ডায়াল সিলেট ডেস্ক : মৌলভীবাজারের গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে উচ্ছ্বাসের রঙ ছড়ানো এ উৎসব সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে।নতুন ধান ঘরে উঠেছে। ব্যস্ত হয়ে ঘরে গৃহিনীরা। নতুন ধান সেদ্ধ দেওয়া, রোদে শুকিয়ে চাল তৈরি। সেই নতুন চাল দিয়ে তারা তৈরি করেন মুখরোচক নানান পিঠাপুলি।বারো মাসে তেরো পার্বনে উৎসব পালন হল বাঙ্গালিদের ঐতিহ্য। পৌষ সংক্রান্তি এমনই এক বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব। পৌষ মাসের শেষ দিনটিতে পৌষ সংক্রান্তির উৎসব পালন করেন গ্রাম বাংলার সর্বস্তরের মানুষজন।এই দিনটিতে শহরের অনেকেই চলে যান গ্রামের বাড়িতে। পরিবার পরিজনকে নিয়ে মেতে উঠেন পৌষ সংক্রান্তির উৎসবে। এ সময় বিভিন্ন বাসাবাড়িতে পিঠাপুলি খাওয়ার জন্য উপস্থিত হন অনেকেই।নতুন চালের মিহিদানার মালপোয়া, পাটিসাপটা, সেদ্ধ পিঠা। আখের রসের লালিগুর দিয়ে মিষ্টান্ন। খেজুরের রসের পিঠা, বিন্নিধানের চুঙ্গাপিঠা, গরুর দুধের দুধপুলি, নতুন আলু, নারিকেলসহ নানান উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয় পৌষ পার্বণের নানান পিঠাপুলি।স্কুল শিক্ষার্থী অর্পিতা জানান, শীতের এই সময়টার আমরা শহর থেকে গ্রামে যাই। সংক্রান্তি উপলক্ষে ঘরের বড়রা বিভিন্ন কাজ করেন, আর আমরা আনন্দ করি, হুল্লোড় করি। নানা রকমের পিটাপুলি তৈরি করা হয়, পাড়া-প্রতিবেশী বন্ধু-স্বজন মিলে খাই আনন্দ করি।সংস্কৃতিকর্মী মীর ইউসুফ আলী জানান, আবহমান বাঙ্গালি সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে নবান্ন ও পৌষসংক্রান্তি উৎসব।তিনি বলেন, সংক্রান্তি উপলক্ষে প্রতি বছর অন্তত ২০-২৫ পরিবার থেকে দাওয়াত পাই। আমি স্বপরিবারে উপস্থিত হই, খাওয়া দাওয়ার এই উৎসবে সামিল হই।![]()
চাকরিজীবী সজল দেবনাথ বলেন, সংক্রান্তি উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে পিঠার আয়োজন করেছি। বড় মাছ কিনেছি, রয়েছে নানা রকমের পিঠাপুলির আয়োজন। আমার বাসায় সকল ধর্ম বর্ণের মানুষকে নিমন্ত্রণ করি, সবাই আসে। সব মিলিয়ে সার্বজনীন একটি উৎসব পালন হয়। এই ধরনের উৎসব অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মানে গুরুত্ব বহন করে।
কয়েকজন গৃহকর্তা জানান, পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে জেলায় সবচেয়ে বড় মাছের মেলা বসে কুশিয়ারার পাড়ে। পিঠাপুলির পাশাপাশি বড় বড় মাছ এই সময়ে কেনা হয়। সবাই মিলে একসঙ্গে খাওয়ার আনন্দ অন্যরকম। পৌষ সংক্রান্তির আগের রাতে বাজার থেকে বড় মাছ কেনা হয়।

