ডায়াল সিলেট ডেস্ক ॥ প্রকৃতির অবারিত সুন্দর ঢেলে হাকালুকি হাওরের দিগন্ত জুড়ে সেজে উঠেছে সূর্যমুখী ফুল। যতদূর চোখ যায় যেন রাশি রাশি হলুদ সূর্য হেসে খেলে লুটোপুটি খাচ্ছে। এ যেন সূর্যের মেলা। এমনই বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য উপভোগে প্রকৃতিপ্রেমীরা ছুটছেন এশিয়ার বৃহত্তম হাওর হাকালুকি এলাকায়।
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় হাকালুকি হাওরসহ বেশকিছু এলাকায় তৈলবীজ হিসেবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ এখন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাশাপাশি নজরকাড়া সূর্যমুখীর বাগান এখন প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে।সরেজমিনে হাওরের বুকে হলদে ফুলের আঙিনায় গিয়ে দেখা যায়, নানান বয়সী প্রকৃতিপ্রেমীরা এখানে ঘুরছেন। বিস্তীর্ণ সূর্যমুখী ফুলের হলুদাভাব দৃশ্য করছেন ক্যামেরা বন্দি।জানা গেছে, হাকালুকি হাওর এলাকায় তেলবীজ হিসেবে সূর্যমুখী ফুলের চাষ দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। সরকারি সহায়তায় অল্প ব্যয়ে প্রচুর লাভজনক হওয়ায় সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। মূলত খাদ্য চাহিদা মেটাতে তেল উৎপাদনের লক্ষ্যে সরকার সূর্যমুখী চাষে কৃষকদের প্রণোদনাসহ উৎসাহ দিচ্ছে। আরও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এশিয়ার এ বৃহত্তম হাওরে সূর্যমুখী চাষ হতে পারে অন্যতম সম্ভাবনাময়।
সূর্যমুখীর ফলন ভালো হলে কৃষকের লাভ খুবই ভালো হয় জানিয়ে চাষিরা বলেন, সূর্যমুখী চাষ পদ্ধতি মোটামুটি সহজ। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় তিন কেজি বীজ, সামান্য সার ও কীটনাশক হলেই পর্যাপ্ত। সবকিছু মিলিয়ে খরচ হয় ২ থেকে ৩ হাজার টাকা। তাই দিন দিন এ চাষের প্রতি কৃষকরা ঝুঁকছেন বেশি।
এখানে ঘুরতে এলে কেউ নিরাশ হবে না জানিয়ে জেলা শহর থেকে আসা নুরুল ইসলাম বলেন, সূর্যমুখী বাগানে প্রথমবারের মতো এলাম পরিবার নিয়ে। খুব সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারছি। সূর্যমুখী ফুল দেখে খুবই ভালো লাগল।পড়ন্ত বিকেলে সূর্যমুখীর হাসি সত্যিই অসাধারণ। বলেন তুহিন রশিদ নামে আরেক পর্যটক।
সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে সূর্যমুখী চাষ আরও সম্প্রসারণ করবেন জানিয়ে হাকালুকি হাওরে সূর্যমুখী চাষি তাজুল ইসলাম বলেন, আমি প্রায় দুই বিঘা জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছি। ফলনও খুব ভালো হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে পরামর্শের পাশাপাশি বিনামূল্যে বীজ পেয়েছি।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রণোদনার আওতায় জুড়ীতে ২ শত ১০ জন কৃষক সূর্যমুখী চাষ করেছে। সূর্যমুখীর মধ্যে হাইসান ৩৩ এবং আরডিএস ২৭৫ জাতের আবাদ করা হয়েছে।

