্যে ধস্তাধ্বস্তি শুরু হয়।

 

এ সময় বেসরকারি টেলিভিশন ‘এখনের’ রাব্বি হোসেন, সময় টেলিভিশনের আসিফ মাহমুদ সিয়াম আইনজীবীদের শান্ত হয়ে ধস্তাধ্বস্তি না করে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান। এরপরই সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন দুই আইনজীবী মাহবুব আলম, আক্তার হোসেন।

 

উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তারা আরও চড়াও হন। কে কোথায় কাজ করেন তা দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। অকথ্য ভাষায় সাংবাদিকদের গালাগাল করেন। কয়েকজন সাংবাদিকদের হেনস্থা এবং গালাগাল করেন।

 

এ সময় বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। তবে কয়েকজন আইনজীবী তাদের পক্ষও নেন। এ অবস্থায় ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী অভিযুক্ত দুই আইনজীবীকে নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।

 

এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিক রাব্বি হোসেন বলেন, এজলাসে আমরা কয়েকজন সাংবাদিক উপস্থিত হলে, আইনজীবীরা আমাদের বলেন- এখানে সাংবাদিকদের কী কাজ। আমি বলেছি নিউজের জন্যই এসেছি। পরে শুনানি শেষ হলে আমরা বিনয়ের সঙ্গে আইনজীবীদের ডায়াসের সামনে দাঁড়াতে বলি। তারপরই আমিসহ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদকের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যান আইনজীবীরা। এক পর্যায়ে আমাদের ধাক্কা দিতে থাকেন।১৭ বছর কই ছিলাম, বিএনপিপন্থি আইনজীবী পরিচয় দিয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন।

 

আরেক সাংবাদিক সিয়াম বলেন, মাহবুব আলী, আক্তার হোসেন বারবার সাংবাদিকদের বলছিলেন, আদালত আমার, এখানে আমরা যা বলব তাই হবে। এতে সাংবাদিকদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা বাড়ে। পরে তিনি আমাকে দালাল সাংবাদিক, ধান্দাবাজ বলে গালি দেন। তিনিসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী গায়ে হাত তোলার জন্য তেড়ে আসেন।

 

এ ঘটনায় কোর্ট রিপোর্টার্স ইউনিটির পক্ষ থেকে তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সংগঠনের সভাপতি লিটন মাহমুদ এবং সাধারণ সম্পাদক মামুন খান। দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তারা।

 

 

0Shares